গল্পের ড্রাগনের খোঁজে অসমে

বিমানবন্দরে পা রেখে থমকেছিলেন। ব্রহ্মপুত্রের তীরে দাঁড়িয়ে ফেরি, গাড়ি, সভ্যতার নমুনা দেখে তো মন ভেঙে যাওয়ার সামিল— জলে কুমির নেই, ডাঙায় নেই বাঘ। ড্রাগন বা শ্বেতপাথরের বিরাট প্রাসাদের কথা তো গল্পকথাতেও কেউ শোনেননি!

Advertisement

রাজীবাক্ষ রক্ষিত

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৭ ০৪:৩৬
Share:

বিমানবন্দরে পা রেখে থমকেছিলেন। ব্রহ্মপুত্রের তীরে দাঁড়িয়ে ফেরি, গাড়ি, সভ্যতার নমুনা দেখে তো মন ভেঙে যাওয়ার সামিল— জলে কুমির নেই, ডাঙায় নেই বাঘ। ড্রাগন বা শ্বেতপাথরের বিরাট প্রাসাদের কথা তো গল্পকথাতেও কেউ শোনেননি! আসলে, সকলে তো জুল ভের্ন বা বিভূতিভূষণ নন যে কল্পনার বিশ্বভ্রমণ, হেলিকপ্টার সফর বা কালাহারি-রিখটার্সভেল্ট পাহাড়ে হীরের খোঁজ বাস্তবের সঙ্গে প্রায় হুবহু মিলে যাবে। যেমন মিলল না ইতালীয় সাহিত্যিক এমিলিও সালগারির ক্ষেত্রে।

Advertisement

দেড়শো বছর আগে অসমের প্রেক্ষাপটে সালগারির লেখা চারটি রহস্য-রোমাঞ্চ কাহিনী পড়ে সাহিত্য ও কলা গবেষক অ্যালেসান্দ্রা মেসালি গুয়াহাটি পাড়ি দিয়েছিলেন ২০১১ সালে। তাঁর সঙ্গে গুয়াহাটি আসেন মাইক্রোস্লিমা কলা গবেষণা কেন্দ্রের অধিকর্তা পাওলো রোসো, কিউরেটর অ্যালিস সারতোরি-সহ পাঁচ জন। মেসালি জানান, সালগারি ‘কোয়েস্ট ফর আ থ্রোন’, ‘দ্য ফল্স ব্রাহ্মণ’, ‘অ্যান এম্পায়ার ক্রাম্বলস’ ও ‘ইয়ানেজ রিভেঞ্জ’ নামে চারটি কাহিনীতে ১৯ শতকের গুয়াহাটির প্রেক্ষাপট ব্যবহার করেছেন। অবশ্য তিনি নিজে কখনও এই শহরে পা রাখেননি। কল্পনার গুয়াহাটিতে সালগারি মিশিয়েছিলেন— শহরের নীচে বিরাট সুড়ঙ্গ, শ্বেতপাথরের প্রাসাদের সারি, দৈত্যাকার কুমির, জলড্রাগনের মতো ভয়াবহ প্রাণীতে ভরা ব্রহ্মপুত্রকে। কিন্তু গুয়াহাটি এসে মেসালিরা অবাক হন। কল্পনা ও বাস্তবের ফারাককে ছবি ও চলচ্চিত্রে ধরে রাখার কাজ তখন থেকে শুরু। সালগারির রচনা নিয়ে গবেষণামূলক কাজে হাত দিয়েছেন মেসালি। রচনার নাম ‘এমিলিও সালগারি অ্যান্ড দ্য টাইগার- আ স্টোরি রিটন ইন ফার এ্যাওয়ে ইতালি, সেট ইন গুয়াহাটি।’

এখানকার বিভিন্ন গবেষক, অধ্যাপক, শিক্ষকদের কাছ থেকে সেই সময়ের গুয়াহাটির প্রকৃত ছবি এত দিন ধরে দফায়-দফায় জেনেছেন তাঁরা। সেই সঙ্গে ফ্রেমবন্দি করা হয়েছে বর্তমানের ছবি। প্রায় ছ’বছর ধরে তৈরি তাঁদের কাজ নিয়ে অসম সংগ্রহশালায় চলছে প্রদর্শনী। নাম ‘গুড হর্ন, গুড ব্রেকস, গুড লাক’।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন