National News

ভারত-রাশিয়া অস্ত্রচুক্তির দিকে কড়া নজর, আশঙ্কায় চিন ও আমেরিকা

শুক্রবার দু’দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে এই চুক্তি নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা। এর পাশাপাশি, মহাকাশ-সহ আরও বেশ কয়েকটি বিষয়েও বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে বলে সূত্রের খবর। তবে এই মূহূর্তে ভারত চাইছে ক্ষেপণাস্ত্র চুক্তি যেন কোনও ভাবেই গতি না হারায়।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০১৮ ১৯:১৫
Share:

দু’দিনের সফরে বৃহস্পতিবার ভারতে আসছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। প্রতিরক্ষা-সহ বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি হওয়ার কথা দু’দেশের মধ্যে। পুতিনের এই সফরের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ ৩৬৬৬৭ কোটি টাকার এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র চুক্তি।

Advertisement

শুক্রবার দু’দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে এই চুক্তি নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা। এর পাশাপাশি, মহাকাশ-সহ আরও বেশ কয়েকটি বিষয়েও বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে বলে সূত্রের খবর। তবে এই মূহূর্তে ভারত চাইছে ক্ষেপণাস্ত্র চুক্তি যেন কোনও ভাবেই গতি না হারায়। ভারত যেমন এই চুক্তির বিষয়ে নিজেদের প্রচেষ্টা জারি রেখেছে, তেমনই এই চুক্তির দিকে কড়া নজর রেখেছে আমেরিকা। সঙ্গে চিন এবং পাকিস্তানও।

২০০৭ সালে রাশিয়া প্রথম সামনে আনে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থায় ৪০০ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত শত্রু ক্ষেপণাস্ত্রকে চিহ্নিত করতে পারে এবং একই সঙ্গে ৪৮টি শত্রু ক্ষেপণাস্ত্রকে ধ্বংস করে মাটিতে নামাতে পারে এস-৪০০। অত্যাধুনিক যে সব যুদ্ধবিমানকে রাডারে ধরা যায় না, তাদেরও চিহ্ণিত করতে পারে এই রুশ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী ব্যবস্থা। এই রুশ প্রযুক্তি হাতে এলে নিশ্চিত ভাবেই বেশ কয়েক ধাপ এগিয়ে যাবে ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। আর সেটাই চিন এবং পাকিস্তানের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে।

Advertisement

আরও পড়ুন: রাফাল নিয়ে জোর সওয়াল ধানোয়ার

ভারতের রুশ ক্ষেপণাস্ত্র ও প্রযুক্তি ব্যবহার নিয়ে বরাবরই নারাজ ছিল আমেরিকা। গত অগস্টেই মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের এক শীর্ষ কর্তা হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, রাশিয়ার কাছ থেকে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী ব্যবস্থা কিনলে দিল্লিকে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হতে পারে। সম্প্রতি, বিশ্ব বাজারে রুশ অস্ত্রের যোগান আটকাতে বিশেষ আইনও আনে আমেরিকা। যে সমস্ত দেশ রাশিয়ার কাছ থেকে অস্ত্র কিনবে, নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে তাদের ‘একঘরে’ করার কথাই বলা আছে এই আইনে। এই আইনের সাহায্যেই চিনের বিরুদ্ধে আর্থিক বিধিনিষেধ চাপিয়েছে আমেরিকা। রাশিয়ার কাছ থেকে সুখোই বিমান কেনার জন্যই আমেরিকার বিরাগভাজন হয়েছিল বেজিং। কিন্তু আমেরিকার হুঁশিয়ারিকে উপেক্ষা করে রাশিয়ার সঙ্গে অস্ত্রচুক্তি নিয়ে কথাবার্তা এগিয়ে নিয়ে যায় ভারত। এ নিয়ে একপ্রস্থ কথাও হয়ে যায় দু’দেশের মধ্যে।

আরও পড়ুন: ৩ রাজ্যে সঙ্গে নেই, কংগ্রেসকে ধাক্কা মায়াবতীর

এই মুহূর্তে ভারতের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক যথেষ্ট ভাল। অর্থনীতি, কূটনীতি, প্রতিরক্ষা-সহ বেশ কয়েকটি বিষয়ে আমেরিকার সঙ্গে ভারতের একটা মেলবন্ধন গড়ে উঠেছে। ২০১৯-এ দু’দেশের সেনার যৌথ মহড়া এবং প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত বেশ কিছু কার্যক্রম হওয়ার কথা রয়েছে। রাশিয়ার পর আমেরিকার কাছ থেকে ভারত প্রচুর অস্ত্র কেনে। অন্য দিকে, রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের বন্ধুত্ব দীর্ঘ দিনের। স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার হিসাবে দু’দেশ বরাবরই কাজ করে এসেছে। তাই ভারত চাইছিল এমন একটা সংযত পদক্ষেপ করতে যাতে আমেরিকাও অসন্তুষ্ট হবে না, এবং রাশিয়ার সঙ্গে অস্ত্র চুক্তিটাও হয়ে যাবে। অবশেষে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ হাজির। চিন যে ভাবে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে আমেরিকার বিরাগভাজন হয়েছে, এই চুক্তি হয়ে গেলে ভারতের বিরুদ্ধে কি কোনও কঠোর পদক্ষেপ করবে আমেরিকা সেটা দেখার বিষয় বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement