ধরালীতে চলছে উদ্ধারকাজ। ছবি: পিটিআই।
মেঘভাঙা বৃষ্টির জেরে পাহাড়ি ঢাল বেয়ে নেমে আসা ভয়াবহ হড়পা বান। আর তার জেরে বিধ্বস্ত একের পর এক গ্রাম। উত্তরাখণ্ডের ধরালীর ছবি এ বার জম্মু ও কাশ্মীরের কিশ্তওয়াড়ে। বৃহস্পতিবার দুপুরে চশোতী গ্রামের কাছে মচৈল মাতা মন্দিরের কাছে দুর্ঘটনায় মৃত ৪৬ জনের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
মৃতদের মধ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী সিআইএসএফের দুই জওয়ানও রয়েছেন। স্থানীয় সূত্রে খবর, এখনও প্রায় ২০০ জন মানুষ নিখোঁজ। ফলে মৃতের সংখ্যা বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। প্রতিকূল আবহাওয়া সত্ত্বেও রাতে উদ্ধারের কাজ চলছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। কাদামাটি ও পাথরের স্তূপ খুঁড়ে আটকে পড়াদের উদ্ধারের কাজে নিয়োগ করা হয়েছে ৩০০-র বেশি সেনাকর্মীকে! বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত ১৬০ জনেরও বেশি জীবিত মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে এবং তাদের মধ্যে ৩৮ জনের অবস্থা গুরুতর বলে পিটিআই জানাচ্ছে।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার কিশ্তওয়াড়ের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন। সমাজমাধ্যমে তিনি লিখেছেন, ‘‘কাশ্মীরে আকস্মিক বন্যার শিকার হতভাগ্যদের জন্য আমি গভীর ভাবে শোকাহত। ইতিমধ্যেই কয়েক ডজন মানুষের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে, এবং আরও অনেকে নিখোঁজ হয়েছেন ভয়াবহ দুর্যোগে।’’ হড়পা বানে মৃতদের শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা এবং জম্মু ও কাশ্মীর সরকারের সহমর্মিতা প্রকাশ করেছেন তিনি। স্বাধীনতা দিবসের ঠিক আগে ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও।
কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা জানিয়েছেন, স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সমস্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চশোতী গ্রাম থেকে ‘মচৈল মাতা যাত্রা’ শুরুর কথা ছিল। সেই উপলক্ষে অনেক পুণ্যার্থী জড়ো হয়েছিলেন ওই গ্রামে। তাবুঁ খাটিয়ে তাঁরা আশ্রয় নিয়েছিলেন। হড়পা বানে সেই সব তাঁবু ভেসে গিয়েছে। স্থানীয় বিধায়ক সুনীলকুমার শর্মা জানিয়েছেন, এমন ভয়াবহ বিপর্যয় আগে কখনও দেখেনি কিশ্তওয়াড়। প্রসঙ্গত, গত ৫ অগস্ট উত্তরাখণ্ডের উত্তরাকাশীর ধরালী এবং হর্ষিল গ্রামে নেমে এসেছিল হড়পা বান। সেই প্রাকৃতিক দুর্যোগের জেরে ধরালীর বেশির ভাগ অংশ পাথর, কাদার নীচে চাপা পড়ে গিয়েছিল। সরকারি হিসেবে মৃতের সংখ্যা পাঁচ হলেও এখনও প্রায় ১০০ মানুষ সেখানে নিখোঁজ!