Joe Biden

ভারতে বিদ্বেষের বিষ, রিপোর্ট ব্লিঙ্কেনের

এর আগে সে দেশের সরকারের অধীনস্থ আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বধীনতা সংক্রান্ত কমিটির রিপোর্টেও ভারতের সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের কথা বলা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০২১ ০৫:৪৯
Share:

—ফাইল চিত্র।

অতিমারি মোকাবিলায় জো বাইডেনের উপর যখন প্রবল ভাবে নির্ভরশীল মোদী সরকার, আমেরিকার একটি সরকারি রিপোর্ট প্রকাশ্যে এসে তীব্র অস্বস্তি তৈরি করল।

Advertisement

আমেরিকার বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে আমেরিকার কংগ্রেসকে দেওয়া এই রিপোর্টে ভারতে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর হিংসা, বৈষম্য এবং তাদের হত্যার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। কোভিড ছড়ানোর অভিযোগে মুসলমান সম্প্রদায়ের দিকে তর্জনী তোলার ঘটনাতেও উদ্বেগ ব্যক্ত হয়েছে। রিপোর্টটি প্রকাশ করেছেন বিদেশসচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। রিপোর্টে রয়েছে, আমেরিকার সংশ্লিষ্ট কর্তারা ভারতীয় কর্তাদের সঙ্গে সিএএ-সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন।

ভারত সরকারের প্রতি এমন অভিযোগ অবশ্য আমেরিকার তরফ থেকে প্রথম নয়। এর আগে সে দেশের সরকারের অধীনস্থ আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বধীনতা সংক্রান্ত কমিটির রিপোর্টেও ভারতের সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের কথা বলা হয়েছে। ভারতের পক্ষ থেকে সেই অভিযোগ খারিজ করে দাবি করা হয়েছিল, কোনও বিদেশি রাষ্ট্রের অধিকার নেই অন্য দেশের সংবিধানসম্মত অধিকার নিয়ে মন্তব্য করার।

Advertisement

আমেরিকার বর্তমান রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘(গত বছর) মার্চে দিল্লিতে তবলিগি জামাতের একটি সভাকেই প্রাথমিক ভাবে দেশে করোনা সংক্রমণের জন্য দায়ী করেছিল সরকার এবং সংবাদমাধ্যম। সেই সভায় অংশগ্রহণকারী ছ’জনের করোনা রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। প্রাথমিক ভাবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক দাবি করেছিল, দেশে করোনা আক্রান্তদের অধিকাংশেরই সেই সভার সঙ্গে যোগ আছে।’

রিপোর্টে ভারতের শাসক দলের নাম উল্লেখ করে জানানো হয়েছে যে, ওই দলের কয়েক জন সদস্য বলেছিলেন যে জামাতের সদস্যরা ‘সন্ত্রাসের মতো’ করোনা ছড়িয়েছেন। কয়েক জন রাজনীতিবিদ এবং কয়েকটি সংবাদমাধ্যম সেই ঘটনাকে ‘করোনা জেহাদ’ হিসেবেও উল্লেখ করে।

ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর ‘হামলা রুখতে’ সরকারের ব্যর্থতা নিয়ে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবীদের রিপোর্ট উত্থাপন করে আমেরিকার রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক নেতারা জনসমক্ষে প্ররোচনামূলক মন্তব্য করেন বা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন।
গো-হত্যা বা গো-মাংসের কেনাবেচার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সারা বছরই ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যদের উপর হামলা চালানো হয়। গো-রক্ষার নামে হত্যা, হামলা চলে, হুমকি দেওয়া হয়।’

গত বছর ফেব্রুয়ারিতে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে দিল্লিতে যে হিংসা ছড়িয়ে পড়েছিল, সে বিষয়টিও আমেরিকার রিপোর্টে উঠে এসেছে। সেখানে দাবি করা হয়েছে, ধর্মীয় বিদ্বেষ নিয়ে হিংসার জেরে ৫৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল। অধিকাংশই মুসলিম ছিলেন। মুসলিম সমাজকর্মী, শিক্ষাবিদ, মানবাধিকার-কর্মী, প্রাক্তন পুলিশ আধিকারিক এবং সাংবাদিকরা অভিয়োগ করেছিলেন, দিল্লি পুলিশের তদন্তেও মুসলিম-বিরোধী মনোভাব ছিল। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘মানবাধিকার-কর্মী এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলি জানিয়েছে, শাসক দল বিজেপি এবং হিন্দুত্ববাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের সদস্যরা সিএএ-বিরোধী বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে জনসমক্ষে উস্কানিমূলক মন্তব্য করেছিলেন।
কিন্তু তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও মামলা দায়ের করেনি পুলিশ।’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন