আলাদা রাজ্যের দাবি আদায়ে পার্বত্য জেলার বাসিন্দাদের সমর্থন চাইল ‘পৃথক বরাক দাবি কমিটি’। সংগঠনের এক প্রতিনিধি দল এরই মধ্যে ডিমা হাসাও ও কার্বি আংলং ঘুরে এসেছেন। সেখানকার নানা সংগঠনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে তাঁরা আলোচনাও করেন। বঞ্চনার বিরুদ্ধে জোট বাঁধতে সবাই একমত বলে দাবি কমিটির প্রধান শুভদীপ দত্তের।
শুভদীপবাবুর বক্তব্য, ডিমা হাসাও থেকে অনেক দিন ধরে ‘রাজ্যের মধ্যে রাজ্য’ ঘোষণার দাবিতে আন্দোলন হচ্ছে। পৃথক ‘কার্বিল্যান্ড’ চায় কার্বি আংলঙের বিভিন্ন সংস্থা। আবার দুই পার্বত্য জেলা মিলিয়ে একটি রাজ্য গঠনের দাবিতে আশির দশকে নতুন রাজনৈতিক দলও গঠিত হয়েছিল। সেই ‘স্বশাসিত রাজ্য দাবি কমিটি’ (এএসডিসি) পর পর তিনটি লোকসভা ভোটে লড়ে পার্বত্য আসনে জিতেওছিল। বিধানসভাতেও অনেকদিন প্রতিনিধিত্ব করেছে এএসডিসি। দুই জেলার পার্বত্য স্বশাসিত পরিষদগুলিও অনেকদিন তাদের দখলে ছিল।
শুভদীপবাবুর বক্তব্য, সকলেরই অভিযোগ, সরকারি বঞ্চনার দরুন তারা অন্য অঞ্চলের সঙ্গে সমান তালে এগোতে পারছে না। এই জায়গাতেই পৃথক বরাক দাবি কমিটির সঙ্গে পার্বত্য জেলার মানুষের সাযুজ্য ধরা পড়েছে বলে তিনি মনে করেন। কাছাড়, করিমগঞ্জ ও হাইলাকান্দি জেলাকে নিয়ে গঠিত বাঙালিপ্রধান বরাক উপত্যকার মানুষও নানা ধরনের হয়রানির শিকার। যতদিন যাচ্ছে, হয়রানির মাত্রা বেড়েই চলেছে। ভাষার নামে বিভেদের জাল বোনা হচ্ছে। এনআরসি বা নাগরিকত্ব নিয়ে সন্দেহে এই অঞ্চলের মানুষ চরম সঙ্কটে। এই অবস্থা থেকে মুক্তির জন্য বঞ্চিতদের নিয়ে জোট গঠন জরুরি হয়ে পড়েছে বলে শুভদীপবাবুর দাবি। তাঁরা এই কাজটিই করার চেষ্টা শুরু করেছেন বলে তিনি জানান।
তিনি জানান, কেউ কেউ পাঁচটি জেলাকে নিয়ে একটি রাজ্য গঠনের প্রস্তাবও দিয়েছেন। ‘পৃথক বরাক দাবি কমিটি’ তাকে অসম্ভব বলে উড়িয়ে দিতে নারাজ। শুভদীপবাবুর বক্তব্য, পাঁচটি জেলাই দীর্ঘদিন ধরে এক বিভাগের অধীনে। ভৌগোলিক ভাবেও তারা একই সীমানায় অবস্থিত। এ ছাড়া, ব্রিটিশ অধিগ্রহণের আগে বর্তমান বরাক উপত্যকার বিরাট অংশ ডিমাসা রাজত্বের অধীনস্থ ছিল।
ভৌগোলিক ও ঐতিহাসিক দিক থেকে সাদৃশ্যপূর্ণ এবং রাজনৈতিক দিক থেকে বঞ্চনার শিকার এই জেলাগুলি জোট বাঁধলে দাবি আদায় সহজতর হবে বলে তাঁর আশা। তিনি জানিয়েছেন, গণ-অভিবর্তনের মাধ্যমে দাবি আদায়ের রূপরেখা চূড়ান্ত করা হবে। জানুয়ারিতেই আন্দোলনসূচি তৈরি করে সংঘবদ্ধ ভাবে তাঁরা ঝাঁপাবেন বলে শুভদীপবাবু জানান।