অমিত শাহ বুঝিয়ে দিয়েছেন, অমেঠির কংগ্রেসি দুর্গ ধূলিসাৎ করাই তাঁর লক্ষ্য। ছবি: পিটিআই।
২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে জয়ের ব্যবধান ছিল ৪ লক্ষের কাছাকাছি। ২০১৪-য় তা কমে দাঁড়ায় ১ লক্ষ ৭ হাজারে। আর চলতি বছরের গোড়ায় উত্তরপ্রদেশে হওয়া বিধানসভা নির্বাচনে অমেঠি লোকসভা কেন্দ্রের অধীনস্থ পাঁচটি বিধানসভা কেন্দ্রের সব ক’টিতেই হার। সহ-সভাপতি থেকে সভাপতি হয়ে যখন কংগ্রেসের সর্বময় কর্তৃত্ব হাতে নেওয়ার পথে রাহুল গাঁধী, তখন তাঁর নিজের নির্বাচনী ক্ষেত্রেই কংগ্রেসের হাল এই রকম। এমন সুযোগ কিছুতেই হাতছাড়া করতে নারাজ বিজেপি। পরবর্তী লোকসভা নির্বাচনের আগে অমেঠিতেই রাহুলের পায়ের তলা র মাটি কেড়ে নিতে চায় গেরুয়া শিবির। তাই অমিত শাহ, যোগী আদিত্যনাথ এবং স্মৃতি ইরানি তাই একসঙ্গে হাজির হলেন রাহুল গাঁধীর নির্বাচনী ক্ষেত্রে। কটাক্ষে, ব্যঙ্গে তীব্র আক্রমণ করলেন নেহরু-গাঁধী পরিবারকে।
‘রাহুল বাবা’— বিজেপি সভাপতি এ দিন বার বার এই নামেই সম্বোধন করেছেন কংগ্রেস সহ-সভাপতিকে। দশকের পর দশক ধরে অমেঠি ভোট দিয়ে আসছে নেহরু-গাঁধী পরিবারকে। অমেঠির জন্য কী উন্নয়ন করেছে ওই পরিবার? প্রশ্ন অমিত শাহের। অমেঠির জনসভায় অমিত শাহ এ দিন বলেন, ‘‘আমি রাহুল বাবাকে জিজ্ঞাসা করতে চাই, এত দীর্ঘ সময় ধরে আপনি অমেঠির সাংসদ, ...অমেঠিতে এখনও জেলাশাসকের দফতর নেই কেন, যক্ষ্মার চিকিৎসার জন্য কোনও হাসপাতাল নেই কেন, এফএম রেডিও স্টেশন নেই কেন, মানুষে কর্মসংস্থান নেই কেন?’’ অমেঠিতে এ দিন ২১টি প্রকল্পের সূচনা করেন অমিত-যোগী-স্মৃতি। সেই সব প্রকল্পের তালিকা তুলে ধলেই অমিত শাহ প্রশ্ন তোলেন, এত দিন এ সব হয়নি কেন? স্বাধীনতার পর থেকে প্রায় পুরো সময়টাই নেহরু-গাঁধী পরিবারের প্রতি আনুগত্য দেখানো সত্ত্বেও অমেঠির যে উন্নয়ন হয়নি, সেই উন্নয়ন এ বার মোদী-যোগীর হাত ধরে হবে বলে বিজেপি সভাপতি এ দিন আশ্বাস দেন।
কয়েক দিন আগেই অমেঠি সফর সেরে এসেছেন রাহুল। অমিত শাহ অমেঠি যাচ্ছেন জেনে ভয় পেয়েছেন রাহুল, তাই তড়িঘড়ি জনসংযোগে গিয়েছিলেন। বিজেপির দাবি এমনই। ছবি: পিটিআই।
দিন কয়েক আগেই অমেঠি সফরে গিয়েছিলেন রাহুল গাঁধী। নিজের নির্বাচনী ক্ষেত্রে জনসংযোগই ছিল রাহুলের সফরের আসল লক্ষ্য। সেখানে গিয়ে রাহুল বিজেপিকে তীব্র আক্রমণও করেন। অমেঠির মানুষ রাহুল গাঁধীকে ভোট দিয়েছেন বলে বিজেপি-র সরকার উন্নয়নের প্রশ্নে অমেঠির সঙ্গে বিমাতৃসুলভ আচরণ করছে বলে রাহুল অভিযোগ করেন। অমিত শাহ এ দিন সেই আক্রমণের জবাব দিয়েছেন। তাঁর দাবি, ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসার পর থেকে ১০৬টি জনকল্যাণমূলক প্রকল্পের সূচনা করেছেন। ‘‘রাহুল বাবা কি সে সব দেখতে পাচ্ছেন না?’’ প্রশ্ন বিজেপি সভাপতির। তার পরেই অমিত শাহের শ্লেষ, ‘‘রাহুল বাবা সম্ভবত ১০৬ পর্যন্ত গুণতেও পারেন না।’’
আরও পড়ুন: অযোধ্যায় রামের বিশাল মূর্তি গড়ার পথে যোগী আদিত্যনাথ
আরও পড়ুন: ‘চৌকিদার’ মোদীই বিদ্ধ রাহুলে
কেন্দ্রে এবং রাজ্যে এখন বিজেপির সরকার, তাই উত্তরপ্রদেশের উন্নয়ন এ বার অত্যন্ত দ্রুত গতিতে হবে বলে অমিত শাহ এ দিন আশ্বাস দেন। গুজরাত মডেলে উন্নয়ন হবে উত্তরপ্রদেশে, জানান তিনি। অমেঠির জনতাকে অমিত শাহের বার্তা, প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে নয়, উন্নয়নের ভিত্তিতে পরের বার ভোট চাইতে আসবে বিজেপি। বিজেপি সভাপতির কথায়, ‘‘উন্নয়নের নেহরু-গাঁধী মডেলের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদী মডেলের তুলনা করুন, তার পর নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিন।’’