শপথ নিয়েছেন একা মুখ্যমন্ত্রী। বাকি মন্ত্রীদের শপথ পরে। ফলে মন্ত্রিসভার বৈঠকেরও প্রশ্ন নেই। কিন্তু চাষিদের ঋণ মকুবের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে দিলেন মধ্যপ্রদেশের নতুন মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথ। ভোট-প্রচারে দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, শপথের পরেই ঋণ মকুবের ফাইলে সই করেন তিনি। জারি হয়ে যায় সরকারি নির্দেশিকাও।
কমল নাথের ঘোষণার পরেই কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী জানান, রাজস্থান, ছত্তীসগঢ়েও কৃষিঋণ মকুব হতে চলেছে। এ দিন রাতেই ঋণ মকুবের ঘোষণা করেন ছত্তীসগঢ়ের নয়া মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বঘেল।
কিন্তু এর আর্থিক দায় রাজ্যগুলি কী ভাবে সামলাবে? রঘুরাম রাজনের মতো অর্থনীতিবিদদের যুক্তি, এতে চাষিদের ধার শোধের অভ্যাস চলে যেতে পারে। কিন্তু কমল নাথের যুক্তি, ‘‘ধনী শিল্পপতিদের ঋণ মকুব করা গেলে চাষিদের ঋণ মাফও সম্ভব।’’
ব্যাঙ্কগুলির হিসেব, মধ্যপ্রদেশে চাষিদের প্রায় ৭৫ হাজার কোটি টাকার ঋণ বকেয়া রয়েছে। আজ কমল নাথ ২০১৮-র ৩১ মার্চ পর্যন্ত নেওয়া ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত স্বল্পমেয়াদি ঋণ মকুবের সিদ্ধান্ত নেন। যোগ্যতার অন্যান্য মাপকাঠিও পরে ঠিক হবে। ফলে আসলে কত টাকার বোঝা, তা পরেই স্পষ্ট হবে। কিন্তু গত বছরের সরকারি হিসেব বলছে, রাজ্যের ঋণের পরিমাণ ১ লক্ষ ৬০ হাজার কোটি টাকা। কৃষিঋণ মকুবের ফলে ৫০ হাজার কোটি টাকার অতিরিক্ত দায় চাপতে পারে বলে অনুমান।
রাজস্থানেরও প্রায় ৩ লক্ষ কোটি টাকার ঋণ রয়েছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গত বছরের সমীক্ষা অনুযায়ী, সে রাজ্যে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ মকুব করতে ২২ হাজার কোটির অতিরিক্ত দায় নিতে হবে। তবে ছত্তীসগঢ়ের দায় কম। মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকেই ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত নেওয়া ঋণ মকুবের সিদ্ধান্ত নেন বঘেল। বলা হয়েছে, ফলে ১৬ লক্ষ ৬৫ হাজার চাষি উপকৃত হবেন। রাজ্যকে ঘাড়ে পড়বে ৬১০০ কোটি টাকার বাড়তি দায়।
এই বিপুল আর্থিক দায়ের জন্যই মোদী সরকার ঋণ মকুব করেনি। এখন বিজেপির ছক, মধ্যপ্রদেশে কেন ৩১ মার্চ পর্যন্ত ঋণ মকুব করা হল, সেই প্রশ্ন তুলে ১৫ দিন পরেই দলের সমর্থক চাষিদের মাঠে নামানো।