Ambedkar Remarks Row

অস্ট্রেলীয় মিশনারিকে পুড়িয়ে খুনের ঘটনায় যোগ! আহত সাংসদ ষড়ঙ্গীর ইতিহাস কী

১৯৯৯ সালে ওড়িশায় অস্ট্রেলীয় মিশনারিকে হত্যার ঘটনায় নাম জড়িয়েছিল প্রতাপচন্দ্র ষড়ঙ্গীর। বৃহস্পতিবার লোকসভায় ধাক্কাধাক্কিতে তিনি চোট পেয়েছেন। রাহুলের বিরুদ্ধে আঘাতের অভিযোগ এনেছেন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৭:২৪
Share:

ওড়িশার বালেশ্বরের বিজেপি সাংসদ প্রতাপচন্দ্র ষড়ঙ্গী বৃহস্পতিবার সংসদে আহত হয়েছেন। —ফাইল চিত্র।

লোকসভায় ধাক্কাধাক্কিতে আহত হয়ে হাসপাতালে বিজেপি সাংসদ প্রতাপচন্দ্র ষড়ঙ্গী। লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে ধাক্কা দেওয়ার অভিযোগ এনেছেন তিনি, যা নিয়ে সংসদ তোলপাড়। কিন্তু কে এই ষড়ঙ্গী? ভারতের রাজনীতিতে তাঁর ইতিহাস কী?

Advertisement

ওড়িশার বালেশ্বরের বিজেপি সাংসদ ষড়ঙ্গী। দীর্ঘ দিন ধরে তিনি বিজেপির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। ১৯৫৫ সালে বালেশ্বরের গোপীনাথপুর গ্রামে তাঁর জন্ম। রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের (আরএসএস) হাত ধরে তাঁর রাজনীতিতে পদার্পণ। আরএসএসের স্বেচ্ছাসেবক ছিলেন তিনি। পরে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এবং বজরং দলের সঙ্গেও যুক্ত হয়েছেন।

ষড়ঙ্গী যখন বজরং দলের নেতা এবং রাজ্য সভাপতি ছিলেন, সেই সময়ে ওড়িশায় একটি হত্যাকাণ্ড সারা দেশে তোলপাড় ফেলে দিয়েছিল। ১৯৯৯-এর ২২ জানুয়ারির ঘটনা। অস্ট্রেলীয় খ্রিস্টান মিশনারি গ্রাহাম স্টেইনস এবং তাঁর দুই শিশুপুত্রকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছিল মনোহরপুরে। গাড়ির ভিতরে ঘুমোচ্ছিলেন তাঁরা। সেই সময়ে তাঁদের আক্রমণ করা হয়। অভিযোগ, ৫০-এর বেশি মানুষ গাড়ি ঘিরে ধরেছিলেন। গ্রাহামদের বিরুদ্ধে তাঁরা ওড়িশায় খ্রিস্টান ধর্ম প্রচার এবং জোর করে ধর্মান্তরিত করার অভিযোগ তোলেন। গ্রাহামদের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। অভিযোগ, বজরং দলের নেতৃত্বেই এই আক্রমণ সংঘটিত হয়েছিল। গ্রাহাম এবং তাঁর পুত্রেরা প্রাণ বাঁচাতে গাড়ি থেকে বেরোতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁদের বেরোতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় অভিযুক্ত হিসাবে নাম জড়িয়েছিল বজরং দলের নেতা ষড়ঙ্গীরও। তাঁর বিরুদ্ধেও খুনের মামলা রুজু হয়েছিল।

Advertisement

ঘটনার মূল অভিযুক্ত দারা সিংহকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। পরে ওড়িশা হাই কোর্ট তাঁর সাজা লাঘব করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয়। ২০১১ সালে শীর্ষ আদালতেও সেই নির্দেশ বহাল রাখে।

২০০২ সালেও বিতর্কে নাম জড়িয়েছিল ষড়ঙ্গীর। ওড়িশা বিধানসভায় হিংসার ঘটনায় তাঁকে গ্রেফতারও করা হয়েছিল। তাঁর বিরুদ্ধে সরকারি সম্পত্তি ধ্বংসের অভিযোগ উঠেছিল। পরে তিনি জামিন পান।

২০০৪ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ওড়িশার নীলগিরির বিধায়ক ছিলেন ষড়ঙ্গী। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বালেশ্বরে তাঁকে প্রার্থী করেছিল বিজেপি। কিন্তু সে বার তিনি হেরে গিয়েছিলেন। তার পর ২০১৯ সালে একই কেন্দ্র থেকে আবার ভোটে দাঁড়ান এবং বিজু জনতা দলের প্রার্থীকে ১২ হাজারেরও বেশি ভোটে পরাস্ত করেন। সেই থেকে তিনি বালেশ্বরের সাংসদ পদে রয়েছেন। ২০১৯ সালে তাঁকে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বও দেওয়া হয়।

বিআর অম্বেডকরকে নিয়ে মঙ্গলবার সংসদে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মন্তব্যে বিতর্ক শুরু হয়েছিল। বৃহস্পতিবার তা নিয়ে সংসদে ধাক্কাধাক্কি, হাতাহাতি হয়েছে। ধাক্কাধাক্কিতে পড়ে গিয়ে মাথায় চোট পেয়েছেন ষড়ঙ্গী। কংগ্রেস সাংসদ রাহুল তাঁর আঘাতের জন্য দায়ী, জানিয়েছেন ষড়ঙ্গী। তাঁর অভিযোগ, রাহুলের ধাক্কায় অন্য এক সাংসদ তাঁর ঘাড়ে এসে পড়েন। সেই কারণে তিনি পড়ে যান এবং মাথায় চোট পান। এই ঘটনায় বিজেপি থানায় যাওয়ার কথাও ভাবছে বলে জানিয়েছে। অন্য দিকে, কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে পাল্টা বিজেপির বিরুদ্ধে তাঁকে ধাক্কা এবং শারীরিক নিগ্রহের অভিযোগ তুলেছেন। তা নিয়ে স্পিকারকে চিঠিও দিয়েছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement