রঞ্জন গগৈ। —ফাইল চিত্র।
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের বিরুদ্ধে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। এ বার নিজেই তদন্ত প্রক্রিয়ায় থাকতে না চাওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানালেন সেই অভিযোগকারিণী। ন্যায্য বিচার পাবেন বলে আশা নেই, তাই তিন বিচারপতির ইন হাউস কমিটির তদন্ত প্রক্রিয়া থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন তিনি।
রঞ্জন গগৈয়ের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ খতিয়ে দেখতে বিচারপতি এসএ বোবদে, ইন্দু মলহোত্র এবং ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে গত সপ্তাহেই বিশেষ ইন হাউস কমিটি গড়া হয়। শুরুতে ওই কমিটিতে যোগ দেওয়ার কথা ছিল বিচারপতি এনভি রমণেরও। কিন্তু প্রধান বিচারপতির সঙ্গে তাঁর পারিবারিক সম্পর্ক থাকায় আপত্তি তোলেন অভিযোগকারিণী। তা সত্ত্বেও এদিন তদন্ত থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা ঘোষণা করলেন তিনি।
অভিযোগকারিণী ওই মহিলা সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন কর্মী। এ দিন সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানান, ‘‘অভিযোগ জানাতে এত দেরি হল কেন, ইন হাউস কমিটি বারবার আমাকে এই একই প্রশ্ন করে চলেছে। সুপ্রিম কোর্টের তিন বিচারপতি আমাকে লাগাতার জেরা করে চলেছেন। ওঁদের সামনে দাঁড়াতেই ভয় করে আমার। তার উপর হাজিরা দেওয়ার সময় আইনজীবী বা সঙ্গে কাউকে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি নেই। এমনকি বয়ানের ভিডিয়ো বা অডিয়ো রেকর্ডিংও করা হয় না।’’
আরও পড়ুন: মাসুদ আজহারকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী ঘোষণায় সদর্থক অগ্রগতি, চিনের ঘোষণায় আশায় ভারত
তিনি আরও জানান, ‘‘কানে শোনারও একটু সমস্যা রয়েছে আমার। রুদ্ধদ্বার আদালতে আমার বয়ান হিসাবে যা তুলে ধরা হয়, তা বুঝতেও অসুবিধা হয় আমার। গত ২৬ এবং ২৯ এপ্রিল যে বয়ান রেকর্ড করেছিলাম, তার কোনও কপিও আমাকে দেওয়া হয়নি।’’
শীর্ষ আদালতের ইন হাউস কমিটির উপর তাঁর আস্থা নেই বলেও এ দিন জানানঅভিযোগকারিণী। তাঁর কথায়, ‘‘তদন্ত প্রক্রিয়া কোন পথে এগোচ্ছে, সে ব্যাপারে কিছুই জানানো হয়নি আমাকে। তাই ন্যায্য বিচার পাওয়ার কোনও আশাই নেই আমার। তাই তদন্ত থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’ এ দিনও ওই কমিটির সামনে হাজিরা দেন তিনি। সেখানে অভিযোগ জানাতে দেরি হওয়ার কারণ জানিয়ে একটি চিঠি জমা দিয়েছেন বলে জানান অভিযোগকারিণী ওই মহিলা। সেই সঙ্গে আদালত থেকে বেরলে কেউ বা কারা তাঁকে অনুসরণ করে বলেও অভিযোগ তোলেন।
আরও পড়ুন: ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ফণী, সপ্তাহান্তে রাজ্যে ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে প্রবল বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস
গত ১৯ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের ২২ জন বিচারপতিকে হলফনামা দিয়ে প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের বিরুদ্ধে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ জানান ওই মহিলা। তিনি জানান, জুনিয়র কোর্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসাবে সুপ্রিম কোর্টে কর্মরত ছিলেন তিনি। সেই সময় ২০১৮ সালের অগস্ট মাসে প্রধান বিচারপতির বাড়ির অফিসে কাজ করার দায়িত্ব পান। সেখানে তাঁকে যৌন হেনস্থা করেন প্রধান বিচারপতি। প্রতিবাদ করলে চাকরি থেকেই বরখাস্ত করা হয়। প্রধান বিচারপতি যদিও শুরু থেকেই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।