রথ দেখা, কলা বেচা।
ব্র্যান্ড মোদীতে শান দেওয়াও হবে। আবার সংগঠনেও জোর দেওয়া যাবে।
এমনই এক দ্বিমুখী কৌশল নিয়ে বিজেপিতে নতুন প্রস্তাব নিয়ে এসেছেন সভাপতি অমিত শাহ। ফি-মাসে শেষ রবিবার সকাল এগারোটায় রেডিওতে ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠান করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নানা বিষয়ে বলেন ‘মনের কথা’। অমিত শাহের নতুন দাওয়াই, এ বার বিজেপি কর্মীদের বুথ স্তরে একসঙ্গে বসে রেডিওতে মোদীর ‘মনের কথা’ শুনতে হবে। তার পরে বুথ কমিটির বৈঠকও করতে হবে। মোদী জনতাকে কী কী করার পরামর্শ দিলেন, তা শুনে নিয়ে সেই কাজে মানুষকে সামিল করতে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। যেমন গত কালই, রেডিওতে প্রধানমন্ত্রী যোগ উৎসবের কথা মাথায় রেখে একই পরিবারের তিন প্রজন্মের যোগাভ্যাসের ছবি মোদী অ্যাপে পাঠাতে বলেছেন। এখন নিজেদের পরিবারে তো বটেই, ঘরে ঘরে গিয়ে এই ছবি তুলে পাঠানোর জন্যও সকলকে উৎসাহ দিতে হবে বিজেপি কর্মীদের।
আরও পড়ুন: ফলের আশা না-করেই অনন্য ফল
সরকার তিন বছর পূর্ণ হওয়ার পরে এখন আগামী পাঁচ বছরের কাজের রোডম্যাপ তৈরি করছেন মোদী। সে জন্য বিভিন্ন প্রকল্পে আরও বেশি সংখ্যায় মানুষকে জুড়তে চাইছে সরকার। এর রাজনৈতিক লক্ষ্য হল, মানুষকে ‘অরাজনৈতিক’ কাজের মাধ্যমে সঙ্গে টানা। বিজেপি সূত্রের মতে, আগামী দিনে ‘মন কি বাত’-এ ‘অরাজনৈতিক’ বিভিন্ন কাজের কথা আরও বেশি করে বলবেন প্রধানমন্ত্রী। আর তাঁর সেনাপতি একে কাজে লাগিয়ে মানুষের কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা করবেন। তবে বিজেপির এই রেডিও-রাজনীতি নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছে কংগ্রেস। প্রাক্তন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী মণীশ তিওয়ারির মন্তব্য, ‘‘রেডিওকে দলের স্বার্থে ব্যবহার করা উচিত নয়। এটা সরকারি প্রচার মাধ্যম। আর বিজেপি নেতা হিসেবে নয়, প্রধানমন্ত্রী হিসেবেই ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠান করছেন নরেন্দ্র মোদী।’’
বিজেপির এক শীর্ষ নেতা অবশ্য জানিয়েছেন, গত কাল দিল্লির দলিত বস্তিতে গিয়ে ‘মন কি বাত’ শোনার সময়েই নতুন পরিকল্পনা নিয়েছেন অমিত শাহ। কারণ, সেখানে তখন অনেকে হাজির হয়েছিলেন। বিজেপি সভাপতির মতে, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে দলের কর্মী, স্থানীয় নেতারা যদি রেডিও শোনার জন্য একজোট হন, তা হলে তাঁরা বুথ কমিটির বৈঠকও সেরে ফেলতে পারবেন। এখন বুথগুলিতে নিজেদের জমি শক্ত করতেই জোর দিচ্ছেন অমিত শাহ। কর্মীদের চাঙ্গা করতে নিজেও ঘুরছেন বুথে-বুথে। রেডিও দেশের কোণায় কোণায় শোনা যায়। ফলে একে ঠিকমতো কাজে লাগিয়ে মানুষকে একজোট করতে পারলে ব্র্যান্ড-মোদীতেও শান দেওয়া যাবে।