রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠকের পরে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া ও কমল নাথ। ভোপালে। ছবি: পিটিআই।
মধ্যপ্রদেশে কমল নাথ, রাজস্থানে অশোক গহলৌত আর ছত্তীসগঢ়ে ভূপেশ বাঘেল। এই তিন জনকে মুখ্যমন্ত্রী করার বার্তা নিয়ে কংগ্রেস নেতারা আজ দিল্লি থেকে তিন রাজ্যে গিয়ে বৈঠকে বসলেন। কিন্তু পরিস্থিতি দেখে তিন রাজ্যেরই ঘোষণার ভার রাহুল গাঁধীর হাতে ছেড়ে দিয়ে দিল্লি ফিরে এলেন দলের তিন কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক। রাহুল ইতিমধ্যেই তিন রাজ্যের বিধায়ক ও নেতাদের গোপন মতামত জেনে নিয়েছেন ‘শক্তি’ অ্যাপের মাধ্যমে।
তিন রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী স্থির করতে কোনও সমস্যা হবে না বলে কাল দাবি করেছিলেন রাহুল। মুখ্যমন্ত্রী বাছতে আজ তিন রাজ্যেই বিধায়ক দলের বৈঠক হয়। দিল্লি থেকে পর্যবেক্ষক হিসেবে যান মল্লিকার্জুন খড়্গে, এ কে অ্যান্টনি এবং কে সি বেণুগোপাল। কিন্তু রাজস্থানে সচিন পাইলট, মধ্যপ্রদেশে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, ছত্তীসগঢ়ের অন্য তিন নেতা টি এস সিংহদেও, তাম্রধ্বজ সাহু এবং চরণদাস মহন্তর অনুগামীরাও মুখ্যমন্ত্রিত্বের দাবিতে সরব হওয়ায় নাম চূড়ান্ত করার দায়িত্ব গেল দলের সভাপতিরই হাতে।
দলীয় সূত্রের খবর, রাজস্থানের বৈঠকে অধিকাংশ বিধায়ক চেয়েছেন গহলৌতকেই। দল গরিষ্ঠতার দোরগোড়ায় এসে থমকেছে। মায়াবতী-অখিলেশের সমর্থন পেলেও নির্দলদেরও পাশে রাখছে কংগ্রেস। নির্দলদের আট জনই আবার গহলৌত-ঘনিষ্ঠ। তাঁরাও চান গহলৌতকে। কিন্তু সচিন মানেননি। কংগ্রেস দফতরের বাইরে তাঁর সমর্থকদের সঙ্গে গহলৌতের সমর্থকদের বিবাদ বেধে যায়। পুলিশও ডাকতে হয়। পর্যবেক্ষক বেণুগোপাল বিধায়কদের মত নিয়ে সচিন এবং সিপি জোশীর মতো কাউকে উপমুখ্যমন্ত্রী করার প্রস্তাব দেন। সচিন তা-ও খারিজ করেছেন। কমল কাল দিল্লি এসে রাহুলের সঙ্গে দেখা করতে পারেন। দিল্লি আসছেন জ্যোতিরাদিত্যও, অ্যান্টনির সঙ্গে বিশেষ বিমানে। কাল ও আজ হাবেভাবে বারবারই বুঝিয়ে দিয়েছেন, মধ্যপ্রদেশের কুর্সি চান তিনি। আজ বিধায়ক দলের বৈঠকের আগে হোটেলে নিজের অনুগামী বিধায়কদের নিয়ে এক দফা বৈঠকও সেরে আসেন। যদিও দিল্লিতে দলের এক নেতা বললেন, ‘‘ভোট হয়েছে কমল নাথের জোরে। নেপথ্যে ছিলেন দিগ্বিজয় সিংহও। সিন্ধিয়ার সাংগঠনিক অভিজ্ঞতাই নেই তেমন। যে কারণে দিল্লি থেকে সিন্ধিয়াকেই কমলের নাম প্রস্তাব করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।’’ ছত্তীসগঢ় থেকে ফেরার পথে খড়্গে জানান, ‘‘বিবাদ নেই। বিধায়কদের মধ্যে থেকে যে যে নাম উঠেছে, তার ভিত্তিতেই রাহুল সিদ্ধান্ত নেবেন।’’ তেলঙ্গানায় টিআরএসের কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের শপথ কাল। মিজোরামে জোরাম থাঙ্গার শপথ নেবেন শনিবার।
বিজেপির বাকি দুই মুখ্যমন্ত্রীর মতো শিবরাজ সিংহ চৌহানও নিজের ঘাড়ে হারের দায় নিয়ে আজ সকালে মুখ্যমন্ত্রীর পদে ইস্তফা দেন। অভিনন্দন জানান কমল নাথকে। বলেন, ‘‘এ বার আমি মুক্ত।’’ পরে কমলও তাঁর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। শেষ পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়েও ব্যর্থ। তবু যে ভাবে শিষ্টতার সঙ্গে, রাজনৈতিক তিক্ততা না-রেখে পদ ছাড়লেন শিবরাজ— কংগ্রেসের লোকজনই তার প্রশংসায় বলছেন, বিজেপিতে এটা বিরল। খোঁচাটা মোদীকেই!