মন্দিরে ১৫ হাজার পুলিশ! কেরলকে ভর্ৎসনা হাইকোর্টের 

শবরীমালা মন্দিরে রবিবার গভীর রাতে বিক্ষোভের জেরে অন্তত ৮০ জনকে আটক করেছে পুলিশ। কাল রাত থেকেই ফের উত্তপ্ত কেরল। মন্দিরে পুলিশি উপস্থিতি নিয়েই ক্ষোভের সূত্রপাত। কেরালা হাইকোর্টও আজ পুলিশের বাড়াবাড়ি নিয়ে অসন্তোষ জানিয়েছে রাজ্য সরকারের কাছে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

কোচি শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:৩০
Share:

— ফাইল চিত্র।

শবরীমালা মন্দিরে রবিবার গভীর রাতে বিক্ষোভের জেরে অন্তত ৮০ জনকে আটক করেছে পুলিশ। কাল রাত থেকেই ফের উত্তপ্ত কেরল। মন্দিরে পুলিশি উপস্থিতি নিয়েই ক্ষোভের সূত্রপাত। কেরালা হাইকোর্টও আজ পুলিশের বাড়াবাড়ি নিয়ে অসন্তোষ জানিয়েছে রাজ্য সরকারের কাছে।

Advertisement

গত কাল রাতে আয়াপ্পা ভক্তদের পুলিশ যে ভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছে, তা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে হাইকোর্ট। বিচারপতি পি আর রামচন্দ্র মেনন এবং বিচারপতি এন অনিল কুমার মন্দির চত্বরে ১৫ হাজার পুলিশের উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। আদালত জানতে চেয়েছে, কোন ক্ষমতাবলে পুলিশ প্রকৃত ভক্তদের মন্দিরে প্রবেশ রুখতে গিয়েছে? এ ধরনের ঘটনা ফের ঘটলে সংশ্লিষ্ট পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়েছে হাইকোর্ট।

গত কাল রাত এগারোটা নাগাদ মন্দিরের দরজা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। পুলিশের দাবি, তখন হঠাৎই পুণ্যার্থীর বেশ কয়েক জন বিক্ষোভকারী মাথায় ইরুমুদি নিয়ে শবরীমালা মন্দিরের গর্ভগৃহের সামনে চলে আসেন। আয়াপ্পা মন্ত্র বলতে বলতেই প্রতিবাদ জানান তাঁরা। মন্দির চত্বরে পুলিশি নিয়ন্ত্রণের বিরুদ্ধে সরব হন। সারা রাতের পুলিশি প্রহরা তুলে নিতে হবে বলে হাঙ্গামা শুরু হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে ৮০ জনকে আটক করে পুলিশ। পুলিশের কাজে বাধা দেওয়া এবং হাঙ্গামা বাধানোর জন্য মামলা করা হয়েছে ২০০ জনের বিরুদ্ধে।

Advertisement

শুধু মন্দির নয়, রবিবার রাতে তিরুঅনন্তপুরমে মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের বাড়ির বাইরেও প্রতিবাদ চলেছে। পুলিশের দাবি, এরা দক্ষিণপন্থী প্রতিষ্ঠানের সদস্য। কোচি, কোঝিকোড়, মলপ্পুরম, কোল্লম, আলাপুঝা, ইদুক্কির মতো অনেক জায়গাতেই বিক্ষোভ হয়েছে। এই বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে পুলিশি সক্রিয়তার বিরুদ্ধে আবার পাল্টা প্রতিবাদ শুরু হয়েছে সোমবার থেকে। বিজেপি, যুব মোর্চা এবং তাদের অন্য শাখা সংগঠন পথে নামে বলে অভিযোগ। মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন জানিয়েছেন, বাম সরকার শবরী ভক্তদের পাশে আছে। তাঁর কথায়, ‘‘এঁরা (বিক্ষোভকারী) আয়াপ্পা ভক্ত নন। গোলমাল পাকানোর জন্যই আরএসএস-এর লোকজন মাঠে নেমেছে। শবরীমালায় কাউকে

ঝামেলা করতে দেবে না সরকার।’’

কেন্দ্রীয় পর্যটনমন্ত্রী আলফোন্স কন্ননথনম এ দিন নীলাক্কল, পাম্বা এবং সন্নিধনমে (মন্দির চত্বরে) গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন। সোমবার তিনি বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার মন্দির চত্বরটাকে রণক্ষেত্রে পরিণত করেছে। ভক্তরা কেউ জঙ্গি নয়। এমন করা হচ্ছে যেন, তারা ডাকাতি করতে এসেছে। মানুষ যেখানে নির্বিঘ্নে বাস করত, সেখানে এরা ১৪৪ ধারা জারি করেছে। শবরীমালায় ১৪৪ ধারার কী দরকার?’’

একই বক্তব্য কংগ্রেস নেতা রমেশ চেন্নিথালারও। মন্দির চত্বরে পুলিশি সক্রিয়তাকে তিনি তুলনা করেছেন অপারেশন ব্লু স্টার-এর সঙ্গে। মুখ্যমন্ত্রী বিজয়নকে আক্রমণ করে চেন্নিথালার বক্তব্য, মনে হচ্ছে যেন হিটলারের শাসনে রয়েছে এই রাজ্য। এই নেতার দাবি, কাল রাতে যাঁরা প্রতিবাদ জানিয়েছেন, তাঁরা প্রকৃত ভক্ত। বিজেপি কর্মী নয়।

এত বিক্ষোভের মধ্যে সোমবারই কান্নুরের রেশমা নিশান্ত ও অনিলা ও কোল্লমের ধন্য নামে তিন তরুণী জানান, পরিস্থিতি অনুকূল হলে তাঁরা শবরীমালা যেতে আগ্রহী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন