দুমড়ে-মুচড়ে: পুরী-হরিদ্বার কলিঙ্গ-উৎকল এক্সপ্রেসের লাইনচ্যুত কামরা। জখম অন্তত ৪০। শনিবার মুজফ্ফরনগরের খতৌলীতে। ছবি: পিটিআই।
কানপুরের পরে মুজফফ্রনগরের কাছে খতৌলী। আবার বড়সড় রেল দুর্ঘটনা উত্তরপ্রদেশে। পুরী-হরিদ্বার কলিঙ্গ-উৎকল এক্সপ্রেসের ২৩টি কামরার মধ্যে ১৪টি আজ সেখানে ছিটকে যায় লাইন থেকে। সরকারি সূত্রে এ পর্যন্ত ২৩ জনের মৃত্যুর কথা জানানো হয়েছে। স্থানীয়দের মতে, মৃতের সংখ্যা ৪০। আহত অন্তত ৪০ জন। দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে এ বারেও উঠে আসছে চালক বা মেরামতির গাফিলতি, আর নাশকতার তত্ত্ব। প্রতিটি দুর্ঘটনার পরেই মন্ত্রী-নেতারা সুরক্ষার উপরে জোর দেওয়ার কথা বলে থাকেন। ব্যতিক্রম হয়নি এ বারেও। সুরক্ষার প্রশ্নে সুরেশ প্রভুর রেল যে খুব একটা এগোয়নি, আজ প্রমাণ মিলল ফের।
আরও পড়ুন: সমস্যা মিটবে ৫ বছরে, দাবি রাজনাথের
খতৌলীতে বিকেল ৫টা ৪০-এ লাইনচ্যুত হয় ট্রেনটি। কামরাগুলি একে অপরের উপরে উঠে যায়। একটি কামরা ছিটকে গিয়ে পড়ে লাইনের পাশে থাকা বাড়ির উপরে। দুর্ঘটনার আধ ঘণ্টার মধ্যে অন্ধকার নেমে আসায় উদ্ধারের কাজে সমস্যা হয়। রাতে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের এডিজি আনন্দ কুমার জানান, আচমকা ব্রেক কষাতেই এই দুর্ঘটনা। সন্ধে পর্যন্ত ১০ জন যাত্রীর দেহ উদ্ধার হয়েছে। ধ্বংসস্তূপের নীচে আরও যাত্রী আটকে রয়েছেন বলে আশঙ্কা রেলকর্তাদের।
কেন্দ্রের নির্দেশে রাতেই জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ১৫০ জন জওয়ান ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন। যাচ্ছেন রেল প্রতিমন্ত্রী মনোজ সিন্হা। রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু টুইটারে জানান, তিনি পরিস্থিতির উপরে নজর রাখছেন। শোক প্রকাশ করেন সনিয়া ও রাহুল গাঁধী। প্রাক্তন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইট করেন, ‘‘প্রিয়জন হারানো সব পরিবারকে সমবেদনা জানাই। রেলে নিরাপত্তাই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হওয়া উচিত।’’
কেন এই দুর্ঘটনা? প্রাথমিক ভাবে উঠে আসছে ৩টি তত্ত্ব। এক, বৃষ্টিতে লাইনের তলা থেকে মাটি ও বোল্ডার সরে যাওয়ায় তার মেরামতি চলছিল গত ক’দিন ধরে। স্থানীয়দের বক্তব্য, মেরামতি চলছিল আজও। কিন্তু লাল পতাকা উপেক্ষা করে ট্রেন হুড়মুড়িয়ে ঢুকে পড়ে। রেল সূত্রে অবশ্য বলা হয়েছে, মেরামতির কোনও খবর চালক বা খতৌলী স্টেশনের কাছে ছিল না। দ্বিতীয় সম্ভাব্য কারণ, লাইন বদল ও মেরামতির গাফিলতি। ওই লাইন কত পুরনো, তাতে ফাটল ছিল কি না, দেখা হচ্ছে তা। তিন নম্বর কারণ হতে পারে সন্ত্রাস। কানপুরে রেল দুর্ঘটনার পিছনে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের হাত থাকার প্রমাণ মিলেছে। এ ক্ষেত্রেও জঙ্গি নাশকতার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। তদন্তে যাচ্ছে উত্তরপ্রদেশ এটিএস। একটি সূত্রের মতে, দুর্ঘটনার সময়ে গতি ছিল ঘণ্টায় ১০৫ কিলোমিটার। ওই গতিতে ট্রেন ছোটানোর অনুমতি চালকের ছিল কি না, তা দেখা হচ্ছে।
দুর্ঘটনাস্থলের ভিডিও:
ভিডিও এএনআই টুইটের সৌজন্যে