এমন বিড়ম্বনার মুখে আগে কি পড়েছে ভারত! মনে করা যাচ্ছে না। আফ্রিকার ৫০টিরও বেশি দেশ আজ একজোটে জাতিবিদ্বেষের অভিযোগ তুলেছে ভারতের বিরদ্ধে। আন্তর্জাতিক মঞ্চে এ ভাবে মুখ পোড়ায় আজ আক্ষরিক অর্থেই দীর্ঘ ক্ষণ বাক্রুদ্ধ ছিল নরেন্দ্র মোদীর সরকার। পরে রাতে এক বিবৃতিতে বিদেশ মন্ত্রক ওই অভিযোগ খণ্ডন করে। এ-ও জানা যায়, খুব কম সংখ্যক রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে কথা বলেই ‘আফ্রিকা গ্রুপ হেড অব মিশন’-এর তরফে ওই বিবৃতি জারি করা হয়েছে।
ওই বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, ভারতে নিযুক্ত আফ্রিকার রাষ্ট্রদূতেরা আজ এক বিশেষ বৈঠকে গ্রেটার নয়ডায় আফ্রিকার ছাত্রদের উপর হামলার ঘটনা নিয়ে আলোচনা করেন। এই রকম ঘটনা অতীতেও ঘটেছে। এই ধরনের ঘটনা রুখতে ভারত সরকার এখনও পর্যন্ত হাতেকলমে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। এমন কিছু করেনি যা দেখে বোঝা যায়, ভারত বিষয়টিকে নিন্দা করছে।’ এ-ও বলা হয়েছে, এই ধরনের হামলার পিছনে রয়েছে তীব্র জাতিবিদ্বেষ। রাজ্য অথবা কেন্দ্রীয় সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের নেতৃত্ব বিষয়টি নিয়ে নীরব রয়েছেন। বিবৃতিতে এ-ও বলা হয়, এর বিরুদ্ধে সব রকম কূটনৈতিক পথের কথাই ভাবতে হচ্ছে তাঁদের। রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার কমিশনের কাছেও এ নিয়ে অভিযোগ জানানো হবে।
এর জবাবে বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, গ্রেটার নয়ডায় নাইজেরীয় যুবকদের উপরে হামলার পরেই ওই ঘটনার নিন্দা করেছিলেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। উত্তরপ্রদেশ প্রশাসনও দ্রুত পদক্ষেপ করেছে। গ্রেফতার করা হয়েছে সন্দেহভাজনদের। আর কেনীয় যুবতীকে নিগ্রহের অভিযোগ নিয়েও ভারতের ভূমিকার প্রশংসাই করেছে সে দেশের সরকার। নিগ্রহের অভিযোগ প্রত্যাহার করেছেন ওই তরুণী। পর্যটক ভিসা ফুরিয়ে যাওয়ায় তাঁকে দেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। বিদেশ মন্ত্রক বিবৃতিতে এ-ও জানায়, বিদেশি নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সরকার দায়বদ্ধ।
দিনের শেষ ভারত জবাব দিলেও আজ দুপুরে ‘আফ্রিকা গ্রুপ হেড অব মিশন’-এর বিবৃতি প্রকাশের পরেই হইচই পড়ে যায়। সাম্প্রতিক অতীতে কোনও দেশই ভারতের বিরুদ্ধে এত তীব্র ভাবে জাতিবিদ্বেষের অভিযোগ তোলেনি। আজ এক ধাক্কায় এতগুলি দেশ মুখর হওয়ায় দীর্ঘ ক্ষণ রা কাড়েনি দিল্লি। প্রথমে পিছনের পায়ে চলে গেলেও বিষয়টি নিয়ে আফ্রিকার রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে শুরু করে বিদেশ মন্ত্রক। তাঁদের আশ্বস্ত করার জন্য সক্রিয় হয়ে ওঠে। পরে কিছু সূত্রে জানা যায়, খুব কম সংখ্যক রাষ্ট্রদূতই ওই বৈঠকে ছিলেন।