(বাঁ দিক থেকে) মহম্মদ সাহাবুদ্দিন, লালুপ্রসাদ, অমিত শাহ এবং ওসামা শাহাব। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
সিওয়ানের প্রয়াত বাহুবলী প্রাক্তন সাংসদ মহম্মদ সাহাবুদ্দিনের পুত্রকে বিধানসভা নির্বাচনে টিকিট দেওয়ায় আরজেডি প্রধান লালুপ্রসাদকে নিশানা করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেই সঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘লালুর ১৫ বছরের জঙ্গলরাজ বিহারকে ৫০ বছর পিছিয়ে দিয়েছে।’’
ভোটের বিহারে তিন দিনের সফরে পৌঁছে শুক্রবার সারণে বিজেপি এবং সহযোগী দলগুলির প্রার্থীদের সমর্থনে জনসভা করেন শাহ। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘আরজেডি যদি এমন প্রার্থীদের ভোটে দাঁড় করায়, তা হলে বিহারবাসীর নিরাপত্তা কোথায় সেটা ভেবে দেখুন।’’ সেই সঙ্গে তাঁর দাবি, মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার গত ২০ বছরে বিহারকে ‘জঙ্গলরাজ’ থেকে মুক্ত করেছেন।
এ বার বিহারের বিধানসভা ভোটে সিওয়ান জেলার রঘুনাথপুর কেন্দ্র থেকে ওসামা শাহাবকে প্রার্থী করেছে আরজেডি। তিনি একদা ‘সিওয়ানের ত্রাস’ হিসেবে পরিচিত সাহাবুদ্দিনের পুত্র। নিজের প্রভাব খাটিয়ে ১৯৯৬ থেকে ২০০৪ পর্যন্ত টানা চারটি লোকসভা ভোটে সিওয়ান থেকে জিতেছিলেন সাহাবুদ্দিন। খুন, অপহরণ, জমি দখল-সহ অন্তত ৩৬টি অভিযোগে মামলা চলছিল তাঁর বিরুদ্ধে। তার মধ্যে অন্যতম ছিল জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সভাপতি চন্দ্রশেখর প্রসাদ এবং সাংবাদিক রাজদেও রঞ্জনকে খুন। সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে বার বার বিরোধীদের সমালোচনার মুখে পড়েছেন লালু। কিন্তু সিওয়ানের ঘাঁটি ধরে রাখতে তাঁর উপরেই ভরসা রেখেছেন।
২০০৯ সালের লোকসভা ভোটে হারের পরে একের পর এক মামলার শুনানিতে চাপে পড়েছিলেন ওই দাপুটে নেতা। এর পরে একটি জোড়া খুনের মামলায় যাবজ্জীবন সাজা হয় তাঁর। দিল্লির তিহাড় জেলে থাকাকালীনই ২০২১ সালে করোনা সংক্রমণে মৃত্যু হয় সাহাবুদ্দিনের। তবে সাহাবুদ্দিনের যাবজ্জীবন হওয়ার পরে তাঁর পরিবারের থেকে দূরত্ব বাড়াতে থাকেন আরজেডি নেতৃত্ব। গত বছরের লোকসভা ভোটে বিস্তর দরবার করেও টিকিট পাননি সাহাবুদ্দিনের স্ত্রী হেনা বা তাঁর পুত্র ওসামা। লালু-তেজস্বী টিকিট না দেওয়ায় নির্দল প্রার্থী হিসেবে লড়েছিলেন হেনা। প্রায় তিনি লক্ষ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন তিনি। আরজেডির প্রার্থী দু’লক্ষ ভোটও পাননি। এর পরেই গত বছরের অক্টোবরে লালুর উদ্যোগে আরজেডি-তে ফেরেন হেনা এবং ওসামা।