‘যারা দেশের বিভাজন চায়, তাদের ভয় পাওয়াই উচিত’, কাশ্মীর নিয়ে হুঁশিয়ারি অমিতের

অমিত শাহের কথায়, ‘‘রোগকে সমূলে নাশ করতে হলে যদি কড়া ওষুধের প্রয়োজন হয়, তা হলে তা দিতে হয়।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০১৯ ০২:৩০
Share:

অমিত শাহ। ফাইল চিত্র।

‘ভয় হওয়াই চাই। ভয় থাকা দরকার। বিশেষ করে যারা দেশের বিভাজন চায়, তাদের ভয় পাওয়াই উচিত।’ আজ লোকসভায় দাঁড়িয়ে এই ভাষাতেই হুঁশিয়ারি দিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বুঝিয়ে দিলেন কাশ্মীরে সন্ত্রাস দমন অভিযান এখনই থামবে না। বরং প্রয়োজনে দমননীতি বাড়ানো হবে। অমিত শাহের কথায়, ‘‘রোগকে সমূলে নাশ করতে হলে যদি কড়া ওষুধের প্রয়োজন হয়, তা হলে তা দিতে হয়।’’

Advertisement

আজ লোকসভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে প্রথম বার বক্তব্য রাখেন অমিত শাহ। বিষয় ছিল জম্মু-কাশ্মীর। সেখানে রাষ্ট্রপতি শাসনের মেয়াদ আরও ছয় মাসের জন্য বাড়ানোর পাশাপাশি জম্মু-কাশ্মীর সংরক্ষণ আইনের সংশোধন নিয়ে বলেন তিনি। এ নিয়ে বিতর্কে কাশ্মীর সমস্যার জন্য জহওরলাল নেহরুকেই দায়ী করেন শাহ। বির্তকের সময় দেশভাগ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন কংগ্রেস সাংসদ মণীশ তিওয়ারি। জবাবে অমিত বলেন, দেশভাগ করেছিল কংগ্রেস। সেই সময়ে অভিযানে নেমে প্রায় গোটা কাশ্মীর যখন ভারতের দখলে চলে এসেছে, তখন হঠাৎ যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে দেন নেহরু। যে কারণে আজও কাশ্মীরের বড় অংশ ভারতের হাতে নেই। বল্লভভাইয়ের হাতে দায়িত্ব থাকলে আজ ছবিটি অন্য রকম হত।

স্বাধীনতার ৭৫ বছর তথা মোদী সরকারের দ্বিতীয় পর্বে বিজেপি কাশ্মীর সমস্যার সমাধানে চাপ বাড়াচ্ছে। এ নিয়ে সঙ্ঘেরও চাপ রয়েছে। বিজেপি শিবিরের একাংশের বক্তব্য, বল্লভভাইয়ের ধাঁচে ওই সমস্যা কড়া হাতে দমন করতে পারেন একমাত্র অমিত। আজ শরিক শিবসেনার সাংসদ রাহুল শেওয়ালে বলেই দেন, ‘‘অমিত শাহের সঙ্গে বল্লভভাইয়ের সাদৃশ্য রয়েছে। আশা করব, তাঁর শাসনে কাশ্মীর সমস্যার সমাধান হবে।’’

Advertisement

কাশ্মীরের জন্য বিশেষ মর্যাদা সংক্রান্ত সংবিধানের ধারা ৩৭০ বিলোপ করার দাবি তোলে শিবসেনা। বিজেপির নির্বাচনী ইস্তাহারেও ওই দাবি থাকার উল্লেখ করে এ নিয়ে শাসক শিবিরের পরিকল্পনা জানতে চান বিজেডি সাংসদ ভর্তৃহরি মহতাব। ওই ধারা বিলোপ হলে কাশ্মীরের মানুষ নয়াদিল্লির উপর আস্থা হারাবে বলে সরব হন কাশ্মীরের অনন্তনাগের এন সি-এর সাংসদ হাসান মাসুদি। জবাবে অমিত বলেন, ‘‘ভুলে যাবেন না, ৩৭০ সংবিধানের একটি অস্থায়ী ধারা। কিন্তু অধিকাংশ দলই রাজনৈতিক স্বার্থে অস্থায়ী শব্দটি ভুলে যান।’’ শাহ এ নিয়ে অতিরিক্ত বাক্যব্যয় না করলেও বিজেপি সূত্র বলছে রাজ্যসভায় দল সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেই এ নিয়ে এগানোর বিষয়ে ভাবনা রয়েছে দলের মধ্যে।

সদ্য গত কাল দু’দিনের কাশ্মীর সফর সেরে ফিরেছেন অমিত। সেই অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে আজ সংসদে তিনি বলেন, ‘‘পাক-প্রেরিত
সন্ত্রাসবাদ এখনও সমস্যা ওই রাজ্যে। যা রুখতে সরকার বদ্ধপরিকর। তাই এখন সীমান্ত পেরিয়ে সন্ত্রাসের আঁতুড়ঘরে হামলা করা হচ্ছে।’’ সন্ত্রাসবাদ শেষ করতে অমিতের দাওয়াই, ‘‘যারা দেশকে ভাঙতে চায়, তাদের মনে ভয়ের সৃষ্টি হওয়া প্রয়োজন। কারণ আমরা টুকড়ে টুকড়ে গ্যাং-এর সদস্য নই। যারা বিভাজন চায়, তাদের ভয় পাওয়াই উচিত। ওই ভয় আরও বাড়বে!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন