জাতীয় নাগরিক পঞ্জির আবেদনপত্র জমা দিতে গিয়ে হেনস্থার মুখে পড়ছেন সাধারণ মানুষ— এমনই অভিযোগ উঠল লালার মনাছড়া এলাকায়। লালা সার্কেলের মনাছড়া গ্রাম পঞ্চায়তের এনআরসি সেবাকেন্দ্রে আবেদনপত্র জমা নেওয়ার সময় ঘুষ নেওয়ার অভিযোগও উঠেছে। এলাকাবাসী জানিয়েছেন, ওই সেবাকেন্দ্রে মাঝরাত থেকেই ভিড় জড়ো হয়। কিন্তু কয়েকটি ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, আবেদনপত্র জমা দেওয়ার পর অনেকের নথি উধাও হয়ে গিয়েছে। আবেদনপত্রগুলি স্তূপের মতো পড়ে থাকছে। আগে আবেদনপত্র জমা গেওয়ার জন্য নেওয়া হচ্ছে টাকাও। তার পিছনে রয়েছে একটি সিন্ডিকেট।
মনাছড়া হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মসকন্দর আলি লস্কর জানান, এনআরসি আবেদনপত্র দাখিলের ৭ দিন পর রসিদ সংগ্রহে ওই সেবাকেন্দ্রে গিয়ে জানতে পারেন, প্রয়োজনীয় নথি জমা না দেওয়ায় তাঁর আবেদন গ্রহণ করা হবে না। আবেদনপত্রটি হাতে নিয়ে তিনি দেখেন, সেটির সঙ্গে অন্য কারও পরিচয়ের নথি জুড়ে দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে জবাবদিহি চাইলেও কোনও লাভ হয়নি। সঙ্গে সঙ্গে তিনি বিষয়টি হাইলাকান্দির এনআরসির-র ‘মাস্টার ট্রেনার’কে জানান।
মনাছড়া এনআরসি সেবাকেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, ওই প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত নন, এমন কয়েক জন কাজকর্ম তদারকি করছেন। সেবাকেন্দ্রে হাজির অনেকে অভিযোগ করেন, দিনের পর দিন তাঁরা কাজকর্ম ছেড়ে এখানে আসছেন। কিন্তু ফর্ম জমা দিতে পারছেন না। ১০০-৪০০ টাকা নিয়ে লাইনের পিছনে থাকা অনেকের ফর্ম জমা নেওয়া হচ্ছে। দালালরাই তাঁদের ফর্ম জমা করে দিচ্ছে। মনাছড়ার বাসিন্দা সইফুদ্দিন হাজাম এবং মজিবুর রহমান লস্কর বলেন, ‘‘এক সপ্তাহ আগে আবেদনপত্র জমা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখনও তা গ্রহণ করা হচ্ছে না।’’ এ বিষয়ে মনাছড়ার এলআরসিআর রঞ্জিত সিংহের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। সংশ্লিষ্ট সেবাকেন্দ্রের পঞ্চায়েত সচিব সঞ্জিব দাস অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘‘কর্মী সংখ্যা কম থাকায় কাজে দেরি হচ্ছে।’’