Delhi Blast

সন্ত্রাসবাদের ‘আখড়া’ নই! দাবি সেই আল-ফালাহ্‌ মেডিক্যাল কলেজের! মুজ়াম্মিল, শাহিনদের নাম জড়াতেই চিন্তায় পড়ুয়ারা

১৯৯৭ সালে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ হিসাবে আল-ফালাহ্‌-এর যাত্রা শুরু। ৭৬ একর জমির উপর গড়ে ওঠা কলেজটির সঙ্গে পরবর্তী সময়ে জুড়ে যায় মেডিক্যালও।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২৫ ১৯:০১
Share:

আল-ফালাহ্‌ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পুলিশ প্রহরা। — ফাইল চিত্র।

চিকিৎসক মুজ়াম্মিল আহমেদ এবং শাহিন শহিদ গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই আলোচনায় উঠে এসেছে হরিয়ানার ফরিদাবাদের ধৌজ গ্রামের আল-ফালাহ্‌ মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালটি! এই হাসপাতালেই কর্মরত ছিলেন মুজ়াম্মিল এবং শাহিন। পরে তদন্তে জানা যায়, শ্রীনগরে জইশ-ই-মহম্মদের সমর্থনে পোস্টার সাঁটানোর অভিযোগে ধৃত আদিল মাজ়িদ রাথরের সঙ্গেও যোগ রয়েছে আল-ফালাহ্‌ মেডিক্যাল কলেজের। আর এখান থেকেই সন্দেহ বাড়ছে, ধৃত তিন চিকিৎসকই কোনও না কোনও ভাবে জুড়ে ছিলেন ওই কলেজের সঙ্গে। স্বভাবতই তদন্তকারীদের আতশকাচের নীচে চলে এসেছে কলেজটি! তদন্তকারীদের অনুমান, ওই তিন চিকিৎসকের মগজধোলাই করা হয়েছিল। মাথার মধ্যে বুনে দেওয়া হয়েছিল সন্ত্রাসবাদের বীজ! প্রশ্ন উঠছে, এই কলেজের অন্য কোনও পড়ুয়া বা হাসপাতালের চিকিৎসককেও একই ভাবে প্রভাবিত করার চেষ্টা হয়েছে?

Advertisement

সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, মুজ়াম্মিলেরা গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই ওই কলেজের পড়ুয়া বা হাসপাতালের চিকিৎসকেরা তটস্থ হয়ে আছেন। অনেকের মনেই আতঙ্ক, তাঁদের সহপাঠী বা সহকর্মী আর কেউ এমন কাজে যুক্ত নন তো? ওই কলেজের তৃতীয় বর্ষের এমবিবিএস পড়ুয়া জানান, মুজ়াম্মিল জুনিয়র ডাক্তার হিসাবে জরুরি বিভাগে কাজ করতেন। তাই তাঁর সঙ্গে কখনওই তাঁর মতো ডাক্তারি পড়ুয়াদের যোগাযোগ হত না। মুজ়াম্মিলের গ্রেফতারির পরই তাঁর সম্পর্কে কলেজের অনেকে জানতে পারেন! শুধু মুজ়াম্মিল নন, শাহিন বা আদিলের সম্পর্কেও অবগত ছিলেন না বলেই দাবি ওই মেডিক্যাল কলেজের ডাক্তারি পড়ুয়াদের। এখন তাঁদের একটাই চিন্তা, এমবিবিএস শেষ করার পর চাকরি জোটাতে পারবেন তো? কেউ তাঁদের বিশ্বাস করবে তো?

১৯৯৭ সালে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ হিসাবে আল-ফালাহ্‌-এর যাত্রা শুরু। ৭৬ একর জমির উপর গড়ে ওঠা কলেজটির সঙ্গে পরবর্তী সময়ে জুড়ে যায় মেডিক্যালও। গড়ে ওঠে হাসপাতালও। ২০১৯ সালে আল-ফালাহ্‌ মেডিক্যাল কলেজে স্নাতক ডিগ্রি শুরু হয়। দু’বছর পর স্নাতকোত্তর ডিগ্রিও চালু হয়। ২০১৪ সাল থেকে ‘আল-ফালাহ্‌ চ্যারিটেবল ট্রাস্ট’-এর অধীনে কলেজটি পরিচালিত হয়।

Advertisement

দিল্লির জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় বা উত্তরপ্রদেশের আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের সমতুল হিসাবে গড়ে তোলার চেষ্টায় ছিল ‘আল-ফালাহ্‌ বিশ্ববিদ্যালয়’। কিন্তু ফরিদাবাদের মডিউল প্রকাশ্যে আসার পরই তদন্তের আওতায় চলে এসেছেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক, কর্মী, বর্তমান এবং প্রাক্তন পড়ুয়ারা। সেই ঘটনা নিয়ে শোরগোল পড়তেই বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে বিবৃতি জারি করা হল। তাঁরা দাবি করেছেন, ধৃত বা আটক সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও সম্পর্ক নেই। দিল্লি বিস্ফোরণ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে জানানো হয়, দুর্ভাগ্যজনক ঘটনার জন্য তারা শোকাহত এবং মর্মাহত। ভুক্তভোগীদের প্রতি সমবেদনাও জানায়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কথায়, ‘‘আমরা জেনেছি আমাদের এখানে কর্মরত দুই ডাক্তারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমরা এ ব্যাপারে স্পষ্ট করে জানাতে চাই, উক্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে কাজের বাইরে আর কোনও সম্পর্ক ছিল না।’’ বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম নষ্টের চেষ্টা চলছে বলেও অভিযোগ তোলা হয়। বিবৃতি অনুযায়ী, বেশ কিছু ক্ষেত্রে দাবি করা হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবরেটরিতে বিস্ফোরক তৈরি করা হত! এই খবর ভুল। কোনও বিস্ফোরক সংরক্ষণ বা ব্যবহার করা হয় না বিশ্ববিদ্যালয়ে, দাবি কর্তৃপক্ষের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement