অলোক বর্মা।—ফাইল চিত্র।
সিবিআই প্রধান পদ থেকে আবার অপসারিত অলোক বর্মা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাসভবনে দীর্ঘ বৈঠকের পরে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত খারিজ করে মঙ্গলবার দেশের সর্বোচ্চ আদালত জানিয়েছিল, অলোক বর্মাকে অনির্দিষ্টকালীন ছুটিতে রাখা যাবে না। তাঁকে অবিলম্বে সিবিআই প্রধান পদে ফেরানোর নির্দেশ দেয় আদালত। বুধবার অলোক বর্মা ফের সিবিআই প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন। এক দিন কাটতে না কাটতেই তাঁকে ফের সরিয়ে দিল সিবিআই প্রধান মনোনয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্যানেল।
প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলনেতা এবং প্রধান বিচারপতি— এই তিন জনের প্যানেলই স্থির করে সিবিআই প্রধান কে হবেন। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে অলোক বর্মা পদ ফিরে পাওয়ার পরের দিনই সেই প্যানেলের বৈঠক ডাকা হয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাসভবনে বৈঠকটি হয় এ দিন। প্রধানমন্ত্রী নিজে এবং বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়্গে বৈঠকে ছিলেন। তবে প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ ছিলেন না। তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে ছিলেন এ কে সিক্রি। সেই বৈঠকেই অলোক বর্মাকে অপসারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বর্মাকে ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত খারিজ করে প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের বেঞ্চ মঙ্গলবার নির্দেশ দিয়েছিল, সিবিআই ডিরেক্টরের ভবিষ্যৎ ঠিক করবে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বাছাই কমিটি। সুপ্রিম কোর্ট কমিটির বৈঠক ডাকার জন্য এক সপ্তাহ সময় দিয়েছিল। খড়্গের দাবি ছিল, শুক্রবার এই বৈঠক ডাকা হোক। কারণ কোর্টের রায় পড়ার জন্য সময় দরকার। তা ছাড়া বৈঠক ডাকা হলেও তা বর্মাকে নিয়ে, না তাঁর উত্তরসূরি ঠিক করার জন্য— সেই আলোচ্যসূচিও জানানো হয়নি বলে আপত্তি তোলেন তিনি।
কিন্তু বুধবার সকালেই সিবিআইয়ের সদর দফতরের বারো তলায় ডিরেক্টরের অফিসে পৌঁছে যান অলোক বর্মা। তাঁর সঙ্গে দেখা করতে দফতরে পৌঁছন এ কে বস্সি, এম কে সিন্হার মতো ‘ঘনিষ্ঠ’ অফিসারেরা— বর্মাকে সরানোর পরেই যাঁদের বদলি করে দেওয়া হয়েছিল। এই অফিসারেরাই তদন্ত করছিলেন সিবিআইয়ের স্পেশ্যাল ডিরেক্টর রাকেশ আস্থানার বিরুদ্ধে। বর্মা তাঁদের অধিকাংশেরই বদলির নির্দেশ প্রত্যাহার করেন। এতেই রক্তচাপ বেড়ে যায় সরকারের। তাই খড়্গের দাবি খারিজ করে বুধবারই কমিটির বৈঠক ডাকা হয়। যুক্তি দেওয়া হয়, সুপ্রিম কোর্ট বর্মাকে পুনর্বহাল করলেও তাঁর কাজকর্মে গণ্ডি টেনে দিয়েছে। তাতে সিবিআইয়ের কাজ ব্যাহত হচ্ছে। দ্রুত এই সমস্যার সমাধান প্রয়োজন।
বর্মাকে ফেরানোর পক্ষে রায় দিয়েছিলেন প্রধান বিচারপতি। তাই উচ্চ পর্যায়ের কমিটিতে তিনি নিজে না-থেকে দ্বিতীয় প্রবীণতম বিচারপতি এ কে সিক্রিকে নিজের প্রতিনিধি মনোনীত করেন। প্রবীণ আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিংহের মতে, ‘‘প্রধান বিচারপতির উচিত ছিল পরবর্তী প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদেকে মনোনীত করা। বিচারপতি সিক্রি কিছু দিনের মধ্যেই অবসর নেবেন। তাঁকে পাঠানো ঠিক হয়নি।’’