ভোপালের একটি স্ট্রং রুম থেকে গণনাকেন্দ্রে ইভিএম নিয়ে যাচ্ছেন গণনাকর্মীরা। ছবি: এএফপি
চার রাজ্যের ভোটগণনার ফল ঘোষণা হয়ে গিয়েছিল মঙ্গলবার বিকেলের মধ্যেই। কিন্তু মধ্যপ্রদেশের চূড়ান্ত ফল আসতে পেরিয়ে গেল ২৪ ঘণ্টা। জানা গেল বুধবার সকাল আটটা নাগাদ। একই সঙ্গে ভোটগণনা শুরু হলেও মধ্যপ্রদেশে কেন এত দেরি? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়েই উঠে এসেছে ভিভিপ্যাটের প্রসঙ্গ। নতুন এই প্রযুক্তি এবারই প্রথম চালু করেছে নির্বাচন কমিশন। এবং সেটা শুরু হয়েছে মধ্যপ্রদেশ দিয়ে। মনে করা হচ্ছে গণনায় দেরির প্রধান কারণ এই ভিভিপ্যাট-ই।
ভিভিপ্যাট কি? পুরো নাম ভোটার ভেরিফাইঅ্যাবল পেপার অডিট ট্রেল বা সংক্ষেপে ভিভিপ্যাট। সাধারণ ভাবে বলা যায়, এটি আসলে ব্যালট এবং ইভিএম একসঙ্গে দুই পদ্ধতিতে ভোট নেওয়ার প্রক্রিয়া। এই প্রযুক্তিতে ইভিএম-এর সঙ্গে যুক্ত থাকে একটি ভিভিপ্যাট যন্ত্র। ভোট দেওয়ার পর সেই যন্ত্র থেকে বেরিয়ে আসে একটি স্লিপ। সেটি ভোটার হাতে পান। তার পর সেটি মিলিয়ে দেখে নেন, তিনি যে ভোট দিয়েছেন, সেটি গৃহীত হয়েছে কিনা এবং যাঁকে ভোট দিতে চেয়েছেন, তিনিই পেয়েছেন কিনা। তার পর সেই স্লিপটি একটি বাক্সে জমা করা হয়, যেমন ভাবে এখনও পঞ্চায়েত ও পুরভোটে ব্যালট পেপার জমা দেওয়া হয়।
এবার গণনার পালা। যেহেতু ইভিএম এবং ব্যালটের মতো ভোটগ্রহণ, তাই গণনায় হয় দুই ধাপে। প্রথমে ইভিএম-এ প্রার্থী ধরে ধরে মোট প্রাপ্ত ভোটের যোগফল বের করা হয়। তাতে বেশি সময় লাগে না। কারণ পদ্ধতিটি যান্ত্রিক। একটি বুথের ইভিএম-এ কোনও প্রার্থীর মোট প্রাপ্ত ভোট কত, তা একটি সুইচ টিপেই বের করে নেওয়া যায়। সেটা ম্যানুয়ালি হিসেব রাখা হয়।
ইভিএম-এর সঙ্গে যুক্ত ভিভিপ্যাট যন্ত্র। —ফাইল চিত্র
দ্বিতীয় ধাপে গণনা করা হয় ব্যালটের মতো। অর্থাৎ ওই ভিভিপ্যাটের বাক্স খুলে প্রতিটি প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোট আলাদা করা হয়। তারপর সেগুলি হাতে হাতে গুণে মোট প্রাপ্ত ভোট বের করতে হয় গণনাকর্মীদের। ইভিএম এবং ভিভিপ্যাটের হিসেব মিলে গেলে তবেই চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করা হয়। আর না মিললে, ফের গণনা। কোনও কারচুপি না হলে ওই হিসেব মিলতে বাধ্য।
আরও পডু়ন: মধ্যপ্রদেশে চূড়ান্ত ফল ঘোষণা হতেই সমর্থন মায়াবতীর, সরকার গড়ছে কংগ্রেস
ভোট পর্যবেক্ষকদের মতে, ভোট গণনায় দেরির কারণ এই জটিল পদ্ধতিই। যদিও পর্যবেক্ষকদের একটি অংশ এও মনে করছেন, প্রথমবার এই প্রক্রিয়া চালু হওয়ায় অত্যধিক দেরি হয়েছে। পরের ভোটগুলিতে হয়তো গণনার সময় কিছুটা কমবে। নির্বাচন কমিশনের একটি সূত্র জানিয়েছে, নতুন এই পদ্ধতি সময়সাপেক্ষ হলেও এত দেরি হওয়ার কথা নয়।
আরও পড়ুন: ‘আব কি বার খো দি সরকার’, মোদীকে খোঁচা অখিলেশের
ভোটগ্রহণ ও গণনার প্রক্রিয়ায় আরও স্বচ্ছতা আনতে নতুন এই পদ্ধতি এবারই প্রথম মধ্যপ্রদেশে চালু করে নির্বাচন কমিশন। রাজ্যের অধিকাংশ বুথেই এই প্রক্রিয়ায় ভোট নেওয়া হয়, অর্থাৎ প্রায় প্রতিটি বুথেই ইভিএম-এর সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছিল এই ভিভিপ্যাট যন্ত্র।