অখিলেশকে অগ্রাহ্য করলে ভুগতে হবে, বলছে লখনউ

উন্নয়নে বাজি রাখতে গিয়ে জাতপাতের অঙ্ক মেলাতে পারেননি অখিলেশ যাদব। তা সত্ত্বেও অখিলেশকে এখনই অগ্রাহ্যের তালিকায় ফেলে দেওয়া সম্ভব নয় বলেই মনে করছেন উত্তরপ্রদেশের রাজনীতিকরা।

Advertisement

প্রেমাংশু চৌধুরী

লখনউ শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০১৭ ০৩:০০
Share:

উন্নয়নে বাজি রাখতে গিয়ে জাতপাতের অঙ্ক মেলাতে পারেননি অখিলেশ যাদব। তা সত্ত্বেও অখিলেশকে এখনই অগ্রাহ্যের তালিকায় ফেলে দেওয়া সম্ভব নয় বলেই মনে করছেন উত্তরপ্রদেশের রাজনীতিকরা।

Advertisement

সমাজবাদী পার্টির একটা বড় অংশ তো বটেই, মায়াবতীর বিএসপি, কংগ্রেস, এমনকী বিজেপি নেতারাও ঘরোয়া আলোচনায় বলছেন, অখিলেশকে অগ্রাহ্য করলে তার মূল্য চোকাতে হবে। কারণ নিজের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি, ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তা এবং রাজনৈতিক বুদ্ধির জোরে অখিলেশ ফের ঘুরে দাঁড়াতে পারেন। এমনকী ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনেই।

কেন এই অনুমান? বিধানসভা ভোটের ফলাফলের পরের দিনই লখনউয়ের রাজনৈতিক মহল বলছে, উত্তরপ্রদেশে এ বার নরেন্দ্র মোদীর ঝড় উঠেছিল, এ কথা সত্যি। অখিলেশও বাবা মুলায়মের মতো জাতপাতের অঙ্ক মেলাতে পারেননি। লখনউয়ের মেট্রো কিংবা লখনউ-আগরা এক্সপ্রেসওয়ের উপরেই ভরসা রেখেছিলেন তিনি। আর অখিলেশ শুধু যাদবদের মন জয়ের চেষ্টা করেছেন। কুর্মি বা লোধি-র মতো অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির মানুষের ভোটকে গুরুত্ব দেননি। ফলে সেই ভোট বিজেপির দিকে চলে গিয়েছে। মুলায়ম যাদবের সঙ্গে মুসলিম ভোট মিশিয়ে কেরামতি দেখাতেন। অখিলেশের ক্ষেত্রে সেই মুসলিম ভোটও সপা ও বিএসপি-র মধ্যে ভাগাভাগি হয়ে গিয়েছে।

Advertisement

আরও পড়ুন: নরেন্দ্র মোদীর রথের ধাক্কা, ছিটকে গেল অখিলেশ যাদবের সাইকেল

মুলায়ম ভোটের পরে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করাটাই সমাজবাদী পার্টির ভুল হয়েছে। জোটের নেতাদের অহঙ্কারও হারের জন্য দায়ী। শিবপাল-অমরও একই সুরে কথা বলেছেন। শিবপাল যে ভাইপোকে ছেড়ে কথা বলবেন না, তা বুঝিয়ে আজ টুইটারে ভিডিও পোস্ট করেছেন। ভিডিওতে অমিতাভ বচ্চনের কণ্ঠে শায়েরিতে ঘোষণা, ‘হাম জিতকে হারে হ্যায়, হাম ফির লড়কে জিতেঙ্গে’। চল্লিশ সেকেন্ডের ভিডিওতে মাত্র এক ঝলকের জন্য অখিলেশকে দেখা যাচ্ছে। বাকিটায় শুধুই মুলায়ম ও শিবপাল নিজে। শিবপাল যেন বোঝাতে চাইছেন, তিনিই সমাজবাদী পার্টির হাল ধরে দলকে ফের ক্ষমতায় আনবেন। লড়াই করে জেতার হুঙ্কার আসলে বিজেপির বিরুদ্ধে নয়, ভাইপো অখিলেশকেই নিশানা করে বলে মনে করছে সমাজবাদী পরিবার।

অখিলেশের অনুগামীরা বলছেন, সমাজবাদী পার্টির সরকারের পাঁচ বছরের মধ্যে প্রথম চার বছর মুলায়ম-শিবপালরাই মুখ্যমন্ত্রীকে কাজ করতে দেননি। পছন্দ না হলেও অখিলেশকে বাবা-কাকার চাপে গায়ত্রী প্রজাপতি, রবিদাস মেহরোত্রা, নরেন্দ্র বর্মা, রামগোবিন্দ চৌধুরীর মতো নেতাদের মন্ত্রী করতে হয়েছিল। কিন্তু এঁরা যে নিজেদের এলাকাতেই জনপ্রিয়তা হারিয়েছিলেন, তার প্রমাণ মিলেছে। সকলেই ভোটে হেরেছেন। অখিলেশ শিবিরের এক নেতার বক্তব্য, শিবপালদের কোণঠাসা না করতে পারলে ২২ শতাংশ ভোট ১৫ শতাংশে নেমে যেত। তাঁরা মানুষের কাছে এতটাই অপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন।

অখিলেশের সামনে এখন তাই চ্যালেঞ্জ দুটি। এক, বাবা-কাকার শিবিরকে নিরস্ত করে দলে নিজের কর্তৃত্ব টিকিয়ে রাখা। দুই, ২০১৯-এর দিকে তাকিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই শুরু করা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন