শীর্ষ আদালতের চার প্রবীণ বিচারপতির বিদ্রোহ ঘিরে যখন গোটা দেশ তোলপাড়, তার মধ্যেই আর্থিক নয়ছয়ের মামলায় কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম এবং তাঁর পুত্র কার্তির বাড়িতে একযোগে তল্লাশি চালাল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। আজ চেন্নাইয়ে কার্তির বাড়ি এবং দিল্লিতে চিদম্বরমের বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়। চিদম্বরমের দাবি, তল্লাশি শেষে দু’টি বাড়ি থেকেই কিছু পাওয়া যায়নি। সে জন্য তদন্তকারী অফিসারেরা তাঁর কাছ থেকে ক্ষমাও চেয়ে যান। গোটা ঘটনাটিকে ‘ভ্রান্তিবিলাস’ বলে কটাক্ষও করেছেন তিনি।
গত কাল বিচারপতি বিদ্রোহের পরে বেশ রাত করেই দলীয় দফতরে মুখ খোলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। কংগ্রেস সূত্রের খবর, তার আগে দীর্ঘক্ষণ দলের আইনজীবী নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন রাহুল। পরামর্শদাতাদের অগ্রভাগে ছিলেন চিদম্বরম। সাংবাদিক বৈঠকেও একেবারে সামনের সারিতে বসেছিলেন তিনি। কংগ্রেসের অভিযোগ, সেই ক্ষোভেই আজ ইডি-কে দিয়ে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ‘প্রতিশোধ’ নেওয়া হয়েছে। একই সুরে চিদম্বরমও বলেন, ‘‘কাশ্মীর, মাওবাদী সমস্যা থেকে নোট বাতিলের মতো কেন্দ্রীয় পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সরব থাকায় প্রতিহিংসাবশতই কেন্দ্র এ সব করছে।’’ ইডি তল্লাশির সমালোচনা করে সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদবের বক্তব্য, বিচারপতি বিদ্রোহ থেকে নজর ঘোরাতেই এ সব করছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
অভিযোগ, ইউপিএ আমলে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের ছাড়পত্রের ব্যাপারে কার্তি প্রভাব খাটিয়েছিলেন। এয়ারসেল-ম্যাক্সিস চুক্তির সময় পি চিদম্বরম ছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। সেই সুবাদেই কার্তি প্রভাব খাটান বলে অভিযোগ। বিনিময়ে কার্তি পান ৩ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা। সিবিআই ওই দুর্নীতির তদন্ত করছে এবং দুর্নীতি থেকে পাওয়া টাকা কোথায় গেল, তা খতিয়ে দেখছে ইডি।
কার্তির চেন্নাইয়ের বাড়ির পাশাপাশি দিল্লির জোরবাগে চিদম্বরমের বাড়িতে এ দিন যান তদন্তকারী অফিসারেরা। চিদম্বরমের কথায়, ‘‘অফিসারেরা ভেবেছিলেন কার্তি এখানে থাকেন। আমি তাঁদের ভুল শুধরে বলি, কার্তি চেন্নাইয়ে আর আমি এই বাড়িতে থাকি।’’ ওই অফিসারদের কাছে তল্লাশির কাগজপত্র থাকায় তাঁদের বাধা দেননি চিদম্বরম। তবে জানিয়েছেন, তিনি এর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করবেন।
এ দিন চিদম্বরমের বাড়ির রান্নাঘর এবং বাথরুমেও তল্লাশি চালান ইডি অফিসারেরা। চিদম্বরমের দাবি, ‘‘শেষ পর্যন্ত কিছু পাওয়া যায়নি। যে হেতু তল্লাশিতে এসেছে, তাই দলটি ২০১২-১৩ সালে সংসদে সরকারের দেওয়া কিছু বিবৃতি নিয়ে ফিরে যায়। এমনকী কিছু না পাওয়ায় যাওয়ার সময়ে ক্ষমাও চেয়ে যায় আমার কাছে। গোটাটাই আসলে ভ্রান্তিবিলাস!’’