পুলিশ সুপারের দফতরের সামনে কৃষক মুক্তির সদস্যদের বিক্ষোভ। হাইলাকান্দিতে। ছবি: অমিত দাস।
হাইলাকান্দিতে ইন্দিরা আবাস যোজনার টাকা নয়ছয়ের ঘটনা অভিযুক্তদের আড়াল করছে পুলিশ— এমনই অভিযোগে জেলার পুলিশ সুপারের দফতর ঘেরাও করল কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতি।
আজ দুপুরে ওই সংগঠনের মিছিল, স্লোগানে চাঞ্চল্য ছড়ায় শহরের অফিসপাড়ায়। অভিযুক্তদের কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না তার জবাবদিগি চান বিক্ষোভকারীরা। কেএমএসএস সদস্যরা অভিযুক্তদের নাম ধরে ধরে তাঁদের গ্রেফতার করার দাবি জানান। আন্দোলনকারীরা জানান, হাইলাকান্দি উন্নয়ন খণ্ডের বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েতে ইন্দিরা আবাস যোজনায় বরাদ্দ ৭০ লক্ষ টাকা নয়ছয়ে মূল অভিযুক্ত এসিএস আধিকারিক ধ্রবজ্যোতি দেব, বিডিও স্বপ্না লোধ ও হিসাবরক্ষক জালালউদ্দিন। কিন্তু এখনও কাউকে ধরা হয়নি।
উল্লেখ্য মাসপাঁচেক আগে হাইলাকান্দির জেলাশাসকের নির্দেশে ওই তিন আধিকারিক-সহ ১০ জনের বিরুদ্ধে ইন্দিরা আবাসের টাকা লোপাটের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। অভিযুক্তরা সকলেই পলাতক। কৃষক মুক্তির অভিযোগ, অভিযুক্তরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ তাঁদের ধরছে না। একই ভাবে হাইলাকান্দি শিক্ষা বিভাগের অপ্রাদেশিকৃত বিদ্যালয়ের নথি জালিয়াতির মামলায় প্রাক্তন জেলা প্রাথমিক শিক্ষাধিকারিক ও হাইলাকান্দি জেলা কংগ্রেসের উপসভাপতি ইসাক আলি বড়ভুঁইঞা এবং এমআইএস কো-অর্ডিনেটর নাসিরউদ্দিনকেও পুলিশ গ্রেফতার করছে না। কয়েক দিন আগে ভেঞ্চার স্কুলের নথি জাল করে ৩২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে সরকারি অনুমোদন পাইয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগে জেলার প্রাথমিক শিক্ষাধিকারিক ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছিলেন। তাঁদের মধ্যে হাইলাকান্দির শিক্ষা দফতরের করণিক বদরুল ইসলাম লস্কর অন্য একটি মামলায় জেল হেফাজতে রয়েছে। কেএমএমএস-এর অভিযোগ, তাঁরা রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে পুলিশের হাত থেকে বেঁচে রয়েছেন। দু’টি মামলার তদন্তকারী ওসি –কে আচমকা বদলির প্রতিবাদেও বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দেন। বদলির নির্দেশ প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।
কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতির কেন্দ্রীয় সম্পাদক জহিরউদ্দিন লস্কর বলেন, ‘‘ওসি কনকচন্দ্র নাথ দক্ষতার সঙ্গে তদন্ত চালাচ্ছিলেন। এতে শাসক দলের নেতারা ভয় পেয়ে যান। তাই মাত্র ৬ মাসের মাথায় তাঁকে বদলি করে দেওয়া হয়।’’
তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে জানান, ওসিকে বদলি করায় গুরুত্বপূর্ণ ওই দু’টি মামলায় নিরপেক্ষ তদন্ত নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। কেএমএসএস নেতা ফৈয়াজ আহমেদ বলেন, ‘‘অভিযুক্তদের রাজনৈতিক মদত দেওয়া হচ্ছে।’’
এ বিষয়ে হাইলাকান্দির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাজমোহন রায় বলেন, ‘‘কাউকে গ্রেফতার করার আগে পর্যাপ্ত প্রমাণ সংগ্রহ করতে হয়। পুলিশ আপাতত তাই সংগ্রহ করছে। তাতে আরও দু-তিন মাস সময় লাগতে পারে।’’