Red Fort Blast

‘আতঙ্কিত’! সেই আল-ফালাহ্‌র পড়ুয়াদের নিয়ে চিন্তায় অভিভাবকেরা, উদ্বিগ্ন তাঁদের ভবিষ্যৎ নিয়েও

বৃহস্পতিবার থেকে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে আবার পঠনপাঠন শুরু হয়েছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে সর্বদাই পুলিশি প্রহরা। শুধু তা-ই নয়, সংবাদমাধ্যমের কর্মীরাও রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে। আঁটসাঁট নিরাপত্তাও। তার মধ্যেই পড়ুয়ারা আসছেন।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২৫ ১৫:২৩
Share:

আল-ফালাহ্‌ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পুলিশ প্রহরা। — ফাইল চিত্র।

দিল্লি বিস্ফোরণকাণ্ডে বার বার উঠে এসেছে হরিয়ানার ফরিদাবাদের আল-ফালাহ্‌ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা জাওয়াদ আহমেদ সিদ্দিকী গ্রেফতার হয়েছেন। বেআইনি আর্থিক লেনদেনের অভিযোগে তিনি ইডির জালে। প্রায় প্রতি দিনই বিশ্ববিদ্যালয়ে আনাগোনা চলছে তদন্তকারীদের। কখনও এনআইএ, আবার কখনও ইডি, কখনও আবার পুলিশ। সেই আবহে তটস্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। পুরনো যাঁরা রয়েছেন তাঁরা তো বটেই, নতুন ভর্তি হওয়া পড়ুয়ারাও আতঙ্কিত। ভুগছেন মানসিক চাপে।

Advertisement

বৃহস্পতিবার থেকে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে আবার পঠনপাঠন শুরু হয়েছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে সর্বদাই পুলিশি প্রহরা। শুধু তা-ই নয়, সংবাদমাধ্যমের কর্মীরাও রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে। আঁটসাঁট নিরাপত্তাও। তার মধ্যেই পড়ুয়ারা আসছেন। কারও কারও সঙ্গে আবার অভিভাবকেরাও এসেছেন। সকলের চোখেমুখেই আতঙ্ক। চণ্ডীগড়, লখনউ। দিল্লি থেকে অনেকেই পড়তে যান আল-ফালাহ্‌ বিশ্ববিদ্যালয়ে। বৃহস্পতিবার এমন অনেক পড়ুয়ার সঙ্গেই আসেন তাঁদের অভিভাবকেরা। সংবাদ সংস্থাকে তাঁরা জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসটি কতটা নিরাপদ, তা নিরীক্ষণ করতেই এসেছেন!

সংবাদমাধ্যম ‘হিন্দুস্তান টাইমস্’-এর সঙ্গে কথা বলার সময় এক ছাত্রীর অভিভাবক বলেন, ‘‘দিল্লি বিস্ফোরণের পর আল-ফালাহ্‌ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম জড়ানোর পর থেকেই আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলাম। আমাদের মেয়েকে বাড়িতে চলে আসতে বলি। আজ তাঁকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছি ঠিকই। কিন্তু এখনও বুঝতে পারছি না, এটা সঠিক সিদ্ধান্ত কি না।’’ দোলাচালে রয়েছেন অভিভাবকেরা। একে নিরাপত্তা, অন্য দিকে সন্তানদের পড়াশোনার ভবিষ্যৎ— দুই নিয়েই চিন্তিত তাঁরা।

Advertisement

অন্য এক অভিভাবক সন্দীপ মেহতা জানান, এখন যা পরিস্থিতি বিশ্ববিদ্যালয়েরই আস্থা অর্জন করার প্রয়োজন রয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘আমার ছেলে অনেক পরিশ্রম করে এখানে এসেছে। কিন্তু এখন যা শুনছি, তাতে ছেলের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তা বাড়ছে।’’ সন্দীপ মনে করেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উচিত সকলের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করা, আস্থা অর্জন করা।

পড়ুয়াদের একাংশ জানান, চলতি সপ্তাহের শুরুতেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি কাউন্সেলিং পর্বের আয়োজন করেন। সেখানে সকলকে আশ্বস্ত করা হয়, পরিস্থিতি দ্রুত ঠিক হয়ে যাবে। গুজবে কান না-দেওয়ার অনুরোধও করা হয়। প্রথম বর্ষের এক পড়ুয়া বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাদের বাইরের কারও সঙ্গে কথা না-বলার পরামর্শ দেন। একই সঙ্গে কোনও তথ্য যাচাই না-করে তা ছড়াতেও নিষেধ করা হয়েছে।’’

দিল্লি বিস্ফোরণের পরেই উঠে এসেছে হরিয়ানার ফরিদাবাদের আল-ফালাহ্‌ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম। তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, বিস্ফোরণে অভিযুক্তদের সঙ্গে কোনও না কোনও ভাবে জড়িয়ে রয়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয়। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আর্থিক দুর্নীতি হয়েছে বলেও অভিযোগ। কেন্দ্রীয় সংস্থা ন্যাক জানিয়ে দিয়েছে, তারা কখনওই এই বিশ্ববিদ্যালয়কে স্বীকৃতি দেয়নি। ইডির সূত্র বলছে, সেই স্বীকৃতি রয়েছে দেখিয়ে পড়ুয়াদের থেকে ফি বাবদ কোটি কোটি টাকা তুলেছেন কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ, ভুয়ো স্বীকৃতি দেখাতে ভুয়ো নথি তৈরি করেও পড়ুয়াদের দেখিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়।

শুধু তা-ই নয়, দিল্লি বিস্ফোরণের সময় গাড়িতে থাকা উমর উন-নবি আল-ফালাহ্‌ বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত ছিলেন। তাঁর সহযোগী শাহিন শহিদ, মুজাম্মিস শাকিল, আদিল রাথেরও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে অভিযোগ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement