হাফিজ় সইদ। —ফাইল চিত্র।
পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় নাম জড়াচ্ছে লশকর-এ-ত্যায়বার প্রধান হাফিজ় সইদেরও। আগেই মঙ্গলবারের জঙ্গি হামলার দায় স্বীকার করেছিল লশকরের ‘ছায়া সংগঠন’ ‘দ্য রেজ়িস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (টিআরএফ)। সেনা সূত্রে খবর, উপত্যকায় লশকরের প্রভাব এবং প্রতাপ আগের তুলনায় অনেক কমে এলেও ছায়া সংগঠনগুলির প্রতিটি কার্যকলাপে কড়া নজর থাকে হাফিজ়ের।
ভারতীয় গোয়েন্দা সূত্রে খবর, জম্মু-কাশ্মীরে কাজ চালানো ছায়া সংগঠনগুলিকে সন্ত্রাসবাদী আদর্শে দীক্ষিত করাই কেবল নয়, সীমান্তের ও পার থেকে পরিকাঠামো এবং প্রযুক্তিগত সাহায্যও জোগান হাফিজ়। ওই সূত্রের খবর, এই বিষয়ে হাফিজ়কে সাহায্য করে থাকেন লশকরে তাঁর ‘ডেপুটি’। পহেলগাঁওয়ের ঘটনায় সইফুল্লার ভূমিকা এখন তদন্তকারীদের আতশকাচের তলায়।
তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, ২০২৩ সালের শেষ দিক থেকেই লশকরের ছায়া সংগঠনগুলি জম্মু এবং কাশ্মীর উপত্যকায় নতুন উদ্যমে কাজ করা শুরু করে। ২০২৪ সালের অক্টোবরে বুটা পাথড়িতে জঙ্গি হামলায় মৃত্যু হয় দুই সেনা জওয়ান-সহ মোট চার জনের। ওই মাসেই সোনমার্গে একটি নির্মীয়মাণ সুড়ঙ্গে কাজ করা ছয় নির্মাণশ্রমিক এবং এক চিকিৎসককে গুলি চালিয়ে খুন করে জঙ্গিরা। এই ঘটনায় হাফিজদের ছায়া সংগঠনগুলির হাত ছিল বলেই মনে করেন তদন্তকারীরা।
টিআরএফের উত্থান হয় ২০১৯ সালে। তখন সবে সংবিধান থেকে ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপ হয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীরের ‘বিশেষ মর্যাদা’-র অবলুপ্তি হয়েছে। ঠিক সেই রাজনৈতিক পরিস্থিতির মাঝেই লশকরের ‘ছায়া সংগঠন’ হিসাবে উঠে আসে টিআরএফ। মূল লক্ষ্য ছিল, কাশ্মীরের স্থিতাবস্থায় বিঘ্ন ঘটানো এবং ভারতের সার্বভৌমত্বকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলা। সেই লক্ষ্য সাধনের জন্য নাশকতামূলক কাজকর্মে পুনর্বিন্যাস করার চেষ্টা শুরু করে এই জঙ্গিগোষ্ঠী।
রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের ‘১২৬৭ আল-কায়দা নিষেধাজ্ঞা কমিটি’ ওসামা বিন লাদেনের সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগের অভিযোগে পাক জঙ্গিগোষ্ঠী লশকরকে ‘সন্ত্রাসবাদী সংগঠন’ হিসাবে ঘোষণা করে। তার পরে মুম্বইয়ে ২৬/১১ সন্ত্রাসের চক্রী হাফিজ়, জ়াকিউর রহমান লকভিরা ‘দ্য ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স’ (এফএএফটি)-এর নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে ‘ছায়া সংগঠন’ গড়ে কাশ্মীরে নাশকতার ধারা বজায় রাখতে সক্রিয় হন সে সময়। আর সেই সূত্রেই গড়ে ওঠে তেহরিক লবাইক ইয়া মুসলিম (টিএলএম), টিআরএফ-এর মতো জঙ্গিগোষ্ঠী।