অমিত-সহযোগী তরুণকে বিজেপির ভার উত্তরপ্রদেশে

লোকসভা ভোটে উত্তরপ্রদেশ জয়ে নরেন্দ্র মোদীর তুরুপের তাস ছিলেন অমিত শাহ। ৮০-র মধ্যে ৭৩টি আসন বিজেপির ঝুলিতে তুলে দিয়ে গুরুর মুখ রেখেছিলেন শিষ্য। সাফল্যের পুরস্কার হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ এই নেতাকেই দলের সভাপতি পদে বসিয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। সেই সঙ্গে ২০১৭ সালে উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে এক তরুণ ছাত্র-নেতার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে যাবতীয় সাংগঠনিক দায়িত্ব। তাঁর নাম সুনীল বনসল।

Advertisement

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০১৪ ০৪:২৬
Share:

সুনীল বনসল।

লোকসভা ভোটে উত্তরপ্রদেশ জয়ে নরেন্দ্র মোদীর তুরুপের তাস ছিলেন অমিত শাহ। ৮০-র মধ্যে ৭৩টি আসন বিজেপির ঝুলিতে তুলে দিয়ে গুরুর মুখ রেখেছিলেন শিষ্য। সাফল্যের পুরস্কার হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ এই নেতাকেই দলের সভাপতি পদে বসিয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। সেই সঙ্গে ২০১৭ সালে উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে এক তরুণ ছাত্র-নেতার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে যাবতীয় সাংগঠনিক দায়িত্ব। তাঁর নাম সুনীল বনসল।

Advertisement

কে তিনি?

আরএসএস-এর ছাত্র সংগঠন ‘অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ’ বা এবিভিপি-র সাধারণ সম্পাদক ছিলেন সুনীল। তালিম দিতে গত জানুয়ারিতে অমিত শাহের সহযোগী করে তাঁকে পাঠানো হয়েছিল লখনউয়ে। দিল্লির উপকণ্ঠে গত ১২-১৩ জুন সমস্ত রাজ্যের সংগঠন-সম্পাদকদের (যাঁরা সকলেই আরএসএসের প্রচারক হিসেবে বিজেপিতে রয়েছেন) এক বিশেষ বৈঠকে ডাকা হয়। সেখানেই সুনীলকে উত্তরপ্রদেশের সংগঠন-সম্পাদকের দায়িত্ব দেন তৎকালীন সভাপতি রাজনাথ সিংহ। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সঙ্ঘের অন্যতম সহ-সম্পাদক সুরেশ সোনি। বিজেপি-র সাংগাঠনিক কাঠামোয় রাজ্যের ক্ষেত্রেও সভাপতি হলেন প্রধান। কিন্তু সুনীলকে সংগঠন-সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হলেও উত্তরপ্রদেশে তিনিই যে ‘শেষ কথা’ বলবেন, তা বুঝিয়ে দিয়েছেন শীর্ষ নেতৃত্ব।

Advertisement

জয়পুরের কোর্টপুতলি নামে এক অখ্যাত জনপদ থেকে উঠে এসেছেন সুনীল। পরে রাজস্থান বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর এবং আইন পড়ার সময় থেকেই এবিভিপি-তে যুক্ত হন। ১৯৯১ সালে আরএসএস-এর প্রচারক হন। সেখান থেকেই সরাসরি এবিভিপি-র দায়িত্বে। দলের দাবি, সুনীল ছাত্র সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক থাকাকালীনই দেশের সবচেয়ে বেশি সংখ্যক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ দখল করেছিল এবিভিপি।

উত্তরপ্রদেশ বিজেপির এক নেতা জানাচ্ছেন, অমিত শাহ প্রচারের সামনে থাকলেও উত্তরপ্রদেশে সাফল্যের নেপথ্যে ছাত্র-নেতা সুনীলের ভূমিকাও উল্লেখযোগ্য ছিল। তাঁর কৌশল এবং অমিত শাহের মস্তিষ্কের জোরেই বিজেপি লোকসভা ভোটের নিরিখে এখন ওই রাজ্যে ৪০৩টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ৩২৭টি-তে এগিয়ে রয়েছে।

নতুন দায়িত্ব পেয়ে লখনউ থেকে ফোনে সুনীল বললেন, “বড় দায়িত্ব। আগামী তিন বছর অখিলেশ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করার পাশাপাশি ভোটের প্রস্তুতিও শুরু করে দিতে হবে।” বিধানসভা ভোটের জন্য দল কী ভাবে প্রস্তুত হচ্ছে? সুনীল জানান, রাজ্যের প্রতিটি বুথে আগামী দু’মাসের মধ্যে নির্বাচন কমিটি তৈরি করা হবে। প্রতিটি বুথে সামাজিক বিন্যাস মাথায় রেখে নেতৃত্ব তৈরি করা হবে। সুনীল জানালেন, সামাজিক বিন্যাস বজায় রাখা বলতে তাঁরা বোঝাচ্ছেন উত্তরপ্রদেশের চিরাচরিত জাতপাতের রাজনীতি ভাঙার কথা। রাজ্যে প্রায় ৬০% তফসিলি জাতি-উপজাতি এবং ওবিসি ভোট রয়েছে। এদের সবাইকে পাশে চায় বিজেপি জানালেন লখনউয়ের নয়া ‘প্রভারী’।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন