ছিটমহলের উন্নয়নে তৎপরতা শুরু

উন্নয়ন ও নিরাপত্তা, এই দুই সুনিশ্চিত করতে ছিটমহলগুলিতে প্রশাসনিক তৎপরতা শুরু হয়েছে। রবিবার সকালে বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম জেলার ভারতীয় ছিটমহলে যান ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার পঙ্কজ সারণ ও রাজশাহী ডিভিশনের ডেপুটি হাইকমিশনার সন্দীপ মিত্র। এলাকা পরিদর্শনের পাশাপাশি তাঁরা ওই এলাকার বাসিন্দাদের সব রকম সহযোগিতার ব্যাপারে আশ্বাস দেন। পাশাপাশি, কোচবিহারে থাকা বাংলাদেশি ছিটমহলগুলি নিয়ে জেলা প্রশাসনের তরফে একটি উন্নয়নের পরিকল্পনা তৈরির কাজ শুরু করা হয়েছে। ওই পরিকল্পনায় বাসিন্দাদের বসবাসের জন্য জায়গার ব্যবস্থার পাশাপাশি স্কুল, কলেজ, রাস্তা তৈরির নকশা করা হচ্ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ১১ মে ২০১৫ ০৩:৩৪
Share:

ছিটমহলে দু’দেশের আধিকারিকেরা। ছবি ছিটমহাল বিনিময় সমন্বয় কমিটির সৌজন্যে।

উন্নয়ন ও নিরাপত্তা, এই দুই সুনিশ্চিত করতে ছিটমহলগুলিতে প্রশাসনিক তৎপরতা শুরু হয়েছে। রবিবার সকালে বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম জেলার ভারতীয় ছিটমহলে যান ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার পঙ্কজ সারণ ও রাজশাহী ডিভিশনের ডেপুটি হাইকমিশনার সন্দীপ মিত্র। এলাকা পরিদর্শনের পাশাপাশি তাঁরা ওই এলাকার বাসিন্দাদের সব রকম সহযোগিতার ব্যাপারে আশ্বাস দেন। পাশাপাশি, কোচবিহারে থাকা বাংলাদেশি ছিটমহলগুলি নিয়ে জেলা প্রশাসনের তরফে একটি উন্নয়নের পরিকল্পনা তৈরির কাজ শুরু করা হয়েছে। ওই পরিকল্পনায় বাসিন্দাদের বসবাসের জন্য জায়গার ব্যবস্থার পাশাপাশি স্কুল, কলেজ, রাস্তা তৈরির নকশা করা হচ্ছে। কোচবিহারের জেলাশাসক পি উল্গানাথন বলেন, “প্রাথমিকভাবে আমরা ছিটমহলে উন্নয়নের ব্যাপারে পরিকল্পনা তৈরির কাজ শুরু করেছি। সমস্ত বিভাগকে নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠক হয়েছে। ওই পরিকল্পনা সরকারের কাছে জমা দেব।”

Advertisement

স্থল চুক্তি সীমান্ত বিল পাশের পরে ছিটমহলগুলিতে যাতে কোনওরকম সমস্যা না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে শুরু করেছে প্রশাসন। সম্প্রতি বাসিন্দাদের উপরে নির্যাতনের একটি অভিযোগ পেয়ে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতেই এদিন ভারতীয় হাইকমিশনার পঙ্কজ সারণের নেতৃত্বে একটি দল ওই এলাকায় যান। তাঁদের সঙ্গে বাংলাদেশের পদাধিকারীরাও ছিলেন। ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহাল বিনিময় কমিটির পক্ষ থেকে ওই দলকে স্বাগত জানানো হয়। মঞ্চ বেঁধে একটি সভা হয়। ছিটমহলের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন ভারতীয় হাই কমিশনার। বিনিময় কমিটির নেতা দীপ্তিমান সেনগুপ্ত বলেন, “আমরা চাই সব ছিটমহল ভারত সরকারের প্রতিনিধিরা ঘুরে দেখুক, তাহলেই সব পরিষ্কার হবে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘ভারতীয় হাইকমিশনার ওই এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের দাবি সম্পর্কে সুনিশ্চিত হয়েছেন।’’

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, দুই দেশের মধ্যে ১৬২টি ছিটমহল রয়েছে। ভারতীয় ভূখন্ডের মধ্যে বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহল রয়েছে। বাংলাদেশের ভূখন্ডের মধ্যে ভারতের ১১১টি ছিটমহল রয়েছে। ওই ছিটমহলগুলিতে বসবাসকারী মানুষের সংখ্যা প্রায় ৬০ হাজার। স্বাধীনতার পর থেকে যারা পরিচয়হীন হয়ে রয়েছেন। তাঁরা সরকারি কোনও সুযোগ-সুবিধে পাচ্ছেন না। দীর্ঘদিন ধরে ওই অবস্থার অবসান চেয়ে আন্দোলন শুরু করেছে ছিটমহলের মানুষ। নানা সংগঠন তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছে। এবারে ওই স্থল সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের সম্ভাবনা তৈরি হওয়ায় ওই এলাকাগুলিতে খুশির হাওয়া ছড়িয়েছে। এই সময় প্রশাসন অতি সতর্ক হয়ে উন্নয়নের ব্যাপারে পরিকল্পনায় নেমেছে।

Advertisement

প্রশাসন সূত্রে খবর, প্রথমত ভারতীয় ছিটমহল থেকে যে বাসিন্দারা ভারতে আসবেন তাঁদের থাকার ব্যবস্থার ক্ষেত্রে যাতে কোনও অসুবিধে না হয় সেদিকটা নজর দেওয়া হয়েছে। প্রশাসন মনে করছে, বাংলাদেশি ছিটমহলের অধিকাংশ বাসিন্দা ভারতেই থাকবেন আবার ভারতীয় ছিটমহল থেকেও প্রচুর বাসিন্দা ভারতে আসবেন। সেক্ষেত্রে জনসংখ্যা বাড়বে। তাঁদের জন্য জমির ব্যবস্থা যাতে করা যায় এবং অতিরিক্ত জনসংখ্যা যাতে কোনও অসুবিধে তৈরি না করে তা চিন্তা করে পরিকল্পনা তৈরি করা হচ্ছে। এ ব্যাপারেও ১০০ একর জমি দিয়ে প্রশাসনকে সাহায্যের কথা জানিয়েছে ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহাল বিনিময় কমিটি।

অন্যদিকে, ছিটমহলগুলিতে এখন কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্য কেন্দ্র কিছুই নেই। রাস্তা নেই, বিদ্যুতের ব্যবস্থা নেই, পানীয় জল নেই, থানা নেই। ছিটমহল বিনিময় হতেই যাতে ওই সমস্যা দূর করা যায় সে ব্যাপারে পরিকল্পনা তৈরি করা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন