ভোটের মুখে শরণার্থীদের নাগরিকত্ব ইস্যুতে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে দায়ের করা মামলা ভোটের মুখে প্রত্যাহার করে নিয়েছে সারা অসম ছাত্র সংস্থা (আসু)। অভিযোগ উঠেছে, বিজেপির সঙ্গে বোঝাবুঝি করে চলছে অসমের প্রধান ছাত্র সংগঠনটি। আসু অবশ্য এ-সব কথা উড়িয়ে দিয়ে জানিয়ে রেখেছে, ১৯৭১ সালের পর আসা কোনও বিদেশিকে নাগরিকত্ব দেওয়া চলবে না। গত বছরের ৭ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক বিজ্ঞপ্তি জারি করে বলে, বাংলাদেশ বা পাকিস্তান থেকে যে সব হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, জৈন সম্প্রদায়ের মানুষ ধর্মীয় নির্যাতনের দরুন ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভারতে আশ্রয় নিয়েছে, তাদের বিতাড়ন করা হবে না। সঙ্গে যোগ করা হয়েছে, ওইসব শরণার্থীদের নাগরিকত্ব প্রদানের কথা কেন্দ্র বিবেচনা করে চলেছে। এরই প্রতিবাদে সুপ্রিম কোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করেছিল আসু।
তাদের যুক্তি, এই বিজ্ঞপ্তি অসম চুক্তির বিরোধী। অসম চুক্তিতে ১৯৭১-র আগে থেকে যারা অসমে রয়েছেন, তাঁরাই ভারতীয় নাগরিক বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া, ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে কোনও বিশেষ ধর্মের লোকেদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা হতে পারে না।
ওইসব যুক্তিকে নিজেরাই আজ দুর্বল বলে উল্লেখ করে মামলাটি প্রত্যাহার করে নিয়েছে। আসুর কেন্দ্রীয় সভাপতি দীপঙ্কর নাথ বলেন, কেন্দ্রের বিজ্ঞপ্তির পর ওই কথাগুলি শেষপর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টে না-টেঁকার আশঙ্কা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আদালতে মামলাটি খারিজ হয়ে যেতে পারে। তখন অসমের বিদেশি সমস্যা নিয়ে অন্য যে মামলা চলছে, তাও প্রভাবিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাঁর দাবি, সে সব বিবেচনা করেই তাঁরা বিজ্ঞপ্তি নিয়ে চ্যালেঞ্জের রাস্তা থেকে সরে এসেছেন। মূল মামলা জিতে গেলে বিজ্ঞপ্তি এমনিতেই বাতিল হয়ে যাবে বলে জানান দীপঙ্কর।
এই মামলা খারিজের জন্য বিজেপির সঙ্গে গোপন বোঝাপড়ার অভিযোগ এনে রাজ্য রাজনীতিতে হাওয়া গরম করে তুলেছে বিভিন্ন সংগঠন। এআইইউডিএফ, সিপিএম, লাচিত সেনা-র অভিযোগ, ভোটের আগে রাজনৈতিক স্বার্থেই আসু মামলাটি তুলে নিয়েছে। লাচিত সেনা হুঁশিয়ারি দিয়েছে, কোনওভাবেই তাঁরা ১৯৭১-র আসা বিদেশিদের অসমে থাকতে দেবেন না।
আসুর সভাপতি তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ খারিজ করে দিয়ে বলেন, তাঁরা বিদেশিদের প্রতি দুর্বল মনোভাবাপন্ন হওয়ার কোনও কারণ নেই। শুধু বিদেশি সংক্রান্ত মূল মামলাটি যেন প্রভাবিত না-হয়, সে জন্য তারা বিজ্ঞপ্তির চ্যালেঞ্জ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। বিদেশি ইস্যুতে আসু কোনও আপস করবে না, জোর দিয়েই শুনিয়ে দেন দীপঙ্কর।