ফের খসড়া তালিকা যাচাই চাইবে অসম

অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের নাম ঢোকানোর বিভিন্ন পন্থা, ভুয়ো প্রমাণপত্রের রমরমা ও রাজ্য সরকারের হাতে প্রামাণ্য নথির অভাব— সব মিলিয়ে হাজেলার পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশন দেখে চিন্তায় রাজ্য সরকার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৮ ০৪:৩২
Share:

এনআরসির খসড়া ফের যাচাইয়ের জন্য আদালতে আবেদন জানাবে অসম। —ফাইল চিত্র।

অসমের বিভিন্ন এলাকায় এনআরসির খসড়া ফের যাচাইয়ের জন্য আদালতে আবেদন জানাতে চলেছে রাজ্য সরকার। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এনআরসি কো-অর্ডিনেটর প্রতীক হাজেলা টানা দু’দিন ধরে এনআরসির বিভিন্ন ফাঁক, পাঁচটি প্রামাণ্য নথি বাদ দেওয়ার কারণ ও আবেদনকারীদের তথ্যের কারচুপির বহর তুলে ধরেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব রাজীব গাউবা, দেশের মহাপঞ্জীয়ক (আরজিআই) শৈলেশ, যুগ্মসচিব (উত্তর-পূর্ব) সত্যেন্দ্র গর্গ, দেশের অ্যাটর্নি জেনারেল, সলিসিটার জেনারেল-সহ কেন্দ্র ও রাজ্যের কর্তাদের সামনে।

Advertisement

অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের নাম ঢোকানোর বিভিন্ন পন্থা, ভুয়ো প্রমাণপত্রের রমরমা ও রাজ্য সরকারের হাতে প্রামাণ্য নথির অভাব— সব মিলিয়ে হাজেলার ওই পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশন দেখে চিন্তায় রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রীর আইনি উপদেষ্টা শান্তনু ভরালি বলেছেন, ‘‘হাজেলা আমাদের এমন অনেক বিষয় বুঝিয়েছেন— যা আগে কারও বাইরে থেকে বোঝা সম্ভব ছিল না। এই সমস্যাগুলি মাথায় রেখেই সরকার ৩০ অক্টোবরের হলফনামা তৈরি করবে। রাজ্য সরকার ১৫টি প্রমাণপত্রই বহাল রাখার পক্ষে। কিন্তু ফাঁক ও কারচুপির বিষয়গুলি ফের যাচাই করা ও খতিয়ে দেখা দরকার।’’

টাকার বিনিময়ে কী ভাবে ভুয়ো ভোটার তালিকা ও অন্যান্য নথি তৈরি হচ্ছে— সুপ্রিম কোর্টে জমা দেওয়া রিপোর্টেও তা বিস্তারিত জানিয়েছেন হাজেলা। রাজ্যের হাতে ১৯৫১ সালের পূর্ণাঙ্গ নাগরিকপঞ্জি ও ১৯৭১ সালের আগে সব বছরের পূর্ণাঙ্গ ভোটার তালিকা নেই। সেই সুযোগই নিচ্ছে দালালরা। ৮ থেকে ১১ হাজার টাকার বিনিময়ে তৈরি হচ্ছে শরণার্থী সার্টিফিকেট, ভুয়ো সচিত্র পরিচয়পত্র।

Advertisement

সরকারি সূত্রের খবর, সুপ্রিম কোর্ট খসড়া এনআরসির ১০ শতাংশ রি-ভেরিফিকেশনের নির্দেশ দিলেও তা পর্যাপ্ত নয়। পাঁচটি প্রমাণপত্র বাদ রাখা নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যকে তাদের বক্তব্য ৩০ অক্টোবরের মধ্যে জমা দিতে বলেছিল সুপ্রিম কোর্ট। সরকার সম্ভবত সেই মতামতের পাশাপাশি বিভিন্ন সংবেদনশীল এলাকায় খসড়া তালিকা ও প্রমাণপত্রগুলি ফের যাচাইয়ের জন্যও সুপ্রিম কোর্টে অতিরিক্ত আবেদনপত্র জমা দেবে। সে ক্ষেত্রে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে চূড়ান্ত নাগরিকপঞ্জি প্রকাশিত হওয়ার সম্ভাবনা কমবে।

হাজেলা কেন্দ্র ও রাজ্যের কর্তাদের বিশদে এনআরসি প্রক্রিয়া, তার ডিজিটাইজেশন প্রক্রিয়া, তথ্য ও নথি যাচাই প্রক্রিয়া বোঝান। জানান, কয়েকটি ক্ষেত্রে জালিয়াতি ধরা গেলেও ফাঁক গলে অবৈধ আবেদনকারীদের নাম থেকে যাওয়া অসম্ভব নয়। সে ক্ষেত্রে এনআরসির প্রকৃত উদ্দেশ্য মার খাবে। ভোটার তথ্য যাচাই ও ডি-ভোটারের নাম বাদ দেওয়ার ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনে ব্যবহৃত এরোনেট সফটওয়্যারেও বিস্তর খামতি রয়েছে। আছে আরও আরও কিছু প্রযুক্তিগত সমস্যা। সেগুলিও সুপ্রিম কোর্টকে জানাবে রাজ্য সরকার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন