শোণিতপুর বরসলায় বন্যার তোড়ে ভাসল পাকা সেতু।—নিজস্ব চিত্র।
অসমে দ্বিতীয় দফার বন্যার ভয়াবহতা প্রথমবারকে ছাপিয়ে গেল। গুয়াহাটিতে পাড় ছাপাল ব্রহ্মপুত্র। লাইন জলে ডোবায় বাতিল হল উত্তর-পূর্ব রেলের ২২টি ট্রেন চলাচল। দ্বিতীয় দফার বন্যায় মৃত্যের সংখ্যা ২০ ছাড়িয়েছে। সব মিলিয়ে এ বছরের বন্যায় শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। দু’দিনে ভেঙে ও ভেসে গিয়েছে ১৩টি সেতু। ২১ জেলার ১১টি নদী বিপদসীমার উপরে বইছে। বন্যা কবলিতের সংখ্যা সাড়ে ২২ লক্ষ। ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন ১ লক্ষ ৮৩ হাজার ৫৮৪ জন।
বন্যা নিয়ে উদ্বিগ্ন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এ দিন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালকে ফোন করে পরিস্থিতির খবর নেন। মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বগিবিল এলাকা পরিদর্শনে যান। কৃষিমন্ত্রী অতুল বরা অবিলম্বে সব বন্যাক্রান্তের কাছে খাদ্য-জল-ওষুধ পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন: উত্তরবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতি আরও খারাপ, একের পর এক ট্রেন বাতিল
গত ২৪ ঘণ্টায় বাক্সায় দুই শিশু-সহ বিভিন্ন এলাকা মিলিয়ে ১০ জন মারা গিয়েছেন। বিভিন্ন স্থানে জাতীয় সড়ক জলের তলায়। কাজিরাঙায় জলে ভেসে আসা মা হারা দুই গণ্ডার শাবক উদ্ধার করা হয়। গুয়াহাটিতে ব্রহ্মপুত্রের জলস্তর বিপদসীমার ৪২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে বইছে। ভরলু থানায় জল ঢুকে যায়। বিভিন্ন স্থানে ধস নেমেছে। মাইবংয়েও ধসে যোগাযোগ বন্ধ। কাজিরাঙার ৮৩ শতাংশই জলের তলায়। গ্রামে ঢুকে পড়া বুনো শুয়োরের আক্রমণে নানী আশা ওরাং নামে এক মহিলা মারা গিয়েছেন। মাজুলির বাঁধ ভেঙে পরিস্থিতি ভয়াবহ। ধুবুরিতেও জাতীয় সড়ক অনেকটা জলের তলায়।
নামনি অসমে বন্যার্তদের উদ্ধার করছে সেনাবাহিনী।
আলফা স্বাধীনের সেনাধ্যক্ষ পরেশ বরুয়া এই পরিস্থিতিতে সরকারকে তিন দিন ব্যাপী স্বাধীনতা দিবস পালনের পরিকল্পনা বাতিল করে বন্যা ত্রাণে মন দিতে বলেন। তিনি জানান, বন্যার জন্য স্বাধীনতা দিবসে জঙ্গিদের যৌথ মঞ্চের ডাকা বন্ধ শিথিল করা হচ্ছে।
উত্তর-পূর্ব রেলের মুখপাত্র প্রণবজ্যোতি শর্মা জানান, ডালখোলা, বারসই, সুধানী, কিষাণগঞ্জে রেললাইন ডুবে যাওয়ায় উত্তর-পূর্বে চলাচলকারী ২২টি ট্রেন বাতিল হয়। তার মধ্যে রয়েছে রাজধানী, কামরূপ, বঙ্গাইগাঁও, লোকমান্য তিলক এক্সপ্রেস। বিভিন্ন স্টেশনে দাঁড়িয়ে ট্রেন। ১৪টি ট্রেন বিভিন্ন স্টেশনে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে।