ট্রেনের পোড়া কামরা। দিল্লির আনন্দ বিহার স্টেশনে। ছবি: পিটিআই।
আগুন ছড়িয়ে পড়ল দিল্লি ও পাশের এলাকাগুলিতেও।
ডেরা সচ্চা সৌদা প্রধান গুরমিত রাম রহিম সিংহের গ্রেফতারের খবর ছড়িয়ে পড়তেই দিল্লি ও রাজধানী সংলগ্ন উত্তরপ্রদেশে কয়েকটি বাস ও ট্রেনে আগুন জ্বালিয়ে দেয় ভক্তেরা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে খবর আসে, আগামিকাল দিল্লিতে ডেরা সমর্থকেরা বড়সড় বিক্ষোভের পরিকল্পনা করছে। এর পরেই দিল্লিতে জারি হয়েছে ১৪৪ ধারা। পরের মাসের ৮ তারিখ পর্যন্ত সভাসমাবেশ, জমায়েতের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। নয়ডা, গাজিয়াবাদ এবং উত্তরপ্রদেশের বেশ কিছু জেলাতেও জারি হয়েছে ১৪৪ ধারা। পাশাপাশি, পঞ্জাব ও হরিয়ানার মতো রাজ্যে ট্রেন ও অন্যান্য যানবাহন বন্ধ থাকায় পরের কয়েক দিনে দিল্লি-সহ গোটা উত্তর ভারতে স্বাভাবিক জীবন বিপর্যস্ত হওয়ার আশঙ্কাও করছে সরকার। এর আগে আশেপাশের রাজ্যে জাঠ-বিক্ষোভের আঁচ এসে পড়েছিল দিল্লিতে। বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের সরবরাহের উপর প্রভাব পড়েছিল বিরাট। যা পরিস্থিতি, তাতে সেই আশঙ্কা সামনে এসেছে।
বিকেলে ডেরা সমর্থকরা দিল্লির লোনি চক ও মেহেরৌলিতে বাস পুড়িয়ে দেয়। দিল্লি সংলগ্ন উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদে দুটি বাস জ্বালিয়ে দেয় রাম রহিমের ভক্তরা। এর পরেই পূর্ব দিল্লির আনন্দ বিহার স্টেশনের থেকে কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে থাকা রেওয়া এক্সপ্রেসের দুটি কামরায় আগুন লাগিয়ে দেয় তারা। হাঙ্গামা হয় দিল্লির চিত্তরঞ্জন পার্ক, জ্যোতি নগর, হর্ষ বিহার, জাহাঙ্গীরপুরী, বদরপুর এলাকায়। নড়েচড়ে বসে দিল্লি প্রশাসন। পরিস্থিতি সামলাতে দিল্লি পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে কথা বলেন রাজ্যের উপ-রাজ্যপাল অনিল বৈজল। সকাল থেকেই হরিয়ানা সংলগ্ন মেট্রোগুলিতে লোকজন বিশেষ ছিল না। দুপুরের পরে সংঘর্ষের খবর আসতেই দিল্লির মেট্রো স্টেশনগুলিতে নিরাপত্তা আরও কঠোর করা হয়। সিআরপিএফের ডিজি জানান, উত্তরপ্রদেশ ও হরিয়ানা সংলগ্ন এলাকাগুলির মেট্রো স্টেশনগুলিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া, দিল্লি সীমানায় পেট্রোল পাম্পগুলিকেও বন্ধ রাখা হয়েছে।
পঞ্জাব-হরিয়ানার আঁচ থেকে বাঁচতে দিল্লি ছাড়াও উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থানে সতর্কতা জারি হয়েছে। উত্তর ভারতের বিস্তীর্ণ এলাকায় পরিবহণ ব্যবস্থা থমকে যাওয়ায় ব্যবসায় ক্ষতির শঙ্কা দেখা দিয়েছে। দিল্লির বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের সঙ্কট দেখা দেওয়ার উদ্বেগও রয়েছে। কনফেডারেশন অব অল ইন্ডিয়া ট্রেডারস-এর তরফে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের কাছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আর্জি জানানো হয়। সংগঠনের আশঙ্কা, পঞ্জাব, হরিয়ানা ছাড়াও দিল্লি, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডে ব্যবসা বিরাট ভাবে ধাক্কা খাবে।