সামগ্রিক ভাবে এই বিধানসভার ফলাফলকে ‘বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভের প্রতিফলন’ বলেই বর্ণনা করেছে সিপিএমের পলিটব্যুরো। —ফাইল চিত্র।
একই সঙ্গে স্বস্তি এবং অস্বস্তি! পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোটের ফল থেকে দুই-ই প্রাপ্তি বামেদের!
বিজেপির বিপর্যয়ের আবহে দুই রাজ্যে চারটি বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হয়েছে বামেরা। তাদের এই জয় এসেছে কংগ্রেসের সঙ্গে কোনও সমঝোতা ছাড়াই। এবং তার পরেই আবার বিতর্ক ঘনিয়ে উঠতে শুরু করেছে, এর পরে লোকসভা নির্বাচনেও কি একক শক্তির উপরেই ভরসা রাখা হবে? নাকি দেশে ধর্মনিরপেক্ষ সরকার গড়ার প্রশ্নে কংগ্রেসের হাত ধরা ছাড়া কোনও পথ খোলা থাকবে না?
রাজস্থানে এ বার দু’টি আসন ঘরে তুলেছে সিপিএম। ভদরা আসন থেকে জিতেছেন সাম্প্রতিক ‘কিষাণ লং মার্চে’র অন্যতম মুখ বলবন পুনিয়া। শ্রীদুঙ্গরগড় কেন্দ্রে জয়ী হয়েছেন গিরধারী লাল মাহিয়া। ওই রাজ্যেরই ধোড আসনে পেমা রাম এবং রাইসিননগর আসনে শোয়াপত রাম মেঘাওয়াল দ্বিতীয় স্থান পেয়েছেন। কৃষক সভার সর্বভারতীয় সভাপতি অমরা রাম তাঁর কেন্দ্রে পেয়েছেন ৪২ হাজার ৫৪৩ ভোট।
দক্ষিণের তেলঙ্গানায় ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রার্থী করুকান্তি চন্দর পটেল জয়ী হয়েছেন রামগুন্ডম আসনে। ফ ব-রই জি সত্যনারায়ণ রাও ভুপালপাল্লে কেন্দ্রে টিআরএস প্রার্থীর পরে দ্বিতীয় স্থানে শেষ করেছেন। টেকনিক্যাল সমস্যায় দলীয় প্রতীক না পেয়ে নির্দল প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ওঅ রাজ্যেরই অন্য একটি আসনে জয়ী হয়েছেন ফব-র আর এক জন।
সামগ্রিক ভাবে এই বিধানসভার ফলাফলকে ‘বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভের প্রতিফলন’ বলেই বর্ণনা করেছে সিপিএমের পলিটব্যুরো। তাদের মতে, কৃষক, শ্রমিক-সহ নানা অংশের মানুষের দুর্দশার দিকে নজর না দিয়ে বিজেপি ধর্ম এবং জাতপাত নিয়ে মেরুকরণের চেষ্টা চালিয়েছে। তার জবাব ভোটে মানুষ দিয়েছেন। এর পরে যারা ওই সব রাজ্যে সরকার গড়বে তাদের প্রকৃত সমস্যা সমাধানে উদ্যোগী হওয়ার পাশাপাশি সামাজিক সংহতি জন্যও তৎপর হতে হবে বলে ডাক দিয়েছে পলিটব্যুরো।
কিন্তু ঘটনা হল, রাজস্থানে কংগ্রেস আসন সমঝোতায় দরাজ ছিল না— এই অভিযোগ করেই সেখানে আলাদা লড়েছিল সিপিএম। প্রকাশ কারাট-সহ দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের একাংশের মত, রাজস্থানে বিজেপির চড়া হিন্দুত্ব এবং কংগ্রেসের নরম হিন্দুত্বের মোকাবিলা করেই তাঁদের প্রার্থীরা ভোট পেয়েছেন। এমতাবস্থায় দিল্লিতে ১৪ ডিসেম্বর থেকে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির আসন্ন বৈঠকে ফের ঝড় উঠতে পারে। অন্য দিকে, ফ ব-র অবস্থান ঘোষিত ভাবেই কংগ্রেস-বিরোধী। তেলঙ্গানায় কংগ্রেস তো বটেই, বহুজন বামফ্রন্টেও তারা ছিল না। একলা লড়ে আসন জয়ের পরে কলকাতায় আজ, বুধবার থেকে ফ ব-র পার্টি কংগ্রেসেও বিতর্ক ঘনীভূত হবে!