Odisha Triple Train Accident

করমণ্ডলে মৃত পরিযায়ী শ্রমিকের দেহ ফেরাতে ৪৫ হাজার টাকা চাইছে অ্যাম্বুল্যান্স! দিশাহীন পরিবার

বিহার থেকে কলকাতায় এসে সেখান থেকে চেন্নাই যাওয়ার ট্রেন করমণ্ডল এক্সপ্রেসে উঠেছিলেন যুবক। কাজের খোঁজে কেরলে যাচ্ছিলেন তিনি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

ভুবনেশ্বর শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০২৩ ১৯:৪৩
Share:

বালেশ্বরের বাহানগায় করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ২৮৮ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্র। ছবি: এএফপি

বাড়ি বিহারের পূর্ব চম্পারণে। সেখান থেকে মিথিলা এক্সপ্রেসে কলকাতায় এসে শুক্রবার সকালে করমণ্ডল এক্সপ্রেসে সওয়ার হয়েছিলেন রাজা পটেল। বাড়ির একমাত্র রোজগেরে তিনিই। এক বছরের বিয়ে করা স্ত্রী, ২ মাসের সন্তান আর বৃদ্ধ মা-বাবা। অভাবের সংসারে দু’বেলার দু’মুঠো খাবারের বন্দোবস্ত করতেই রাজা কাজ খুঁজতে যাচ্ছিলেন কেরলে। শুক্রবার সন্ধ্যার পর সেই যাওয়া আর হয়নি। আর এখন রাজাকে বাড়ি ফেরাতে প্রায় পথে বসেছে তাঁর পরিবার।

Advertisement

করমণ্ডল ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে রাজার। তাঁর নিথর শরীরটাকে ওড়িশা থেকে বিহারের মোতিহারিতে নিয়ে আসতে ৪৫ হাজার টাকা দাবি করেছে অ্যাম্বুল্যান্স। ওড়িশার এক সংবাদ মাধ্যমকে রাজার পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, এত টাকা দেওয়ার ক্ষমতা থাকলে রাজাকে ওই ট্রেনেই উঠত হত না। আর এখন ছেলেকে বাড়ি নিয়ে আসার জন্য টাকা জোগাড় করতে হিমসিম খাচ্ছেন তাঁরা। কেন্দ্র বা নিজেদের রাজ্যের থেকে কোনও সাহায্যই পাচ্ছেন না তাঁরা।

ওড়িশার সংবাদ মাধ্যম ওড়িশা টিভি এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। রাজার বৃদ্ধ বাবা ভুবন পটেলের সঙ্গে কথাও বলেছে বলে জানিয়েছে তারা। ভুবন বলেছেন, ‘‘পরিবারের সবার জন্য নিয়মিত খাবার জোটাতে লড়াই করতে হয় আমাদের। আশা করেছিলাম, রাজা কেরালায় পৌঁছে আমাদের টাকা পাঠালে অভাব মিটবে। কিন্তু এখন আমরা দিশাহীন। কী করব ভেবে পাচ্ছি না। অ্যাম্বুল্যান্স ওঁর দেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য ৪৫ হাজার টাকা চাইছে। এত টাকা কোথা থেকে পাব? রাজ্য বা কেন্দ্রের থেকে আমরা কোনও সাহায্য পাচ্ছি না।’’

Advertisement

ভুবন জানিয়েছেন, এক বছর আগেই বিয়ে করেছিলেন তাঁর পুত্র। ২ মাস আগে একটি সন্তানও হয়েছে। তাঁদের জন্যই কাজের খোঁজ পেয়ে ৬ বন্ধুর সঙ্গে কেরলে যাচ্ছিলেন রাজা। এই বন্ধুদের মধ্যে ৪ জনের আঘাত সামান্য। বাকি ২ জন গুরুতর জখম হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। একমাত্র রাজারই মৃত্যু হয়েছে

ওড়িশা টিভি ওই প্রতিবেদনে বিহার সরকারের একটি বক্তব্যও জানিয়েছে, ‘‘সেখানে বিহারের পূর্ব চম্পারণের জেলা শাসক সৌরভ জোরওয়াল জানিয়েছেন, ‘‘বালেশ্বরে ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত এবং আহতদের সাহায্য করার ব্যবস্থা করা হয়েছে সরকারের তরফে। তবে বিহারের বাসিন্দাদের মৃত্যু সংক্রান্ত সরকারি তথ্য এখনও আমাদের হাতে এসে পৌঁছয়নি।’’

যদিও বিহার সরকারের তরফে ইতিমধ্যেই বালেশ্বরের দুর্ঘটনাস্থলে একটি টিম পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ওড়িশা টিভি সূত্রে জানা গিয়েছে, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার তাঁর মুখ্য সচিব আমির শুভানিকে একটি প্রশাসনিক দল তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন, যে দলে জেলাশাসক স্তরের কর্তা এবং চিকিৎসকদের একটি দল রাখার কথাও বলেছেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন