অন্তরার সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হয়েছিল, তবে খুন করিনি, দাবি সন্তোষের

অন্তরা দাস খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত যুবকের উপরেই সন্দেহ বাড়ছে পুণের পুলিশের। তদন্তকারীদের দাবি, অন্তরার পরিচিত সন্তোষ কুমার নামে ওই যুবককে দু’দিন ধরে দফায় দফায় জেরা করা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০১৬ ০২:৩২
Share:

অন্তরা দাস খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত যুবকের উপরেই সন্দেহ বাড়ছে পুণের পুলিশের। তদন্তকারীদের দাবি, অন্তরার পরিচিত সন্তোষ কুমার নামে ওই যুবককে দু’দিন ধরে দফায় দফায় জেরা করা হয়েছে। তাঁর কথাবার্তায় বেশ কিছু অসঙ্গতিও মিলেছে। তবে তিনিই যে খুনী, তা নিশ্চিত করে বলতে পারছে না পুলিশ। সন্তোষ খুনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

Advertisement

তদন্তকারীদের কাছে সন্তোষের দাবি, ঘটনার দিন তিনি বেঙ্গালুরুতেই ছিলেন। দাবি ঠিক কি না, সন্তোষের মোবাইল ফোনের টাওয়ারের অবস্থান দেখে তা নিশ্চিত হতে চাইছে পুলিশ। এক পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘পরিচয় লুকিয়ে বিমানে আসা মুশকিল। তাই রেলপথে বা বাসে সন্তোষ এসেছিল কি না, তা দেখা হচ্ছে।’’ তালবাড়ের আশপাশের সব এলাকার সিসিটিভির ফুটেজও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ইতিমধ্যেই অন্তরার বন্ধু ও অফিসে গিয়ে কথা বলেছেন তদন্তকারীরা।

পুণে গ্রামীণ পুলিশ সূত্রের খবর, অন্তরার সঙ্গে বন্ধুত্বের কথা স্বীকার করেছেন সন্তোষ। তাঁর সঙ্গে যে সম্পর্কের অবনতি হয়েছিল, তা-ও মেনে নেন তিনি। অন্তরা তাঁকে এড়িয়ে যেতেন কি না, পুলিশের এই প্রশ্নেও সায় দিয়েছেন অভিযুক্ত যুবক। তবে পুলিশের কাছে তিনি দাবি করেছেন, পুরনো এক বন্ধুর সঙ্গে ইদানীং ঘনিষ্ঠতা বেড়েছিল অন্তরার। তাঁরা বিয়ে করবেন বলেও ঠিক করেছিলেন।

Advertisement

সন্তোষকে সন্দেহ করার আর একটি কারণ, ঘটনার একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ান। শুক্রবার রাতে রক্তাক্ত অন্তরাকে রাস্তা থেকে তুলে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন সত্যেন্দ্র সিংহ নামে এক মোটরবাইক আরোহী। পরে সতেন্দ্রর বয়ান অনুযায়ী আততায়ীয় যে স্কেচ তৈরি করা হয়, তার সঙ্গে সন্তোষের চেহারার কিছুটা মিল রয়েছে, দাবি পুলিশের।

তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, সন্তোষের কললিস্ট খতিয়ে দেখা গিয়েছে, ঘটনার দিন সকালে অন্তরার রুমমেট পূজাকে ফোন করেছিলেন তিনি। পুজাকে চিনতেন তিনি। পূজা পুলিশকে জানিয়েছেন, ওই ফোনে অন্তরার গতিবিধি সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলেন সন্তোষ। সে দিন অন্তরার আরও কয়েক জন বন্ধুকে ফোন করেছিলেন সন্তোষ। পুলিশ জানিয়েছে, প্রশিক্ষণ নিয়ে বেঙ্গালুরু থেকে পুনে ফেরার সময় অন্তরা ও পূজার সঙ্গে সন্তোষও ছিলেন। অন্তরার কললিস্ট খতিয়ে দেখে এবং তাঁর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে বেঙ্গালুরু গিয়ে পুলিশের একটি দল সন্তোষকে পুণে নিয়ে আসে।

তদন্তকারীদের সাহায্য করতে অন্তরার পরিবার পুণেতেই রয়েছে। এ দিন বেহালা (পশ্চিম)-র বিধায়ক ও রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় অন্তরার বাবাকে ফোন করে সমবেদনা জানান তিনি। সব রকম সাহায্যের আশ্বাসও দেন। নিজের মোবাইল ফোনের নম্বরও দেবানন্দবাবুকে দিয়েছেন তিনি। পরে পার্থবাবু বলেন, ‘‘কোনও সমস্যা হলেই জানাতে বলেছি। প্রয়োজনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আলোচনা করে পুণে পুলিশের সঙ্গেও যোগাযোগ করব।’’

বেহালার সরশুনার বাসিন্দা অন্তরা দাস (২৩) পৈলানের একটি সংস্থা থেকে পাশ করে বেঙ্গালুরু যান। সেখানে প্রশিক্ষণ শেষে পুণেতে একটি সংস্থায় যোগ দেন। শুক্রবার পুণের তালবাড়ের অফিস থেকে বেরিয়ে কেএনবি চকের কাছে এক আততায়ী তাঁর গলায় ও মাথায় ধারালো অস্ত্রের কোপ দেয়। হাসপাতালেই মারা যান।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement