মধ্যপ্রদেশে সাগর জেলায় ভোট শেষ হওয়ার ৪৮ ঘণ্টা পর কালেকশন সেন্টারে পৌঁছেছে ইভিএম। বিজেপির বিরুদ্ধে ভোট কারচুপির অভিযোগ তুলেছে কংগ্রেস। ছবি: পিটিআই।
ইভিএমে ভোট-কারচুপির অভিযোগ বিধানসভা নির্বাচনে উঠেছে বারবারই। এ বার আসন্ন লোকসভা ভোটেও ইভিএমে বড়সড় কারচুপির আশঙ্কা করছে বিজেপি-বিরোধী দলগুলি। সেই আশঙ্কাই সত্যি হল মধ্যপ্রদেশে।ভোটপর্ব চুকেবুকে যাওয়ার ৪৮ ঘণ্টা পরমধ্যপ্রদেশে একটি রেজিস্ট্রেশন প্লেটহীন বাসেকালেকশন সেন্টারে পৌঁছলইভিএম!যার প্রেক্ষিতে বিজেপির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে সরব হয়েছে কংগ্রেস। যদিও টুইট করে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে নির্বাচন কমিশন।ইভিএমে কোনও ভোট-কারচুপি হয়নি বলে জানিয়েছেন মধ্যপ্রদেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার।
বুধবার মধ্যপ্রদেশের ২৩০টি আসনে নির্বাচন হয়েছে।ভোট প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি বুথ থেকে নির্দিষ্ট করে দেওয়া কালেকশন সেন্টারে পৌঁছয় ইভিএম।কিন্তু বিতর্কের সূত্রপাত হয়েছে মধ্যপ্রদেশের সাগর জেলার কালেকশন সেন্টারকে নিয়ে।সেখানে ভোটের ৪৮ ঘণ্টা পর ইভিএমনিয়ে বাস গিয়ে পৌঁছয় নির্দিষ্ট কালেকশন সেন্টারে।
কংগ্রেসের অভিযোগ,অন্যান্য বুথের ইভিএম-গুলি যেখানে ভোট শেষ হওয়ার দিনই কালেকশন সেন্টারে পৌঁছেছিল, সেখানে ওই ইভিএম সেন্টারের বাইরে ছিল এতগুলো ইভিএম। এগুলো খুরাই সিটি পুলিশ স্টেশনে রাখা ছিল বলে জানিয়েছে মধ্যপ্রদেশ কংগ্রেস। কংগ্রেসের আরও অভিযোগ, থানা থেকে বের করেকালেকশন সেন্টারে পাঠানোর আগে মধ্যপ্রদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ভূপেন্দ্র সিংহের একটি হোটেলেও ইভিএমগুলোকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
আরও পড়ুন: রানির গদি ওল্টাতে রানিই ভরসা কংগ্রেসের, ভয়ও তাঁর ‘সম্মোহনী’ ক্ষমতাকেই
যে কেন্দ্রে এই ইভিএম কারচুপির অভিযোগ তুলেছে কংগ্রেস, সেই খুরাই কেন্দ্রে প্রার্থী স্বয়ং মধ্যপ্রদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীতথা বিজেপির বিধায়ক ভূপেন্দ্র সিংহ। তাঁর মূল প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেসের অরুণোদয় চৌবে।কংগ্রেসের অভিযোগ,চৌবেকে হারানোর জন্য ইভিএমে কারচুপি করতেই এই সব কাণ্ড ঘটিয়েছে বিজেপি।
রেজিস্ট্রেশন প্লেটহীন বাসে এইভাবেই কালেকশন সেন্টারে এসে পৌঁছয় ইভিএম। এই ভিডিয়ো ঘিরেই ছড়িয়েছে বিতর্ক।
শুক্রবার এ ব্যাপারে তদন্তের দাবিতে মধ্যপ্রদেশের সাগরের কালেকশন সেন্টারের সামনে বিক্ষোভ দেখান কয়েকশো কংগ্রেস সমর্থক।মধ্যপ্রদেশ কংগ্রেস টুইট করেছে,‘ভোটের ৪৮ ঘণ্টা পরেস্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এলাকায় কোনওরকমরেজিস্ট্রেশন প্লেট ছাড়া একটি বাস এতগুলোইভিএম জমা করেছে। জয় নিশ্চিত করতে এটা কি বিজেপির কোনও কৌশল?’
আরও পড়ুন: ৮.৫ তীব্রতার ভূমিকম্পে টালমাটাল হবে হিমালয়! মহাপ্রলয়ের সতর্কবার্তা বিজ্ঞানীদের
কংগ্রেসের অভিযোগ নিয়ে বিজেপি আলাদা করে কিছু বলেনি। বিজেপির তরফে শুধু জানানো হয়েছে, সঠিক সময়ে সঠিক জায়গায় ইভিএম পৌঁছনো নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব। এটা নিয়ে অহেতুক বিতর্কে জড়াতে চায় না তারা।
মধ্যপ্রদেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার অবশ্য ইভিএম কারচুপির সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি টুইট করেছেন,‘আপৎকালীন পরিস্থিতির জন্য কয়েকটি ইভিএম নিকটবর্তী থানায় জমা রাখা হয়। ভোট হওয়া ইভিএম থেকে এগুলোকে আলাদা করা থাকে। এই রকম ৩৪টি ইভিএম রয়েছে।প্রতিটা ইভিএমের আলাদা কোড নম্বরও রয়েছে। কোড নম্বরগুলো প্রতিটা রাজনৈতিক দলকেই জানানো থাকে। এই ইভিএমগুলোর কোড নম্বর সাগর জেলায় ভোট হওয়া ইভিএমের সঙ্গে মেলেনি।’
কিন্তু এই ইভিএমগুলো এত দেরিতে কেন কালেকশন সেন্টারে এসে পৌঁছল এবং তা প্রকৃতই বিজেপি মন্ত্রীর হোটেলে ছিল কি না তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি নির্বাচন কমিশন।