প্রশান্ত কিশোর
ভোটের রাজনীতিতে তো ছিলেনই, এ বার কি সক্রিয় রাজনীতিতে? সরাসরি প্রশ্নটা এড়িয়ে গেলেন প্রশান্ত কিশোর, ‘‘সব জল্পনা দাদা!’’ তবে একবারে অস্বীকারও করলেন না। খবর, দিন পনেরোর মধ্যে কংগ্রেসে যোগ দিচ্ছেন এই ‘নির্বাচনী-কৌশলকার’। এমনিতে কম কথাই বলেন তিনি। মোবাইলের ও পার থেকে নিজের বিষয়ে কথা বলতে এ টুকুই। বাকিটা দেশের রাজনীতি ও সামাজিক বিষয়।
পাঁচ রাজ্যের সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে কংগ্রেসের হয়ে কাজ করেছেন তিনি। উত্তরপ্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডে সফল হননি। তবে পঞ্জাবে প্রবল প্রতিপক্ষ বিজেপি এবং আম আদমি পার্টিকে রুখে দিয়েছেন। তাঁর রণনীতিতে বিপুল জয় পেয়েছেন ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংহের নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস।
কথায় কথায় প্রশান্ত বললেন, ‘‘ভোটের সময় দিল্লিতে বসেই খবর পাচ্ছিলাম, বাড়িতে মায়ের শরীর ভাল যাচ্ছে না।’’ তাই নির্বাচন মিটতেই মা’কে দেখতে এসেছেন তিনি। একই সঙ্গে অবশ্য নীতীশ সরকারের বিহার বিকাশ মিশনের দায়িত্বে থাকা প্রসান্ত কিশোর মিশনের কাজকর্ম খতিয়ে দেখেছেন। তিন দিন ধরে পটনায় মুখ্যমন্ত্রী-নিবাসের লাগোয়া, ৭ নম্বর সার্কুলার রোডের বাংলোয় মিশনের কাজের গতি খতিয়ে দেখছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন।
আরও পড়ুন: হাতে স্বরাষ্ট্র, যোগী কঠোর কসাইখানায়
দিন পাঁচেক আগে উত্তরপ্রদেশের লখনউয়ের কংগ্রেস দফতরে প্রশান্তের খোঁজ চেয়ে ফ্লেক্স টাঙিয়ে দেন এক নেতা। খোঁজ দিতে পারলে পাঁচ লক্ষ টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে বলেও ঘোষণা করা হয়। কংগ্রেসের তরফে ওই নেতাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তবে প্রশান্ত কিশোরের বিরুদ্ধে দলের একাংশের মধ্যে ক্ষোভ রয়েই গিয়েছে বলে মনে করেন ওয়াকিবহাল মহল।
ঘনিষ্ঠ মহলে প্রশান্ত জানিয়েছেন, নির্বাচনী পরামর্শদাতা কোম্পানি ‘ইন্ডিয়ান পলিটিক্যাল অ্যাকশন কমিটির (আই-প্যাক) সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেই রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার বিষয়ে তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন। গত বিহার বিধানসভা নির্বাচনের পরে অবশ্য রাজনীতিতে তাঁর যোগ দেওয়ার সম্ভবনা খারিজ করে দিয়েছিলেন প্রশান্ত। নিজেকে ‘পেশাদার’ হিসেবে তুলে ধরে দেশের রাজনৈতিক পরিকল্পনায় বিশেষজ্ঞ ও রণনীতিকার হয়ে উঠতে চেয়েছিলেন। কিন্তু উত্তরপ্রদেশ-সহ পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনের ফল সেই চিন্তায় পরিবর্তন এনেছে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক মহল।
পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনে এক সঙ্গে কাজ করার সুবাদে রাহুল গাঁধীর ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন তিনি। এমনকী প্রিয়ঙ্কা গাঁধীর সঙ্গেও তাঁর সম্পর্ক যথেষ্ঠ ভাল। সামনেই গুজরাত ও হিমাচল প্রদেশের নির্বাচন। বিশেষ করে গুজরাত বিধানসভা নিয়ে বিশেষ উৎসাহ রয়েছে রাজনৈতিক মহলের। ২০১২ সালে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অন্যতম ‘রণনীতিকার’ হিসেবে কাজ করেছিলেন তিনি। এ বার সেখানে কংগ্রেস নেতা হিসেবে তাঁর অভিষেক হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।