শিবরাজের তরী বাঁচবে তো? ভোটের চিন্তায় স্বস্তিতে নেই অমিত

এই ছ’ভাগেই ভাগ করা হয় মধ্যপ্রদেশকে। বিজেপি নেতারাই বলছেন, মালওয়া আর মধ্য ভারতের ৯০টির বেশি আসনে বিজেপি যদি ৫০টির বেশি পেতে না পারে, তা হলে রাজ্য হাতছাড়া! কেন? চম্বলে বিজেপির লোকসান, মহাকোশলে অল্প এগিয়ে থাকার সম্ভাবনা আর বিন্ধ্যে সেয়ানে-সেয়ানে লড়াই। ফলে রাজ্য ধরে রাখতে হলে বাকি দুই অঞ্চলই ভরসা। সেখানেও তীব্র অসন্তোষ বিজেপির বিরুদ্ধে।

Advertisement

দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০১৮ ০৪:৫৮
Share:

ভোট-পথে: জবলপুরে মঙ্গলবার। পিটিআই

রাত বারোটায় থানার উল্টো দিকে বসে রাবড়ি খাচ্ছেন অমিত শাহ। তাঁর নাকি ‘হাই সুগার’! কিন্তু ভোটের চিন্তা একেবারেই স্বস্তিতে রাখেনি।

Advertisement

কেন? কারণ মধ্যপ্রদেশ বাঁচলে তবেই লোকসভায় নরেন্দ্র মোদীর হাত শক্ত হবে। তাই প্রচার শেষের এক রাত আগেই পথে নামতে হয়েছে অমিতকে। কাল সকাল হতেই ইনদওরে রোড-শো করেছেন। আজ মধ্যপ্রদেশ লাগোয়া রাজস্থানেই ঘোরাফেরা করেছেন।

এই ঘুরপাক মূলত মধ্যপ্রদেশের মালওয়া অঞ্চলের আশেপাশে। চম্বল, বুন্দেলখণ্ড, মধ্য ভারত, মহাকোশল, বিন্ধ্য আর মালওয়া— এই ছ’ভাগেই ভাগ করা হয় মধ্যপ্রদেশকে। বিজেপি নেতারাই বলছেন, মালওয়া আর মধ্য ভারতের ৯০টির বেশি আসনে বিজেপি যদি ৫০টির বেশি পেতে না পারে, তা হলে রাজ্য হাতছাড়া! কেন? চম্বলে বিজেপির লোকসান, মহাকোশলে অল্প এগিয়ে থাকার সম্ভাবনা আর বিন্ধ্যে সেয়ানে-সেয়ানে লড়াই। ফলে রাজ্য ধরে রাখতে হলে বাকি দুই অঞ্চলই ভরসা। সেখানেও তীব্র অসন্তোষ বিজেপির বিরুদ্ধে।

Advertisement

আরও পড়ুন: গোত্র জানালেন রাহুল, বিপাকে বিজেপি-ই

গত বার রাজ্যের ২৩০টি আসনের মধ্যে ১৬৫টি ছিল বিজেপির দখলে। কংগ্রেসের ৫৮। কিন্তু ভোটের ব্যবধান ছিল ৯ শতাংশ। ৪-৫ শতাংশ ভোট এদিক-ওদিক হলেই রং বদলাবে। ১৫ বছরের ক্ষমতার ক্লান্তি আর রাহুল গাঁধীর দলের দাপট— ‘ফিনিশিং লাইন’ পেরোনোই বড় চ্যালেঞ্জ শিবরাজ সিংহ চৌহানের। সাম্প্রতিক সমীক্ষাগুলির ইঙ্গিত, টায়েটোয়ে পাশ করতে পারেন শিবরাজ। জিতলেও গুজরাতের মতো হাল হবে। আর দুই দলের ব্যবধান থাকবে ১ শতাংশ।

কমল নাথ বলছেন, ‘‘দেওয়াল লিখন স্পষ্ট। ‘মামা’র তখ্‌ত বদলাচ্ছে।’’ ‘মামা’ শিবরাজ বলছেন, ‘‘কংগ্রেস কুর্সি বদলের কথা বলছে। আমি বলছি মানুষের ভাগ্য বদলের কথা।’’ রাহুলও আজ বিবৃতিতে বলেন, ‘‘মধ্যপ্রদেশ আমার কাছে এক রাজ্যের নাম নয়। কৃষকের ইচ্ছাশক্তি, মেয়েদের শক্তি, যুবকদের আশা আর গরিবদের জয়ের নাম।’’ দু’পাতার বিবৃতিতে শিবরাজ সরকারের খামতিগুলি মেলে ধরেছেন, ক্ষমতায় এলে কংগ্রেস কী করবে তা-ও জানিয়েছেন।

আরও পড়ুন: ইস্তাহারে কল্পতরু বসুন্ধরা​

কিন্তু ঘরোয়া মহলে কংগ্রেস নেতারা মানছেন, মধ্যপ্রদেশে জিতলে মানুষই জেতাবেন। হারলে হারাবে সাংগঠনিক শক্তি। জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, কমল নাথ, দিগ্বিজয় সিংহ থেকে সুরেশ পচৌরি। কংগ্রেসের অনেক মাথা। রাহুল গাঁধী তাঁদের একজোট করে ভোটে নামিয়েছেন। কিন্তু সংগঠনে মজবুত বেশি বিজেপি, অর্থবলেও। শেষ দু’দিনে ঘরে-ঘরে আর ভোটের দিন বুথে-বুথে যে বাজি মারতে পারবে, মধ্যপ্রদেশ তারই। কারণ, ভোট হচ্ছে মূলত স্থানীয় ইস্যুতেই। ‘মামা’র বিরুদ্ধে যত না ক্ষোভ, তার থেকেও বেশি ক্ষোভ এলাকার বিধায়কদের বিরুদ্ধে। সেই ক্ষোভকেই ভোটের ঝুলিতে পুরতে হবে কংগ্রেসকে। যে কারণে শেষ দিন প্রচারে যাননি রাহুল। একই কৌশলে দূরে মোদীও।

হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে শেষ হাসি হাসবেন কে? কাল ভোটের পর অপেক্ষা ঠিক দুই সপ্তাহের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন