এক যাত্রায় দুই পাখি মারতে চান জেটলি

এক দিকে রাজনৈতিক বার্তা দেওয়া ও অন্য দিকে সেনাবাহিনীর মনোবল বাড়ানো-এক যাত্রায় দুই কাজ করতে আজ কাশ্মীরে পৌঁছলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। আগামিকাল দেশের বিভিন্ন রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের উপস্থিতিতে জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠক শুরু হতে চলেছে শ্রীনগরে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০১৭ ০৩:১৪
Share:

প্রস্তুত: পুলিশকে লক্ষ করে পাথর ছুড়তে পাথর জড়ো করছেন এই ছাত্রী। বুধবার শ্রীনগরে গাঁধী মেমোরিয়াল কলেজের পড়ুয়ারা ধৃত সহপাঠীদের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। পুলিশ তা থামাতে গেলে ছড়িয়ে পড়ে সংঘর্ষ। ছবি: পিটিআই।

এক দিকে রাজনৈতিক বার্তা দেওয়া ও অন্য দিকে সেনাবাহিনীর মনোবল বাড়ানো-এক যাত্রায় দুই কাজ করতে আজ কাশ্মীরে পৌঁছলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। আগামিকাল দেশের বিভিন্ন রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের উপস্থিতিতে জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠক শুরু হতে চলেছে শ্রীনগরে। তার আগে আজ সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়তের সঙ্গে বৈঠক করে উপত্যকার সেনা প্রস্তুতি মেপে নেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের বাড়তি দায়িত্ব পাওয়া জেটলি।

Advertisement

গরম পড়তেই নতুন করে অশান্ত হয়ে উঠেছে কাশ্মীর। তরুণদের পাশাপাশি সরকারের বিরুদ্ধে পথে নেমেছে স্কুল পড়ুয়ারাও। এই পরিস্থিতিতে অশান্ত কাশ্মীরের মানুষের পাশে থাকার বার্তা দিতেই দু’দিনের জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠক কাশ্মীরে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। জিএসটি বৈঠকের পাশাপাশি উপত্যকার বণিক সভা ও ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলির সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে জেটলির। লক্ষ্য রাজ্যে আলোচনার একটি পরিবেশ গড়ে তোলা। আজও অবশ্য ফি দিনের মতোই সীমান্তে পাক সেনার গোলাগুলি, দক্ষিণ কাশ্মীরের সোপিয়ানে বাড়ি-বাড়ি সেনা তল্লাশি চালু ছিল।

আগামী ২৬ মে নরেন্দ্র মোদী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার তিন বছর পূর্তি হতে চলেছে। বর্ষপূর্তির এই আবহে বিরোধী নেতাদের উপরে সিবিআই, আয়কর দফতরের হানা আসলে শাসক দলের রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার চেষ্টা বলে দাবি লালুপ্রসাদ-মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়দের। স্বভাবতই এই নেতিবাচক পরিবেশে বর্ষপূর্তি পালনে আপত্তি রয়েছে সরকারের একাংশের। উল্টে তাঁরা মনে করছেন পাক অধিকৃত কাশ্মীরে হামলা চালিয়ে জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করে বর্ষপূর্তি উদ্‌যাপন করুক কেন্দ্র। সে ক্ষেত্রে জনমতও সরকারের পক্ষে থাকবে। যেমনটি হয়েছিল প্রথম সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের পরে।

Advertisement

সম্প্রতি পাক সেনার মদতপুষ্ট জঙ্গিরা হামলা চালিয়ে ভারতীয় জওয়ানদের মাথা কেটে নিয়ে যাওয়ার পর থেকেই কেন্দ্রের উপরে পাল্টা সেনা অভিযানের চাপ বাড়ছে। পাল্টা হামলা চালানো নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ বলেন, ‘‘আগের বার সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের পরিকল্পনা করতেও দিন ১০-১৫ সময় লেগেছিল। এমন ভাবা উচিত নয় যে কিছু হচ্ছে না। সীমান্তে যা হয়েছে তাতে আমরা কষ্ট পেয়েছি। সেই কষ্ট আমরা বেশিদিন বইব না।’’

রাজনাথ হামলার ইঙ্গিত দিলেও সব দিক খতিয়ে এগোতে চাইছে কেন্দ্র। কারণ প্রথম সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের পরে এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি সতর্ক হয়ে গিয়েছে পাক সেনা। হামলার আশঙ্কায় দু’দিন আগে নিজেদের সেনার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে সীমান্ত পরিদর্শন করে যান পাক সেনাপ্রধান কমর জাভেদ বাজওয়া। ফলে হামলা চালাতে গিয়ে উল্টে যদি ভারতীয় সেনার মৃত্যু হয় সে ক্ষেত্রে পরিস্থিতি ঘুরে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই হামলা চালানোর আগে সব দিক থেকে নিশ্চিত হয়েই এগোতে চাইছে কেন্দ্র।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement