‘পদ্মাবত’ বিতর্কে করণী সেনার হুমকির মুখে জয়পুর সাহিত্য উৎসবে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন সেন্সর বোর্ডের প্রধান প্রসূন জোশী। আগামিকাল সেখানে একটি আলোচনায় যোগ দেওয়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু আজই বিবৃতি দিয়ে জোশী জানান, তাঁর কারণে অনুষ্ঠানের যাতে কোনও মর্যাদাহানি না হয়, সে জন্যই তিনি সাহিত্য উৎসবে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
সেন্সর বোর্ডের প্রধান হিসেবে ‘পদ্মাবত’ সিনেমাটিকে ছাড়পত্র দেওয়ার পরেই করণী সেনার রোষের মুখে পড়েন জোশী। ওই সংগঠনের তরফে জোশীকে জয়পুরে ঢুকতে না দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে। তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, জোশী রাজস্থানে ঢুকলেই তাঁর উপরে হামলা চালানো হবে।
জোশী বলেন, ‘‘আমি এ বার সাহিত্য ও কবিতাপ্রেমীদের সঙ্গে সময় কাটানোর সুযোগ পাব না। কিন্তু আমাকে নিয়ে কোনও ঘটনা ঘটলে উৎসবে যোগ দেওয়া সাহিত্যিক, সাধারণ মানুষ ও আয়োজকদের অস্বস্তিতে পড়তে হবে। তা যাতে না হয়, সেটা নিশ্চিত করতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’ জোশীর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে করণী সেনা প্রধান লোকেন্দ্র সিংহ কালভির মন্তব্য, ‘‘দেখে ভাল লাগছে, সেন্সর বোর্ড প্রধানের শুভবুদ্ধির উদয় হয়েছে।’’
শাসক শিবিরের ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত সেন্সর বোর্ডের প্রধান। সেই জোশী যে ভাবে ‘পদ্মাবত’ বিতর্ক নিয়ে কড়া বিবৃতি দিয়েছেন, তা তাৎপর্যপূর্ণ। অনেকেই মনে করছেন, জোশী যে ভাবে মুখ খুলেছেন, তা থেকে স্পষ্ট, বিজেপি-ঘনিষ্ঠ শিবির থেকেই এ বার প্রতিবাদের স্বর তীব্র হতে শুরু করেছে। মুখ খুলেছেন পরিচালক বিশাল ভরদ্বাজও। এক শিল্পীর দায়িত্ব কী, তা বোঝাতে তিনি বলেন, ‘‘বর্তমান সময় হল একজন শিল্পীর জন্য আদর্শ।’’ কেন তার ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, ‘‘এর আগে শত্রুপক্ষ মুখ খোলার সুযোগ দেয়নি। কিন্তু এখন সময় এসেছে। যখন ওঁরা আমাদের গলা চেপে ধরবে তখন আমরা চেঁচাব। এখন হল সেই চিৎকারের সময়।’’
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও যে ভাবে ‘পদ্মাবত’ নিয়ে বিতর্ক চলছে, তার সমালোচনা করেছেন বিশাল। জোশীও বলেছেন, ‘‘পদ্মাবত নিয়ে ভারসাম্য রক্ষা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সব নিয়ম মেনে, উপযুক্ত পরামর্শকে মাথায় রেখে, সমাজের চিন্তা ও সিনেমার প্রেক্ষাপটকে বিচার করেই ছবিটিকে শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে।’’ তাঁর মন্তব্য, ‘‘শান্তিপূর্ণ আলোচনার উপরে ভরসা রাখতে পারছি না। এটা দুঃখজনক। পরস্পরের প্রতি আস্থা ও প্রতিষ্ঠানের উপর ভরসা রাখলে বিষয়টি এত দূর এগোতো না।’’