বিজেপি দু’ধাপ এগিয়েছে, শিবসেনারও দু’ধাপ এগিয়ে জোট বজায় রাখা উচিত। মহারাষ্ট্রে জোট নিয়ে দরকষাকষিতে শিবসেনাকে এই বার্তাই দিলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ।
মহারাষ্ট্রে বিধানসভা ভোটের প্রচারে আজ কোলাপুরে গিয়েছেন অমিত। কিন্তু বিজেপির সব চেয়ে পুরনো শরিক শিবসেনার সঙ্গে আসন সমঝোতা নিয়ে আলোচনার এখনও চূড়ান্ত ফয়সালা হয়নি। লোকসভা ভোটে মোদী ঝড়ের পরে সম্প্রতি কিছু উপ-নির্বাচনে ধাক্কা খেয়েছে বিজেপি। সুযোগ বুঝে আসন সংখ্যা ও মুখ্যমন্ত্রী পদ নিয়ে চাপ বাড়িয়েছেন শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে।
বিজেপি সূত্রে খবর, রাজ ঠাকরে মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা গড়ার পর থেকেই নেতা হিসেবে নিজের ভাবমূর্তি নিয়ে সমস্যায় পড়েন উদ্ধব। বালাসাহেব ঠাকরে মারা যাওয়ার পরে সেই সমস্যা আরও প্রকট হয়। বাবার বিশাল ভাবমূর্তির ছায়া থেকে বেরনো উদ্ধবের পক্ষে বরাবরই বেশ কঠিন হয়েছে। গত লোকসভা ভোটে নরেন্দ্র মোদীর হয়ে পুরোপুরি ময়দানে নেমেছিল শিবসেনা। মোদীকে মহারাষ্ট্রে জিতিয়ে দেওয়ার পরিবর্তে উদ্ধবকে বিধানসভা ভোটে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বিজেপি। বিজেপি-র এক নেতা জানিয়েছেন, ঠিক কী ভাবে সাহায্য করা হবে তা স্পষ্ট করা হয়নি।
প্রত্যাশিত ভাবেই আগামী মহারাষ্ট্র বিধানসভা ভোটকে সেই সাহায্য পাওয়ার সময় হিসেবে দেখছে শিবসেনা। নেতা হিসেবে নিজেকে তুলে ধরতেও এই ভোটকেই ব্যবহার করতে চাইছেন উদ্ধব। তাই বেশি আসন চাওয়ার পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী পদও চেয়েছেন তিনি।
স্নায়ুর লড়াইয়ে যে বিজেপিও পিছিয়ে থাকবে না তা আজ স্পষ্ট করে দিয়েছেন অমিত। কোলাপুরে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের বিপুল অভ্যর্থনার মধ্যেই তিনি বলেন, “মহারাষ্ট্রে বিজেপির সরকার হবে। আর জোটে সমস্যা মেটাতে বিজেপি দু’ধাপ এগিয়েছে। এ বার শিবসেনারও দু’ধাপ এগিয়ে আসা উচিত।”
বিজেপি নেতারা জানাচ্ছেন, শিবসেনার সঙ্গে জোট ভেঙে গেলেও তাঁরা মুম্বইয়ের তখ্ত দখল করতে পারেন। কারণ, মহারাষ্ট্রের সব আসনে প্রার্থী দিতে পারবে না শিবসেনা। মুম্বই-পুণের বাইরে তাদের বিশেষ প্রভাব নেই। কিন্তু রাজ্যের নানা এলাকায় আরএসএসের প্রভাব থাকায় ২৮৮টি আসনেই প্রার্থী দিতে পারবে বিজেপি। এক বিজেপি নেতার কথায়, “তাতে আমরা অন্তত ১০০টি আসন জিততে পারব বলেই মনে হয়।” ওই নেতা জানাচ্ছেন, সেক্ষেত্রে শরদ পওয়ারের এনসিপি-র সঙ্গে হাত মেলানোর কথা ভাবতেই পারেন তাঁরা। সম্প্রতি কংগ্রেসের সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়েছেন শরদ। কিন্তু শিবসেনার পক্ষে এনসিপি বা কংগ্রেসের সঙ্গে জোট অসম্ভব। বিজেপি সূত্রে খবর, এ কথা শিবসেনাকে জানানো হয়েছে।
তবে বিজেপি-র অধিকাংশ নেতাই মনে করছেন, শেষ পর্যন্ত শিবসেনার সঙ্গে জোট অটুট থাকবে। দু’দলকেই কিছুটা পিছু হটতে হবে।