লড়াইয়ে রাহুলকে পাশে চান কেজরী

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে নির্দিষ্ট কর না দিয়ে দিল্লিতে যাঁরা নিজের বাসভবনকে ব্যবসায়িক কাজে ব্যবহার করছেন (মূলত দোকান ও হোটেল) তাঁদের দোকান বন্ধ করা শুরু করেছে পুরসভা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০১৮ ০৩:৪৪
Share:

দু’জনেই থাকেন একই শহরে। কিন্তু গত সাড়ে তিন বছরে মুখোমুখি সাক্ষাৎ তো দূর, পারস্পরিক সৌজন্য বিনিময়টুকুও পর্যন্ত হয়নি। আজ সেই অরবিন্দ কেজরীবাল দিল্লির ‘সিলিং’-এর সমস্যায় নাজেহাল ব্যবসায়ীদের স্বার্থে একযোগে মাঠে নামার তদ্বির করে চিঠি লিখলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধীকে।

Advertisement

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে নির্দিষ্ট কর না দিয়ে দিল্লিতে যাঁরা নিজের বাসভবনকে ব্যবসায়িক কাজে ব্যবহার করছেন (মূলত দোকান ও হোটেল) তাঁদের দোকান বন্ধ করা শুরু করেছে পুরসভা। ব্যবসার কাজে যদি কোনও নির্মাণ হয় ভেঙে ফেলা হচ্ছে তা-ও। গত তিন মাসে বিজেপি শাসিত পুরসভাগুলি এ ধরনের অন্তত কয়েকশো দোকান বন্ধ করেছে। এ হেন ‘সিলিং’ অভিযানের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছেন ব্যবসায়ীরা।

আপাত ভাবে এই ব্যবসায়ীদের স্বার্থে কেজরীবাল রাহুলকে চিঠি লিখেছেন ঠিকই। কিন্তু খোদ আপ নেতারাই স্বীকার করছেন, লোকসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখেই বিজেপি বিরোধী আন্দোলনে কংগ্রেসের সঙ্গে একযোগে নামতে চাইছেন কেজরীবাল। তবে আজ একই সঙ্গে বিল এনে দিল্লির সিলিং সমস্যা চিরতরে মেটানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছেও চিঠি লিখেছেন কেজরীবাল। তবে তাতে যে কাজ কিছু হবে না সে বিষয়ে নিশ্চিত কেজরীবাল শিবির।

Advertisement

গত ডিসেম্বর মাস থেকে সিলিং-র আওতায় গ্রেটার কৈলাশ, করোল বাগ, কনট প্লেস, লাজপত নগরের মতো একাধিক বাজারের বহু দোকান বন্ধ করে দিয়েছে দিল্লি পুরসভা। আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে কেন্দ্র এ নিয়ে ইতিবাচক কোনও পদক্ষেপ না নিলে অনশনে বসার হুমকিও দিয়েছেন কেজরীবাল। কিন্তু সমস্যা হল গোটাটাই হচ্ছে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে। ফলে আদালত অবমাননার ভয়ে সরাসরি সুর চড়াতে পারছে না কোনও রাজনৈতিক দলই।

গোটা দায় কেন্দ্রের ঘাড়ে ঠেলে দিয়ে কেজরীবাল প্রধানমন্ত্রীকে চিঠিতে লিখেছেন, ‘‘ফি বছরের সমস্যা দূর করতে একটি বিল আনুক কেন্দ্র। যাতে সমস্যা একেবারে নির্মূল করা যায়। ব্যবসায়ীদের স্বস্তি মেলে।’’ কিন্তু মোদী সরকার যে কোনও পদক্ষেপ করবে না সে বিষয়ে নিশ্চিত আপ নেতৃত্ব। তাই রাহুল গাঁধীর প্রতি বার্তায় কেজরীবাল বলেছেন, ‘‘রাজনীতির উর্ধ্বে উঠে আমাদের ওই সমস্যার মোকাবিলা করতে হবে। বিষয়টি সংসদে তোলা প্রয়োজন এবং কেন্দ্র যাতে বিল আনে সে জন্য মোদী সরকারের উপরে চাপ বাড়াতে হবে।’’

বার্তা স্পষ্ট যে, কংগ্রেসের সঙ্গে কাঁধ মিলিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইতে নামতে আপত্তি নেই আপের। যদিও এ যাবৎ বিজেপি-বিরোধী জোটে আপের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে আপত্তি ছিল কংগ্রেসের। অজয় মাকেনদের যুক্তি ছিল, রাজধানীতে তাঁদের মূল প্রতিপক্ষ হল আপ। তাদের সঙ্গে হাত মেলালে ভোট ভাগ হবে। বিজেপির ফায়দা হবে। উল্টো দিকে কংগ্রেসের দুর্নীতি নিয়ে প্রচার করে ক্ষমতায় আসা কেজরীর পক্ষেও কংগ্রেসের পাশে দাঁড়ানো সম্ভব হচ্ছিল না। কিন্তু গত মাসে প্রথম কাছে আসতে দেখা যায় দু’পক্ষকে। বিচারক লোয়ার মৃত্যু রহস্যের তদন্ত দাবি করে সর্বদলীয় প্রতিনিধি দল রাষ্ট্রপতির কাছে গিয়েছিল। তাতে রাহুল গাঁধীদের সঙ্গেই উপস্থিত ছিলেন আপ সাংসদ সঞ্জয় সিংহ। তারপরে আজ রাহুলের উদ্দেশে বন্ধুত্বের বার্তা পাঠালেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন