অ্যাম্বুল্যান্স চালক এক বাঙালি যুবককে সন্দেহভাজন এনডিএফবি (সংবিজিত) গোষ্ঠীর জঙ্গিরা অপহরণের পরে খুন করেছে বলে অভিযোগ। তার প্রতিবাদে ‘সারা অসম বাঙালি যুব ছাত্র ফেডারেশনের ডাকা ২৪ ঘন্টা নামনি অসম বনধের জেরে সোমবার বিপর্যস্ত হয়ে পড়ল ধুবুরি,স্তেকাকরাঝাড় এবং বঙ্গাইগাঁও জেলার জনজীবন।
সোমবার ভোর ৫টা থেকে মঙ্গলবার ভোর ৫টা পর্যন্ত বনধের ডাক দেওয়া হয়েছে। ফলে এ দিন অসম-বাংলার যোগাযোগ স্তব্ধ হয়ে যায়। শ্রীরামপুর এবং ছাগলিয়ায় কয়েকশো ট্রাক আটকে পরে। ধুবুরি শহরে ওই বন্ধে-র প্রভাব পড়েনি।
গত ২৩ নভেম্বর রাতে বঙ্গাইগাঁও শহরের মহাবীরস্থান এলাকার বাসিন্দা তথা পেশায় বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স চালক চিরঞ্জীব দে (২২) নামে এক যুবককে অপহরণ করা হয়। চিরাং জেলার রুনিখাটার শান্তিপুর এলাকায় তাকে ফোন করে ডেকে নিয়ে যায় সন্দেহভাজন দুষ্কৃতীরা। এনডিএফবি (এস)-র জঙ্গিদের নাম করে ৬০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ চেয়ে ওই যুবকের বাড়িতে ফোন করে। অপহরণকারীরা মুক্তিপণ না দিলে চিরঞ্জীববাবুকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।
চিরাং জেলার রুনিখাটা থানায় এফআইআর করেন পরিবারের লোকেরা। এরই মধ্যে মুক্তিপণ চেয়ে অপহরণকারীরা দফায় দফায় ফোন করে চিরঞ্জীব বাবুর বাড়িতে। শুরু হয় দর কষাকষি। পরে ৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ ধার্য করে অপহরণকারীরা। কিন্ত অতি দরিদ্র ওই পরিবারটি ১ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দিতে রাজি হয়। অপহরণকারীদের সঙ্গে দর কষাকষি চলতে থাকার মাঝেই রবিবার ভোরে চিরাং জেলার রুনিখাটা থানা এলাকার মদাতি গ্রামের কাছে চম্পা নদীর পারে গুলি করে খুন করে মৃতদেহ ফেলে রাখে দুষ্কৃতীরা। মৃতের পরিবারকে ফোন করে সেই খবর জানিয়েও দেয় অপহরণকারীরা।
এর পরেই বঙ্গাইগাঁও জেলার পুলিশ গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে। ঘটনার প্রতিবাদে রবিবার বিকেলে বঙ্গাইগাঁও শহরে পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ করে সারা অসম বাঙালি যুব ছাত্র ফেডারেশনের বঙ্গাইগাঁও জেলা কমিটির সদস্যরা। এক জন নিরীহ দরিদ্র পরিবারের যুবককে এ ভাবে খুন করার প্রতিবাদে সোমবার ২৪ ঘন্টা নামনি অসম বনধের ডাক দেয় ‘সারা অসম বাঙালি যুব ছাত্র ফেডারেশন’। সারা অসম বাঙালি যুব ছাত্র ফেডারেশের বঙ্গাইগাঁও জেলা কমিটির সভাপতি সম্রাট ভাওয়াল বলেন, “বড়োভুমিতে চলতে থাকা অপহরণ, হুমকি দিয়ে টাকা তোলা, হত্যা-হিংসা বন্ধের দাবি জানাচ্ছি। মৃতের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি করছি।” ধুবুরি জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দেবাশিস বরা এবং কোকরাঝাড় জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুরজিত সিং পানেশ্বর জানান, বঙ্গাইগাঁও জেলর বিভিন্ন এলাকা থেকে মোট ৫০ জন বন্ধ সমর্থনকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।