প্রথম দফায় ফেল চন্দ্রের ‘মহাকুটুমি’

গত বার ছিল পৃথক তেলঙ্গানা রাজ্য গঠনের আবেগ। যা পক্ষে গিয়েছিল কেসিআরের। এ বারে লড়াইটি ছিল তুলনায় কঠিন।

Advertisement

অনমিত্র সেনগুপ্ত

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৩:৫৪
Share:

জয়ের পরে টিআরএস প্রধান চন্দ্রশেখর রাও। ছবি: পিটিআই।

তেলঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতি (টিআরএস)-কে হারাতে কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে মহাজোটের প্রথম পরীক্ষা করতে চেয়েছিলেন তেলুগু দেশম পার্টি (টিডিপি)-র নেতা চন্দ্রবাবু নায়ডু। ঘটা করে নাম দেওয়া হয়েছিল মহাকুটুমি। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের কাছে গো-হারান হারার পরে প্রশ্ন উঠল মহাজোটের রসায়ন নিয়ে। স্থানীয় স্তরে কংগ্রেস নেতৃত্বের আফসোস, এর থেকে একা লড়লে হয়তো বেশি আসন আসত দলের। যদিও কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব, চন্দ্রবাবুকে সূত্রধর করেই জোটকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইছেন। তাঁদের ব্যাখ্যা, মহাকুটুমি এত দেরিতে হয়েছে যে, তৃণমূল স্তর পর্যন্ত তার বার্তা পৌঁছে দেওয়া যায়নি। রাজনীতির লোকজন কিন্তু মনে করছেন, কেসিআর তেলঙ্গানা রাজ্য গঠনের জন্য দীর্ঘদিন লড়েছেন। তাঁর ও তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে স্বজনপোষণ ও দুর্নীতির নানা অভিযোগ উঠলেও রাজ্যের মানুষ তাঁকে আর একটা সুযোগ দিতে চেয়েছেন।

Advertisement

গত বার ছিল পৃথক তেলঙ্গানা রাজ্য গঠনের আবেগ। যা পক্ষে গিয়েছিল কেসিআরের। এ বারে লড়াইটি ছিল তুলনায় কঠিন। কিন্তু ভোটগণনার প্রথম দিনের শেষে দেখা যাচ্ছে, ১১৯ আসনের তেলঙ্গানায় বিরোধীদের ধুয়েমুছে ৮৮টি আসন তাঁর দখলে আসতে চলেছে। গত বারের চেয়ে ২৫টি বেশি। মুখ্যমন্ত্রীর ভাগ্নে হরিশ রাওয়ের কথায়, ‘‘এক দিকে মুখ্যমন্ত্রীর ভাবমূর্তি ও অন্য দিকে উন্নয়ন। যৌথ মেলবন্ধনেই এই সাফল্য।’’ লক্ষ্যণীয় ভাবে, গোড়া থেকেই আসাদুদ্দিন ওয়াইসি ছিলেন কেআরএসের পাশে। এ বারেও ৭টি আসনে জিতে হায়দারাবাদে তাঁর দুর্গও অটুট থাকছে। ফল বেরনোর আগেই তিনি ঘোষণা করে রেখেছেন, সরকার গড়ার জন্য দরকার না পড়লেও তিনি কেসিআরের পাশেই থাকবেন। আর চারটি রাজ্যের মতো তেলঙ্গানাও হতাশ করেছে বিজেপিকে। মাত্র একটি মাত্র আসন পেয়েই তুষ্ট হতে হচ্ছে। ।

তেলঙ্গানায় দাঁত বসাতে না পারলেও কংগ্রেস এখন উচ্ছ্বসিত ছত্তীসগঢ়-মধ্যপ্রদেশ-রাজস্থানে ভাল ফল নিয়ে। যন্ত্রণা বেশি চন্দ্রশেখর নায়ডুর। ২০১৪-তে মনমোহন জমানায় কংগ্রেস অন্ধ্রপ্রদেশ ভাগ করে তেলঙ্গানা গঠনের সিদ্ধান্ত নিলে তখনও তীব্র প্রতিবাদ করেছিলেন চন্দ্রবাবু। কিন্তু ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের কথা মাথায় রেখে এ বার কংগ্রেসের সঙ্গে মহাজোট গড়ে বসেন এনটি রামরাওয়ের জামাই। আশির দশকে কংগ্রেসের বিরোধিতা করেই টিডিপি গড়েছিলেন এনটিআর। তাঁর এ হেন ভোল বদলকে কি ক্ষমা করবেন—এই প্রশ্ন তুলে প্রয়াত এনটিআরের উদ্দেশে এক খোলা চিঠিও লেখেন তাঁর স্ত্রী। নায়ডু এ সব গায়ে মাখেননি। নায়ডু সক্রিয়তা দেখে এগিয়ে আসেন রাহুলও। ঠিক হয় মহাজোটের প্রথম পরীক্ষা হবে তেলঙ্গানায়। তার এই ফল প্রশ্ন তুলে দিল মহাজোটের ভবিষ্যৎ নিয়েও।

Advertisement

আরও পড়ুন: লোকসভা ভোটের ‘ফাইনালে’ মোদীর সঙ্গে টক্করে তৈরি রাহুল

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন