ফেসবুক-বন্ধুত্ব নিয়ে সতর্ক সেনা

প্রথম দু’টি মেসেজ ফেসবুকে পেয়েছিলেন সীমান্তে মোতায়েন থাকা আধা সেনার দুই জওয়ান। তৃতীয়টি পান এক স্বরাষ্ট্র কর্তা। তিনটি প্রশ্নেরই প্রেরক এক সুন্দরী তন্বী।

Advertisement

অনমিত্র সেনগুপ্ত

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:৩৮
Share:

মেসেজ ১— ভারতীয় পুরুষেরা খুবই বিশ্বস্ত। তাই তোমার সঙ্গে আলাপ করতে চাই।

Advertisement

মেসেজ ২— আপনাদের দেশটি খুব সুন্দর। বিশেষ করে হিমালয়। সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে কী দ্রষ্টব্য রয়েছে, তা আমায় একটু বলুন না!

মেসেজ ৩— ভারত-চিন সম্পর্ক নিয়ে গবেষণা করছি। এ নিয়ে সীমান্ত এলাকার কিছু তথ্য চাই।

Advertisement

প্রথম দু’টি মেসেজ ফেসবুকে পেয়েছিলেন সীমান্তে মোতায়েন থাকা আধা সেনার দুই জওয়ান। তৃতীয়টি পান এক স্বরাষ্ট্র কর্তা। তিনটি প্রশ্নেরই প্রেরক এক সুন্দরী তন্বী। কিন্তু কেন্দ্রের সতর্কবার্তা হল, আপাত নিরীহ ওই প্রশ্নগুলির পিছনে কোনও তরুণী নয়, ফাঁদ পাতছে সীমান্তপারে বসে থাকা চিনা বা পাকিস্তানি চরেরা। যাদের লক্ষ্যই হল, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়ো অ্যাকাউন্ট তৈরি করে এ দেশের সীমান্তে মোতায়েন সেনা-আধা সেনা জওয়ান-অফিসারদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে নেওয়া। তালিকায় রয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ও সেনার অফিসার, এমনকী সাংসদেরাও।

কাল কেন্দ্রীয় তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকের আলোচনার মূল বিষয় ছিল তথ্য ফাঁস। সীমান্তে মোতায়েন জওয়ানদের মহিলাদের উত্তেজক ছবি দেখিয়ে এবং মেসেজ করে দেশের নিরাপত্তা সংক্রান্ত তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে। এ নিয়ে অবিলম্বে নির্দেশিকা জারি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র।

স্বরাষ্ট্র কর্তারা বলছেন, যাঁরা ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে বা ভারত-চিন সীমান্তে মোতায়েন রয়েছেন, তাঁরাই মূলত বিদেশি গুপ্তচরদের নিশানায় রয়েছেন। সেই ভিত্তিতে নকল মহিলা প্রোফাইল বানিয়ে জওয়ান বা অফিসারের সঙ্গে ফেসবুকের মতো সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে যোগাযোগ শুরু করে বিদেশি গুপ্তচরেরা। একটি সূত্র বলছে, ভারত-পাক সীমান্তে থাকা বিএসএফ ও ভারত-চিন সীমান্তে থাকা আইটিবিপি জওয়ানদের কাছে বেশি করে আসছে বন্ধুত্বের ওই বার্তা। বিশেষ করে সেই জওয়ানের দিনচর্যা কেমন, কী ভাবে প্রশিক্ষণ করেন, কেমন অস্ত্র ব্যবহার করেন তা পুঙ্খানুপুঙ্খ জেনে নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। এলাকার ভূ-প্রকৃতি সম্বন্ধে ধারণা তৈরি করতে শিবিরের, আশপাশের ছবি তুলে পাঠানোর আবদার করা হচ্ছে জওয়ানের কাছে। এ ভাবেই পারে বিদেশি গুপ্তচররা।

সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে সেনা-জওয়ানদের আগেই সতর্ক করা হয়েছে। কিন্তু স্বরাষ্ট্র কর্তাদের মতে, সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার কিছুতেই আটকানো যাচ্ছে না। তাই কড়া নিয়ম আনার বিষয়ে ভাবছে কেন্দ্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন