বিরোধী জোট নিয়ে মমতার সুরেই নায়ডু

বিজয়ওয়াড়ায় নিজের অস্থায়ী দফতরে বসে প্রশ্ন শুনে মিটিমিটি হাসছেন অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ড়ু। মোদী-বিরোধী জোটের নেতা কে হতে পারেন, সেই প্রশ্ন করা হয়েছিল তাঁকে। হাসতে হাসতেই নায়ডু বললেন, ‘‘নাম চূড়ান্ত করে শুরুতেই খেলা ভেস্তে দিতে চান কেন বলুন তো? আগে বিরোধী জোটকে জিততে দিন। নেতা নিজে নিজেই ঠিক হয়ে যাবে। অতীতেও জনতা সরকার, ইউনাইটেড ফ্রন্ট বা ইউপিএ-তে তাই হয়েছে। এ বারও তাই হবে।’’

Advertisement

অনমিত্র সেনগুপ্ত

বিজয়ওয়াড়া শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:১৫
Share:

চন্দ্রবাবু নায়ড়ু। ফাইল চিত্র।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? রাহুল গাঁধী? তিনি নিজে?

Advertisement

তা-ও মুখে কুলুপ। বিজয়ওয়াড়ায় নিজের অস্থায়ী দফতরে বসে প্রশ্ন শুনে মিটিমিটি হাসছেন অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ড়ু। মোদী-বিরোধী জোটের নেতা কে হতে পারেন, সেই প্রশ্ন করা হয়েছিল তাঁকে। হাসতে হাসতেই নায়ডু বললেন, ‘‘নাম চূড়ান্ত করে শুরুতেই খেলা ভেস্তে দিতে চান কেন বলুন তো? আগে বিরোধী জোটকে জিততে দিন। নেতা নিজে নিজেই ঠিক হয়ে যাবে। অতীতেও জনতা সরকার, ইউনাইটেড ফ্রন্ট বা ইউপিএ-তে তাই হয়েছে। এ বারও তাই হবে।’’

বিরোধী জোট জিতলে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিতে আপনি দিল্লি যেতে প্রস্তুত?

Advertisement

অন্ধ্রের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী নায়ড়ু ১৯৯৫ সালে যখন প্রথম বার মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন, তখন বর্তমান মোদী-বিরোধী জোটের নেতাদের অনেকে রাজনীতিতেই আসেননি। প্রশ্ন শুনে নায়ডু বলেন, ‘‘আমি অন্ধ্রেই বেশ ভাল আছি। তবে দেশের প্রতি আমার দায়িত্ব রয়েছে। তাই প্রধানমন্ত্রী পদে প্রার্থী হওয়ার চেয়ে বিরোধী জোটকে দিশা দেখানোই আমার লক্ষ্য।’’ তবে একেবারেই যে দিল্লি যাবেন না, সে কথাও বলছেন না নায়ডু। তিনি মনে করেন, ‘‘সহমতের ভিত্তিতে যে নাম উঠে আসবে তিনিই প্রধানমন্ত্রী হবেন।’’ আর সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে মমতা-সহ নানা নাম ওঠায় তাঁর জবাব, ‘‘এক সঙ্গে অনেক কাজ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী কে হবেন

তা সেই সময়ের পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করবে। যে কেউই প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন।’’

এ বিষয়ে নায়ডুর সঙ্গে অনেকাংশেই একমত তৃণমূল নেত্রী। তাঁরও বক্তব্য— নিজের নিজের রাজ্যে বিজেপিকে হারানোটাই সব ধর্মনিরপেক্ষ দলের লক্ষ্য হওয়া উচিত। তার পরে ভোটের পরে আলোচনার ভিত্তিতে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করা হবে।

বঞ্চনার প্রতিবাদে মাস কয়েক হল এনডিএ জোট থেকে বেরিয়ে এসেছে তাঁর দল। ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদী অন্ধ্রপ্রদেশের জন্য বিশেষ প্যাকেজের ঘোষণা করেও শেষ পর্যন্ত যে ভাবে পিছিয়ে এসেছেন, তাতে ক্ষুব্ধ নায়ডু। প্রতিবাদে সংসদে শাসক দলের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবও আনে টিডিপি। রাজনৈতিক জীবনে গত চল্লিশ বছরের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে নায়ডুর মন্তব্য, ‘‘অন্ধ্রপ্রদেশের সঙ্গে বঞ্চনা তো হয়েছেই। কিন্তু দেশের পরিস্থিতি আগে কখনও এতটা খারাপ হয়নি। সরকার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ। তাই আমজনতা বিকল্প খুঁজছে।’’

নায়ডু ওই কথা বললেও, বিরোধী জগন্মোহন বা বিজেপি শিবিরের প্রশ্ন— তা হলে ২০১৪-য় কেন মোদীর সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলেন তিনি? নায়ডুর যুক্তি, ‘‘আরও পাঁচ জন দেশবাসীর মতো আমিও প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনেক কিছু আশা করেছিলাম। প্রতিশ্রুতি দেওয়া এক, আর তা রূপায়ণ করা ভিন্ন।’’ চন্দ্রবাবুর দাবি, সেখানেই মোদী সরকার ব্যর্থ। আর যে ভাবে পেট্রোপণ্য ও ডলারের দাম বাড়ছে, মানুষের চাকরি যাচ্ছে, কৃষকেরা পথে নামছে— তা থেকে একটি ছবিই স্পষ্ট হচ্ছে, দেশের অর্থনীতি দুর্বল হয়ে পড়েছে। নোট বাতিলে অর্থনীতি যে গাড্ডায় পড়েছে, তা থেকে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না। নায়ডু বলেন— মানুষ ওই বিশ্বাসঘাতকতার জবাব দেবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন