মহিলার টোপেই পাচার নথিপত্র

ফেসবুকে আলাপ হওয়া এক মহিলাকে বায়ুসেনার বেশ কিছু গোপন তথ্য পাচার করেছেন তিনি। নথিপত্রের ছবি তুলে তা পাঠিয়েছেন হোয়াটসঅ্যাপে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৪:৫৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

রাজধানীতে ভারতীয় বায়ুসেনার সদর দফতরে মোতায়েন ছিলেন তিনি। পাইলট নন, প্যারা-জাম্প প্রশিক্ষক হিসেবে। গ্রুপ ক্যাপ্টেন পদমর্যাদার সেই অফিসারকে গুপ্তচর সন্দেহে আটক করেছে বায়ুসেনার তদন্তকারী শাখা। সন্দেহ করা হচ্ছে, ফেসবুকে আলাপ হওয়া এক মহিলাকে বায়ুসেনার বেশ কিছু গোপন তথ্য পাচার করেছেন তিনি। নথিপত্রের ছবি তুলে তা পাঠিয়েছেন হোয়াটসঅ্যাপে।

Advertisement

বায়ুসেনা সূত্রে আজ এই খবর জানা গেলেও ওই অফিসারের নাম প্রকাশ করা হয়নি। সরকারি ভাবে কোনও মন্তব্যও করেনি বায়ুসেনা। তবে নারীসঙ্গের টোপ দিয়ে তথ্য হাতানোর এই সম্ভাব্য ছকের নেপথ্যে পাকিস্তানের হাত রয়েছে বলেই আশঙ্কা করছেন অনেকে।

নয়াদিল্লির রেস কোর্স রোড এলাকা থেকে ওই অফিসারকে আটক করে বায়ুসেনার সেন্ট্রাল সিকিওরিটি অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন টিম। রুটিন নজরদারি চালাতে গিয়েই ওই অফিসারের দিকে নজর পড়ে গোয়েন্দাদের। সূত্রের কথায়, ‘‘নিষিদ্ধ ইলেকট্রনিক যন্ত্র ব্যবহার করে অবাঞ্ছিত কাজকর্ম চালাচ্ছিলেন তিনি।’’ তথ্য ফাঁস এড়াতেই কর্মরত অবস্থায় সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে কিছু বিধিনিষেধ থাকে বায়ুসেনা অফিসারদের। এ ক্ষেত্রে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, ওই অফিসার নিজের স্মার্টফোনে কিছু নথিপত্রের ছবি তুলে সেগুলি পাঠাতেন ফেসবুকে পরিচয় হওয়া ওই মহিলাকে। সেই সব নথি কতটা সংবেদনশীল, তা বোঝা যাবে ওই অফিসারকে সবিস্তার জেরার পরেই। গ্রুপ ক্যাপ্টেন পদটি স্থলবাহিনীর কর্নেলের সমমর্যাদার। উপরন্তু ওই অফিসার কাজ করতেন সদর দফতরে। ফলে একটা পর্যায় পর্যন্ত গোপন নথি হাতে পাওয়াটা তাঁর পক্ষে খুব অসম্ভব ছিল না।

Advertisement

ওই মহিলার পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। গোয়েন্দারা জানতে চাইছেন, তাঁকে ‘কাজে’ নামিয়েছিল কারা এবং সেই নেপথ্যের পাণ্ডাদের সঙ্গে ওই অফিসারের যোগাযোগ হয়েছিল কি না। কোনও মহিলাকে টোপ হিসেবে ব্যবহার করে ঘনিষ্ঠতার সুযোগে তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার ‘হানি ট্র্যাপ’ গুপ্তচরবৃত্তির ইতিহাসে দুনিয়া জুড়েই বহুল ব্যবহৃত এক ফাঁদ। আগেও ভারতীয় অফিসারেরাও এই ফাঁদে পড়েছেন। ২০১১ সালে মস্কোয় মোতায়েন এক উচ্চপদস্থ নৌ-অফিসারের সঙ্গে এক রুশ মহিলার অন্তরঙ্গ ছবি প্রকাশ হওয়ায় তাঁকে বরখাস্ত করেছিল ভারতীয় নৌবাহিনী। ২০০৫ সালে নৌবাহিনীর ওয়ার-রুম থেকে ফাঁস হয়ে গিয়েছিল প্রায় সাত হাজার পাতার গোপন তথ্য। গ্রেফতার হন চার অফিসার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন