অমিতের সফরে ক্ষোভ নাগরিকত্ব বিলের বিরুদ্ধে 

নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল সংসদে পেশ করার আগে-পরে নেডা জোটের শরিক হয়েও তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা এমএনএফ প্রধান জোরামথাঙ্গা। নেডা এবং এনডিএ ছাড়ারও হুমকি দেন। সে বার রাজ্যসভায় বিল পেশ হয়নি, কিন্তু এখন পরিস্থিতি ভিন্ন। গরিষ্ঠতা না-থাকা সত্ত্বেও তারা রাজ্যসভায় ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের মতো কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিল পাশ করিয়ে নিতে পেরেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০১৯ ০১:০৩
Share:

অমিত শাহ। ফাইল চিত্র

কেন্দ্রের বিজেপি সরকার মিজোরামের উন্নয়নে আগের জমানার চেয়ে ঢের বেশি সক্রিয় বলে অমিত শাহ দাবি করলেও, সে রাজ্যে গিয়ে আজ জায়গায় জায়গায় বিক্ষোভের মুখে পড়লেন তিনি।

Advertisement

নাগরিকত্ব আইন সংশোধনের চেষ্টা বন্ধ করার দাবিতে উত্তাল মিজোরামে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহের এই সফর বয়কট করার ডাক দিয়ে রেখেছিল বিভিন্ন সংগঠন। এ দিন বিমানবন্দর থেকে শুরু করে শহরের বিভিন্ন রাস্তায় বিল ও কেন্দ্র বিরোধী পোস্টার-ব্যানার উঁচিয়ে বিক্ষোভ দেখানো হয়। লেখা ছিল ‘সংশোধনী বিল উত্তর-পূর্বের পক্ষে আত্মহত্যার সামিল’, ‘আমাদের রাজ্যে কোনও গোপন অভিসন্ধি খাটবে না’, ‘হিন্দুত্ব চাপাতে গেলে স্বাধীনতা দাও’, ‘এই সরকার ইংরেজ শাসকদের মতোই স্বেচ্ছাচারী’।

ফলে কড়া পুলিশ পাহারায় শাহকে জারকাওটে মিজো হাইস্কুলের মাঠে সভাস্থলে আনা হয়। সঙ্গে ছিলেন উত্তর-পূর্ব বিকাশ মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ ও নেডা জোটের চেয়ারম্যান হিমন্তবিশ্ব শর্মা। উত্তর-পূর্ব পরিষদ আয়োজিত উত্তর-পূর্ব হস্ততাঁত ও হস্তশিল্প প্রদর্শনীর উদ্বোধন করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘‘ইউপিএ আমলের তুলনায় বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার মিজোরামে উন্নয়ন প্রকল্পের সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি বাড়িয়েছে।’’ তাঁর মতে, ‘‘বাঁশ চাষে রাজ্যের প্রভূত সম্ভাবনা রয়েছে। হস্তশিল্পের মাধ্যমেই মিজোরাম স্বনির্ভর হতে পারে। মুখ্যমন্ত্রী জোরামথাঙ্গা ও রাজ্যের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলির সঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ দিন আলাদা ভাবে বৈঠক করেন। মুখ্যমন্ত্রীকে কেন্দ্রের তরফে উন্নয়নের ক্ষেত্রে সব ধরনের সুবিধার আশ্বাস দেন শাহ।

Advertisement

নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল সংসদে পেশ করার আগে-পরে নেডা জোটের শরিক হয়েও তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা এমএনএফ প্রধান জোরামথাঙ্গা। নেডা এবং এনডিএ ছাড়ারও হুমকি দেন। সে বার রাজ্যসভায় বিল পেশ হয়নি, কিন্তু এখন পরিস্থিতি ভিন্ন। গরিষ্ঠতা না-থাকা সত্ত্বেও তারা রাজ্যসভায় ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের মতো কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিল পাশ করিয়ে নিতে পেরেছে। কিন্তু নাগরিকত্ব বিল নিয়ে এগোতে হলে এনপিপি, অগপ, এমএনএফের মতো উত্তর-পূর্বের শরিক দলগুলির হাত ছাড়তে হতে পারে বিজেপিকে। বিভিন্ন সংগঠন আজ শাহকে স্মারকলিপি দিয়ে দাবি জানায়, বিলের আওতা থেকে যেন মিজোরামকে বাদ রাখা হয়। শাহ মুখ্যমন্ত্রী ও অন্যান্য বিল-বিরোধী সংগঠনকে বোঝান, ওই বিল থেকে এখানকার মানুষদের অধিকার খর্ব হওয়া বা নতুন করে অনুপ্রবেশের কোনও আশঙ্কা নেই। বরং বিলে ভিত্তিবর্ষ বেঁধে দেওয়া হচ্ছে। সকলের মত নিয়েই এগোনো হবে। মুখ্যমন্ত্রী জোরামথাঙ্গা বৈঠকের পরে জানান, মিজোরামের মানুষের প্রয়োজনের কথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেছি। তিনি রাজ্যের আর্থ-সামাজিক বিকাশের জন্য খুবই আগ্রহী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন