দোষী: ২০১৩-র সেপ্টেম্বরে ইনদওরের আশ্রম থেকে ধরা পড়ার পরে আসারাম বাপু। বুধবার ধর্ষণের দায়ে যাবজ্জীবন হয়েছে তার। ফাইল চিত্র।
মাত্র আট মাসের ব্যবধান। ধর্ষণের দায়ে দোষী সাব্যস্ত আরও এক স্বঘোষিত ধর্মগুরু।
গত বছর অগস্টে জোড়া ধর্ষণের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিল ডেরা সচ্চা সৌদা প্রধান গুরমিত রাম রহিম। আদালত তাকে ২০ বছরের কারাবাসের সাজা শুনিয়েছে। এ বার এক নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত আসারাম বাপু। জোধপুরের তফসিলি জাতি ও জনজাতি আদালত তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে। একই সঙ্গে ১ লক্ষ টাকার জরিমানা হয়েছে তার। এই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছে শিল্পী ও শরদ নামে আরও দুই অভিযুক্ত। তাদের ২০ বছর করে কারাবাস হয়েছে। তবে আজ আদালত মুক্তি দিয়েছে প্রকাশ এবং শিবা নামে বাকি দুই অভিযুক্তকে।
ঘটনা ২০১৩-র। উত্তরপ্রদেশের শাহজহানপুরের বাসিন্দা ওই নাবালিকা অভিযোগ করেছিল, ২০১৩ সালের ১৫ অগস্ট রাতে জোধপুরের কাছে মানাই এলাকায় যে আশ্রম রয়েছে, সেখানে তাকে ধর্ষণ করে আসারাম। ওই ধর্মগুরুই সে দিন তাকে ওই আশ্রমে ডেকে পাঠিয়েছিল বলে পুলিশকে জানিয়েছিল ওই কিশোরী। তখন তার বয়স ১৬। মধ্যপ্রদেশের ছিন্দওয়াড়ায় আসারামের যে আশ্রম রয়েছে, সেখানে এক সময়ে থাকত সে। ওই বছরেরই সেপ্টেম্বরে ইনদওর থেকে আসারামকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
কাল থেকেই কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে দেওয়া হয়েছিল গোটা জোধপুর শহর। গুরমিত-কাণ্ডের পর আজ যাতে কোনও হিংসাত্মক ঘটনা না ঘটে, সে জন্য রাজস্থান, গুজরাত আর হরিয়ানা সরকারকে বিশেষ করে সতর্ক করে দিয়েছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। এই তিন রাজ্যেই সব চেয়ে বেশি ভক্ত রয়েছে আসারামের। বিশেষ নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে ওই মামলার বিচারক আর নির্যাতিতার পরিবারকেও। মেয়েটির বাবা আজ বিচার ব্যবস্থা এবং সংবাদমাধ্যমকে ধন্যবাদ দিলেও জানিয়েছেন, তাঁরা এখনও আতঙ্কে রয়েছেন।
হাইকোর্টের নির্দেশে আজ জোধপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারেই বসেছিল আদালত। সকাল আটটায় সেখানে পৌঁছন বিচারক মধুসূদন শর্মা। দশটা চল্লিশ নাগাদ আসারামকে দোষী সাব্যস্ত করেন তিনি। খানিক ক্ষণ বিরতির পরে দুপুর আড়াইটে নাগাদ সাজা শোনান তিনি। রায় শুনে ভেঙে পড়তে দেখা গিয়েছে ৭৭ বছরের ধর্মগুরুকে। তবে আসারাম বরাবর ধর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তার কৌঁসুলি জানিয়েছেন, রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চতর আদালতে আবেদন করবেন তাঁরা।