National News

জঙ্গি ধরতে দক্ষিণ কাশ্মীরে ঘরে ঘরে সেনা তল্লাশি

কাশ্মীরের সোপিয়ানে বড়সড় সেনা অপারেশন চলছে দু’দিন ধরেই। সেই অভিযানের বহর আরও বাড়াল ভারতীয় সেনাবাহিনী।প্রায় ৩০টা গ্রামে ঘরে ঘরে ঢুকে তল্লাশি অভিযান শুরু হয়েছে বলে সেনা সূত্রে খবর।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০১৭ ১৩:২১
Share:

সোপিয়ানে জঙ্গি ধরতে সেনা তল্লাশি।

কাশ্মীরের সোপিয়ানে বড়সড় সেনা অপারেশন চলছে দু’দিন ধরেই। সেই অভিযানের বহর আরও বাড়াল ভারতীয় সেনাবাহিনী।প্রায় ৩০টা গ্রামে ঘরে ঘরে ঢুকে তল্লাশি অভিযান শুরু হয়েছে বলে সেনা সূত্রে খবর। তল্লাশি অভিযানে নামানো হয়েছে চার হাজারেরও বেশি সেনা এবং আধাসামরিক বাহিনী। সঙ্গে আছে পুলিশও। পাশাপাশি হেলিকপ্টার ও ড্রোনের মাধ্যমেও জঙ্গিদের খোঁজ চালানো হচ্ছে। এক সেনা আধিকারিকের কথায়, গত ১৫ বছরে এমন ‘অল আউট’ অভিযান দেখেনি কাশ্মীর।

Advertisement

আরও পড়ুন: মানুষের বাধায় সেনা তল্লশি বন্ধ কুলগামে, পালাল দুই জঙ্গি

কাশ্মীর: বাজপেয়ী যা পারতেন, মোদী পারেন না

Advertisement

কয়েক দিন আগে সোপিয়ানের একটি ফল বাগিচায় জঙ্গিদের বড় দলের গতিবিধি দেখা গিয়েছিল। দক্ষিণ কাশ্মীরে যে জঙ্গি তত্পরতা বেড়েছে, সেই ভিডিওতে স্পষ্ট। ভিডিওটা জঙ্গিরাই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছাড়ে। সোপিয়ানে যে জঙ্গিরা নির্বিঘ্নে ঘুরে বেড়াচ্ছে, আরও নানান সূত্রে খবর আসে সেনার কাছে। জঙ্গিদের খোঁজে বৃহস্পতিবার তল্লাশিতে নামে যৌথ বাহিনী। শুরু হয় ‘অপারেশন ক্লিন আপ’। এই অভিযানে প্রথমে সোপিয়ানের প্রায় ১২টি গ্রাম ঘিরে ফেলে প্রতিটি ঘরে ঢুকে তল্লাশি চালায় সেনারা।

তার পর অভিযান ছড়ানো হয় আরও অনেকগুলো গ্রামে কোনও কোনও গ্রামে বিনা বাধাতই তল্লাশি চালাতে পারলেও, বেশ কিছু গ্রাম সেনাদের এই অভিযানে বাধা দেয়। হিফ, সুগান, চিলিপোরা, মালনার, তুর্কাওয়াঙ্গনের মতো গ্রামের বাসিন্দারা সেনাদের লক্ষ্য পাথর ছোড়ে। বাধা দেয় তল্লাশিতে। দু’পক্ষের সংঘর্ষে বেশ কয়েক জন গ্রামবাসী আহত হন বলে জানা গিয়েছে।

এই তল্লাশি অভিযান চালানোর মধ্যেই কিন্তু ইমাম সাহিব গ্রামে সেনার ৬২ রাইফেলসের জওয়ানদের লক্ষ্য করে হামলা চালায় জঙ্গিরা। উভয় পক্ষের গুলি বিনিময়ে তিন জওয়ান আহত হন। মৃত্যু হয় এক গাড়িচালকের। এই হামলার দায় স্বীকার করে হিজবুল মুজাহিদিন। সূত্রের খবর, দক্ষিণ কাশ্মীরে প্রশাসনিক শিথিলতার সুযোগে ৩০-৪০ জন জঙ্গি সেখানে ঘাঁটি গেড়ে বসেছে। বেশ কিছু লস্কর জঙ্গি কুলগাম জেলায় লুকিয়ে রয়েছে, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সেখানেও অভিযান চালায় সেনা। সেনা সূত্রে খবর, খুরওয়ানের স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় জঙ্গিরা সেখান থেকে পালাতে সক্ষম হয়। তাদের খোঁজে চিরুনি তল্লাশি চালাচ্ছে সেনা। এই কুলগামেই কয়েক দিন আগেই ব্যাঙ্ক লুঠ করে জঙ্গিরা। তাদের হামলায় পাঁচ পুলিশকর্মী-সহ সাত জন নিহত হন। যে ভাবে জঙ্গিরা দক্ষিণ কাশ্মীরে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে, এর একটা হেস্তনেস্ত করতেই ‘অল আউট’ অভিযান চালানো হচ্ছে।

হিজবুল কম্যান্ডার বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর পর থেকেই কাশ্মীর নতুন করে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছে। দফায় দফায় সেনাদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষ চলছে প্রতি দিন। সেনাদের তল্লাশি অভিযানের বিরোধিতায় সক্রিয় হয়ে উঠেছে প্রায় গোটা কাশ্মীর। প্রতি দিন কোনও না কোনও সংঘর্ষে আহত হচ্ছে সেনা, সাধারণ মানুষ। সাধারণ মানুষের এই ক্ষোভকেই ঢাল করে পাক মদতপুষ্ট সন্ত্রাসবাদীরা আরও সক্রিয় হয়ে উঠেছে কাশ্মীরে। সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়ত অবশ্য চলতি জঙ্গি বিরোধী অপারেশনকে প্রকাশ্যে বেশি গুরুত্ব দিতে চাননি। তাঁর দাবি, কাশ্মীরে এমন অভিযান বেশ কিছু দিন ধরেই চলছে।

ছবি: পিটিআই এবং এএফপি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন