সীমান্তে উত্তেজনা কমাতে ভারত ও চিনের মধ্যে গত বছর চুক্তি সই হয়েছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় চিনা সেনা লাগাতার অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালাচ্ছে। এর মধ্যেই বেজিং সফরে যাচ্ছেন ভারতীয় সেনাপ্রধান জেনারেল বিক্রম সিংহ।
ন’বছর পরে কোনও ভারতীয় সেনাপ্রধান চিন সফরে যাচ্ছেন। মনমোহন সিংহের জমানার শুরুতে ২০০৫ সালে তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল এন সি ভিজ চিন সফরে গিয়েছিলেন।
প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে চিনা সেনার অনুপ্রবেশ ঘিরে দু’দিকে উত্তেজনা কমাতে গত বছর দু’দেশের মধ্যে সীমান্ত প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তি সই হয়েছিল। কিন্তু সেই চুক্তির অনেক বিষয়ই এখনও কার্যকর হয়নি। শুক্রবারও লাদাখের প্যাঙ্গং হ্রদে ভারতের জলসীমা অতিক্রমের চেষ্টা চালিয়েছে চিনা সেনারা। বিক্রম সিংহের সফরের প্রধান উদ্দেশ্য হবে, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় শান্তি বজায় রাখতে সেই চুক্তির বিষয়গুলি কার্যকর করা।
নরেন্দ্র মোদীর সরকার ক্ষমতায় আসার পরে নয়াদিল্লি চিনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইছে।
রাজনৈতিক স্তরে শীর্ষ বৈঠকের পাশাপাশি প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রেও দু’দেশের মধ্যে বোঝাপড়া বাড়াতে চাইছে মোদী সরকার। উপরাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারি চিন সফরে গিয়েছেন।
আগামী মাসে ব্রাজিলে ব্রিকস সম্মেলন চলাকালীন মোদীর সঙ্গে চিনা প্রেসিডেন্ট জি জিনপিংয়ের বৈঠক হবে। ফেব্রুয়ারি ও এপ্রিলে ভারতে এসেছিল চিনা সেনার প্রতিনিধি দল। চলতি বছরের শেষে ভারতীয় ও চিনা সেনার মধ্যে সন্ত্রাস দমনের যৌথ মহড়া হবে। তার আগে সেনা কর্তারা চিনা সেনার সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝির জায়গাগুলো কমিয়ে আনতে চাইছেন।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রের খবর, বেজিংয়ে পৌঁছে বিক্রম চিনা মিলিটারি কমিশনের উপাধ্যক্ষ জেনারেল ফ্যান চাংলংয়ের সঙ্গে বৈঠক করবেন। প্রেসিডেন্ট জি জিনপিং ওই কমিশনের অধ্যক্ষ। জেনারেল চাংলং কমিশনের উপাধ্যক্ষ হিসেবে একই সঙ্গে চিনের সেনা, বায়ুসেনা ও নৌসেনার কাজ দেখাশোনা করেন। দু’দেশের সেনার মধ্যে শীর্ষ স্তর থেকে একেবারে নিচু তলা পর্যন্ত কী ভাবে বোঝাপড়া বাড়ানো যায়, সে দিকেই মূলত সেনাপ্রধান বিক্রম সিংহের নজর থাকবে।
চিনের সেনা প্রশিক্ষণ শিবিরেও বক্তৃতা দেবেন বিক্রম। ভারতীয় সেনাপ্রধানকে চিনা সেনা কর্তারা এইভাবে সম্মান জানাতে চাইছেন বলেই সেনা-কর্তাদের দাবি। চিনা বিদেশ মন্ত্রকের কর্তাদের সঙ্গেও বৈঠক করবেন বিক্রম সিংহ।